সূরা আল ফুরকান তাফসীর ও শানে নুযুল | সূরা ফুরকান আয়াত ৬৩ | সূরা ফুরকান ৬১-৭১ দারস

Sadia
1

 

আল ফুরকান, সূরা আল ফুরকান অর্থ কি, সূরা আল ফুরকান শানে নযুল, সূরা আল ফুরকান তাফসীর, সূরা ফুরকান আয়াত ৬৩, সূরা ফুরকান ৬১-৭১ দারস

    আল ফুরকান 

    প্রিয় পাঠকবৃন্দ টাইম অফ বিডি এর পক্ষ থেকে আপনাদের সবাইকে জানাই শুভেচ্ছা ও সালাম আসসালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতু।কেমন আছেন সবাই? আশা করি সবাই আলহামদুলিল্লাহ ভাল আছেন আমিও আলহামদুলিল্লাহ ভালো আছি । আপনারা অনেকেই হয়তো বিভিন্ন সোশ্যাল মিডিয়ায় সূরা আল ফুরকান বিভিন্ন আয়াতগুলো খুঁজছেন। আর তাই আজকে আমরা আমাদের পোষ্ট টি তৈরি করেছে আমাদের এই পোস্টটা আজকের সূরা আল ফুরকান সম্পর্কে যা যা থাকছেঃ সেগুলো হলোআল ফুরকান, সূরা আল ফুরকান অর্থ কি, সূরা আল ফুরকান শানে নযুল, সূরা আল ফুরকান তাফসীর, সূরা ফুরকান আয়াত ৬৩, সূরা ফুরকান ৬১-৭১ দারস ।আশা করছি আপনারা পুরো পোস্টটি ধৈর্য্য সহকারে পড়বেন এবং সঠিক তথ্যটি পাবেন।

    সূরা আল ফুরকান অর্থ কি

    আল ফুরকান (আরবি: سورة الفرقان‎‎; সত্য মিথ্যার পার্থক্য নির্ধারণকারী গ্রম্থ) মুসলমানদের ধর্মীয় গ্রন্থ কুরআনের ২৫ তম সূরা। এই surati মক্কায় অবতীর্ণ হয়েছে এবং এর আয়াত সংখ্যা ৭৭টি।

     সূরা আল ফুরকান শানে নযুল 

    সূরা আল-ফুরকান

    আল ফুরকান , (আরবি: سورة الفرقان‎‎), (সত্য মিথ্যার পার্থক্য নির্ধারণকারী গ্রম্থ) মুসলমানদের ধর্মীয় গ্রন্থ কুরআনের ২৫ তম সূরা। এই সূরাটি মক্কায় অবতীর্ণ হয়েছে এবং এর আয়াত সংখ্যা ৭৭টি।

    নামকরণ

    Prothom আয়াত (আরবী) থেকে সূরার নাম গৃহীত হয়েছে। কুরআনের অধিকাংশ সূরার মতো এ নামটিও বিষয়বস্তু ভিত্তিক শিরোনাম নয় বরং আলামত হিসেবে সন্নিবেশিত হয়েছে।

    নাযিলের সময়-কাল

    বর্ণনাভংগী ও বিষয়বস্তু পর্যালোচনা করলে পরিষ্কার মনে হয়, এ সূরাটিও সূরা মু’মিনূন ইত্যাটি সূরাগুলোর সমসময়ে নাযিল হয় । অর্থাৎ সময়টি হচ্ছে, রসূলের (সা) মক্কায় অবস্থানকালের মাঝামাঝি সময় । ইবনে জারীর ও ইমাম রাযী যাহহাক ইবনে মুযাহিম ও মুকাতিল ইবনে সুলাইমানের একটি রেওয়ায়াত উদ্বৃত করেছেন । তাতে বলা হয়েছে, এ সূরাটি সূরা নিসার ৮ বছর আগে নাযিল হয় । এ হিসেবেও এর নাযিল হবার সময়টি হয় মক্কী যুগের মাঝামাঝি সময় । (ইবনে জারীর, ১৯ খণ্ড, ২৮-৩০ পৃষ্ঠা ও তাফসীরে করীর, ৬ খণ্ড, ৩৫৮ পৃষ্ঠা)

    বিষয়বস্তু ও কেন্দ্রীয় আলোচ্য বিষয়

    কুরআন, মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের নবুওয়াত এবং তাঁর পেশকৃত শিক্ষার বিরুদ্ধে মক্কার কাফেরদের পক্ষে থেকে যেসব সন্দেহ ও আপত্তি উত্থাপন করা হতো সেগুলো সম্পর্কে এখানে আলোচনা করা হয়েছে । এর প্রত্যেকটি যথাযথ জবাব দেয়া হয়েছে এবং সাথে সাথে সত্যের দাওয়াত থেকে মুখু ফিরিয়ে নেবার খারাপ পরিণামও পরিষ্কারভাবে বর্ণনা করা হয়েছে । শেষে সূরা মু’মিনূনের মতো মু’মিনদের নৈতিক গুণাবলীর একটি নকশা তৈরি করে সেই মানদণ্ডে যাচাই করে খাঁটি ও ভেজাল নির্ণয় করার জন্য সাধারণ মানুষের সামনে রেখে দেয়া হয়েছে ।

    একদিকে রয়েছে এমন চরিত্র সম্পন্ন লোকেরা যারা এ পর্যন্ত মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আল্লাইহি ওয়া সাল্লামের শিক্ষার মাধ্যমে তৈরি হয়েছে এবং আগামীতে যাদেরকে তৈরি করার প্রচেষ্টা চলছে । অন্যদিকে রয়েছে এমন নৈতিক আদর্শ যা সাধারণ আরববাসীদের মধ্যে পাওয়া যায় এবং যাকে অক্ষুন্ন রাখার জন্য জাহেলিয়াতের পতাকাবাহীরা সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে । এখন আরববাসীরা এ দু’টি আদর্শের মধ্যে কোনটি পছন্দ করবে তার ফায়সালা তাদের নিজেদেরকেই করতে হবে । এটি ছিল একটি নিরব প্রশ্ন । আরবের প্রত্যেকটি অধিবাসীর সামনে এ প্রশ্ন রেখে দেয়া হয় । মাত্র কয়েক বছরের মধ্যে একটি ক্ষুদ্রতম সংখ্যালঘু গোষ্ঠী ছাড়া বাকি সমগ্র জাতি এর যে জবাব দেয় ইতিহাসের পাতায় তা অম্লান হয়ে আছে ।

    সূরা আল ফুরকান তাফসীর

    সূরা ২৫. আল-ফুরকান আয়াত নং ২০

    (ইবনে কাসীর)

    অর্থঃ

    "Tomer পূর্বে আমি যে সব রসূল প্রেরণ করেছি তারা সকলেই তো আহার করত[1] ও হাটে-বাজারে চলাফেরা করত।[2] আমি তোমাদের মধ্যে এককে অপরের জন্য পরীক্ষাস্বরূপ করেছি।[3] তোমরা ধৈর্য ধারণ করবে কি? তোমার প্রতিপালক সমস্ত কিছুর সম্যক দ্রষ্টা। [4]"=

    তাফসির ঃ

    [1] অর্থাৎ, তাঁরা মানুষ ছিলেন এবং খাদ্যের মুখাপেক্ষী ছিলেন।

    [2] অর্থাৎ, হালাল রুযী সংগ্রহ করার মানসে উপার্জন ও বাণিজ্য করতেন। যার অর্থ হল এসব বিষয় নবুঅতী মর্যাদার পরিপন্থী নয়, যেমন কিছু লোক মনে করে।

    [3] অর্থাৎ, আমি ঐসব নবীদের এবং তাদের মাধ্যমে তাদের অনুসারীদেরকেও পরীক্ষা করেছি, যাতে আসল ও নকলের মধ্যে পার্থক্য স্পষ্ট হয়ে যায়। অতএব যারা পরীক্ষায় ধৈর্য ও সহনশীলতাকে আঁকড়ে ধরে থেকেছে, তারা হয়েছে সফলকাম এবং অন্যরা হয়েছে অসফল। সেই জন্য পরে বলা হয়েছে, তোমরা ধৈর্যধারণ করবে কি?

    [4] অর্থাৎ, তিনি জানেন, অহী ও রিসালাতের উপযুক্ত ও অনুপযুক্ত কে? {اللهُ أَعْلَمُ حَيْثُ يَجْعَلُ رِسَالَتَهُ} (124) سورة الأنعام আর হাদীসে এসেছে, রসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন, ‘‘আল্লাহ আমাকে এই এখতিয়ার দিয়েছিলেন যে, আমি বাদশাহ নবী হব অথবা দাস রসূল? আমি দাস রসূল হওয়া পছন্দ করেছি।

    তাফসীরে জাকারিয়া

    ="আর আপনার আগে আমরা যে সকল রাসূল পাঠিয়েছি তারা সকলেই তো খাওয়া-দাওয়া করত ও হাটে-বাজারে চলাফেরা করত।(১) এবং (হে মানুষ!) আমরা তোমাদের এক-কে অন্যের জন্য পরীক্ষাস্বরূপ করেছি। তোমরা ধৈর্য ধারণ করবে কি? আর আপনার রব তো সর্বদ্ৰষ্টা।"=

    (১) কাফেরদের দ্বিতীয় কথা ছিল এই যে, তিনি নবী হলে সাধারণ মানুষের মতই পানাহার করতেন না এবং জীবিকা উপার্জনের জন্য হাটবাজারে চলাফেরা করতেন না। এই আপত্তির ভিত্তি, অনেক কাফেরের এই ধারণা যে, আল্লাহর রাসূল মানব হতে পারেন না- ফিরিশতাই রাসূল হওয়ার যোগ্য। কুরআনুল করীমের বিভিন্ন স্থানে এর উত্তর দেয়া হয়েছে। আলোচ্য আয়াতে এই উত্তর দেয়া হয়েছে যে, যেসব নবীকে তোমরা নবী ও রাসূল বলে স্বীকার কর, তারাও তো মানুষই ছিলেন; তারা মানুষের মত পানাহার করতেন এবং হাটে বাজারে চলাফেরা করতেন। [কুরতুবী]

     সূরা ফুরকান আয়াত ৬৩

     وَعِبَادُ الرَّحْمَنِ الَّذِينَ يَمْشُونَ عَلَى الْأَرْضِ هَوْنًا وَإِذَا خَاطَبَهُمُ الْجَاهِلُونَ قَالُوا سَلَامًا

     রহমান-এর বান্দা তারাই, যারা পৃথিবীতে নম্রভাবে চলাফেরা করে এবং তাদের সাথে যখন মুর্খরা কথা বলতে থাকে, তখন তারা বলে, salam। [ সুরা ফুরকান ২৫:৬৩ ] 

     সূরা ফুরকান ৬১-৭১ দারস 

    تَبَارَكَ الَّذِي جَعَلَ فِي السَّمَاء بُرُوجًا وَجَعَلَ فِيهَا سِرَاجًا وَقَمَرًا مُّنِيرًا


     কল্যাণময় তিনি, যিনি নভোমন্ডলে রাশিচক্র সৃষ্টি করেছেন এবং তাতে রেখেছেন সূর্য ও দীপ্তিময় চন্দ্র। [ সুরা ফুরকান ২৫:৬১ ] 


     وَهُوَ الَّذِي جَعَلَ اللَّيْلَ وَالنَّهَارَ خِلْفَةً لِّمَنْ أَرَادَ أَن يَذَّكَّرَ أَوْ أَرَادَ شُكُورًا


     যারা অনুসন্ধানপ্রিয় অথবা যারা কৃতজ্ঞতাপ্রিয় তাদের জন্যে তিনি রাত্রি ও দিবস সৃষ্টি করেছেন পরিবর্তনশীলরূপে। [ সুরা ফুরকান ২৫:৬২ ] 


     وَعِبَادُ الرَّحْمَنِ الَّذِينَ يَمْشُونَ عَلَى الْأَرْضِ هَوْنًا وَإِذَا خَاطَبَهُمُ الْجَاهِلُونَ قَالُوا سَلَامًا


     রহমান-এর বান্দা তারাই, যারা পৃথিবীতে নম্রভাবে চলাফেরা করে এবং তাদের সাথে যখন মুর্খরা কথা বলতে থাকে, তখন তারা বলে, সালাম। [ সুরা ফুরকান ২৫:৬৩ ] 


     وَالَّذِينَ يَبِيتُونَ لِرَبِّهِمْ سُجَّدًا وَقِيَامًا


     এবং যারা রাত্রি যাপন করে পালনকর্তার উদ্দেশ্যে সেজদাবনত হয়ে ও দন্ডায়মান হয়ে; [ সুরা ফুরকান ২৫:৬৪ ] 


     وَالَّذِينَ يَقُولُونَ رَبَّنَا اصْرِفْ عَنَّا عَذَابَ جَهَنَّمَ إِنَّ عَذَابَهَا كَانَ غَرَامًا


     এবং যারা বলে, হে আমার পালনকর্তা, আমাদের কাছথেকে জাহান্নামের শাস্তি হটিয়ে দাও। নিশ্চয় এর শাস্তি নিশ্চিত বিনাশ; [ সুরা ফুরকান ২৫:৬৫ ] 


     إِنَّهَا سَاءتْ مُسْتَقَرًّا وَمُقَامًا


     বসবাস ও অবস্থানস্থল হিসেবে তা কত নিকৃষ্ট জায়গা। [ সুরা ফুরকান ২৫:৬৬ ] 


     وَالَّذِينَ إِذَا أَنفَقُوا لَمْ يُسْرِفُوا وَلَمْ يَقْتُرُوا وَكَانَ بَيْنَ ذَلِكَ قَوَامًا


     এবং তারা যখন ব্যয় করে, তখন অযথা ব্যয় করে না কৃপণতাও করে না এবং তাদের পন্থা হয় এতদুভয়ের মধ্যবর্তী। [ সুরা ফুরকান ২৫:৬৭ ] 


     وَالَّذِينَ لَا يَدْعُونَ مَعَ اللَّهِ إِلَهًا آخَرَ وَلَا يَقْتُلُونَ النَّفْسَ الَّتِي حَرَّمَ اللَّهُ إِلَّا بِالْحَقِّ وَلَا يَزْنُونَ وَمَن يَفْعَلْ ذَلِكَ يَلْقَ أَثَامًا


     এবং যারা আল্লাহর সাথে অন্য উপাস্যের এবাদত করে না, আল্লাহ যার হত্যা অবৈধ করেছেন, সঙ্গত কারণ ব্যতীত তাকে হত্যা করে না এবং ব্যভিচার করে না। যারা একাজ করে, তারা শাস্তির সম্মুখীন হবে। [ সুরা ফুরকান ২৫:৬৮ ] 


     يُضَاعَفْ لَهُ الْعَذَابُ يَوْمَ الْقِيَامَةِ وَيَخْلُدْ فِيهِ مُهَانًا


     কেয়ামতের দিন তাদের শাস্তি দ্বিগুন হবে এবং তথায় লাঞ্ছিত অবস্থায় চিরকাল বসবাস করবে। [ সুরা ফুরকান ২৫:৬৯ ] 


     إِلَّا مَن تَابَ وَآمَنَ وَعَمِلَ عَمَلًا صَالِحًا فَأُوْلَئِكَ يُبَدِّلُ اللَّهُ سَيِّئَاتِهِمْ حَسَنَاتٍ وَكَانَ اللَّهُ غَفُورًا رَّحِيمًا


     কিন্তু যারা তওবা করে বিশ্বাস স্থাপন করে এবং সৎকর্ম করে, আল্লাহ তাদের গোনাহকে পুন্য দ্বারা পরিবর্তত করে এবং দেবেন। আল্লাহ ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু। [ সুরা ফুরকান ২৫:৭০ ] 


     وَمَن تَابَ وَعَمِلَ صَالِحًا فَإِنَّهُ يَتُوبُ إِلَى اللَّهِ مَتَابًا


     যে তওবা kore ও সৎকর্ম করে, সে ফিরে আসার স্থান আল্লাহর দিকে ফিরে আসে। [ সুরা ফুরকান ২৫:৭১ ] 

    Tag:আল ফুরকান, সূরা আল ফুরকান অর্থ কি, সূরা আল ফুরকান শানে নযুল, সূরা আল ফুরকান তাফসীর, সূরা ফুরকান আয়াত ৬৩, সূরা ফুরকান ৬১-৭১ দারস 



    Post a Comment

    1Comments

    প্রতিদিন ১০০-২০০ টাকা ইনকাম করতে চাইলে এখানে কমেন্ট করে জানান। আমরা আপনায় কাজে নিয়ে নেবো। ধন্যবাদ

    1. আসসালামু আ'লাইকুম।
      জ্বী, বলুন কিভাবে প্রতিদিন ১০০/২০০ টাকা আয় করা যাবে?

      ReplyDelete
    Post a Comment