বাক্য আকাঙ্খা আসত্তি যোগ্যতা উদ্দেশ্য বিধেয় সরল যৌগিক জটিল বাক্য কাকে বলে ও বাক্যের প্রকারভেদ। What is sentence, intention, predicament & varices of sentence
আসলামুআলাইকুুুম। প্রিয় শিক্ষার্থী বন্ধুরা আশাকরি আল্লাহর অশেষ রহমতে সকলেই সুস্থ আছো। তোমরা বাংলা ব্যাকরণ করার সময়ে অনেকেই বাক্য কাকে বলে, আসত্তি কাকে বলে, যৌগ্যতা কাকে বলে, আকাঙ্খা কাকে বলে, উদ্দেশ্য কাকে বলে, বিধেয় কাকে বলে, উদ্দেশ্য ও বিধেয় কাকে বলে, সরল বাক্য কাকে বলে, যৌগিক বাক্য কাকে বলে, জটিল বাক্য কাকে বলে সমস্যাগুলো খেয়াল করো। কিন্তু শুধুমাত্র পাঠ্যবই পড়ে তোমরা বাক্য কাকে বলে, আসত্তি কাকে বলে, যৌগ্যতা কাকে বলে, আকাঙ্খা কাকে বলে, উদ্দেশ্য কাকে বলে, বিধেয় কাকে বলে, উদ্দেশ্য ও বিধেয় কাকে বলে, সরল বাক্য কাকে বলে, যৌগিক বাক্য কাকে বলে, জটিল বাক্য কাকে বলে বিষয়গুলো বুঝতে পারোনা বা মনে রাখতে পারোনা বা কেন এইগুলা হবে তা ঠিক করতে পারোনা। তাই তোমাদের পাঠ্যক্রমকে সহজ করার জন্য আমরা বাক্য কাকে বলে, আসত্তি কাকে বলে, যৌগ্যতা কাকে বলে, আকাঙ্খা কাকে বলে, উদ্দেশ্য কাকে বলে, বিধেয় কাকে বলে, উদ্দেশ্য ও বিধেয় কাকে বলে, সরল বাক্য কাকে বলে, যৌগিক বাক্য কাকে বলে, জটিল বাক্য কাকে বলে কিছু সহজ যুক্তি ও উদাহরণের মধ্য দিয়ে তোমাদের মাঝে তুলে ধরলাম। আশাকরি এখন বাক্য কাকে বলে, আসত্তি কাকে বলে, যৌগ্যতা কাকে বলে, আকাঙ্খা কাকে বলে, উদ্দেশ্য কাকে বলে, বিধেয় কাকে বলে, উদ্দেশ্য ও বিধেয় কাকে বলে, সরল বাক্য কাকে বলে, যৌগিক বাক্য কাকে বলে, জটিল বাক্য কাকে বলে বিষয়গুলো সহজে বুঝতে পারবে
বাক্য কাকে বলে | আসত্তি কাকে বলে | যৌগ্যতা কাকে বলে | আকাঙ্খা কাকে বলে
বাক্যঃ আমরা কথা বলার জন্য বা একে অপরের সঙ্গে মনের ভাব বিনিময় করারর জন্য যে সমস্ত অর্থপূর্ণ শব্দ বা শব্দসমষ্টি ব্যবহার করে থাকি তাই বাক্য । কয়েকটি পদ পাশাপাশি বসে যখন মনের সম্পূর্ণভাব প্রকাশ করে তখন তাকে বাক্য বলে। প্রত্যেকটি পূর্নাঙ্গ বাক্যে এক বা একাধিক অসমাপিকা ক্রিয়া থাকতে পারে কিন্তু একটি সমাপিকা ক্রিয়াপদ থাকতেই হবে। সমাপিকা ক্রিয়াই বাক্য সম্পূর্ণ করে । যেমনঃ 'ছেলেরা স্কুল থেকে বাড়ি ফিরে হাত মুখ ধুয়ে খাবার খেয়ে পড়তে বসে।' এই বাক্যে 'ফিরে', 'ধুয়ে', 'খেয়ে', 'পড়তে', চারটি অসমাপিকা ক্রিয়া রয়েছে কিন্তু সমাপিকা ক্রিয়া একটি তা হল 'বসে'।
একটি সার্থক বাক্যের থাকে তিনটি গুণ থাকে।
(১) আকাঙ্খা
(২) আসত্তি বা নৈকট্য
(৩) যোগ্যতা
(১) আকাঙ্খাঃ আকাঙ্খা কথার অর্থ হল চাহিদা । বাক্যের কিছুটা অংশ প্রকাশ হওয়ার পর যদি আরো কিছু শোনার জন্য কোনো আগ্রহ তৈরি হয়, তখন তাকে বলা হয় আকাঙ্খা । যেমন— 'আমি আগামীকাল বাড়ি' বললে বাক্যটা স্পষ্ট হয়না। কারণ এরপরে কি আছে তা শোনার আগ্রহ থেকে যায়। এখানে বাক্যের যে বৈশিষ্ট্যটি নষ্ট হয়েছে তা হলো আকাঙ্খা। আমি আগামীকাল বাড়ি যাব বলতে বাক্যটা সম্পূর্ণ হবে বা অর্থ স্পষ্ট হবে।
(২) আসত্তি বা নৈকট্যঃ বাক্যের বিভিন্ন অংশকে উপযুক্ত স্থানে বসানোই হল আসত্তি।
যেমনঃ তৈরি নিজেরাই কালি ও আমরা করতাম।
বাক্যটি পড়ে কোন অর্থই বোধগম্য হল না। কারণ বাক্যের শব্দগুলো এলোমেলোভাবে সাজানো আছে। এলোমেলো ভাবে পদগুলি সাজিয়ে লিখলেই বাক্য হয় না। এখানে বাক্যের যে বৈশিষ্ট্যটি নষ্ট হয়েছে তা হলো আসত্তি বা নৈকট্য। পদগুলি সঠিক সঠিক স্থানে বসালেই অর্থ পরিষ্কার বোধগম্য হবে। সঠিক বাকৌটি হবে, আমরা নিজেরাই কালিও তৈরি করতাম।
(৩) যোগ্যতাঃ বাক্যে ব্যবহৃত পদ সমষ্টির অর্থগত সামঞ্জস্যকেই যোগ্যতা বলে। যেমনঃ সূর্য পূর্ব দিকে অস্ত যায়। সে বরশি দিয়ে নারকেল পাড়ে।
এখানে একাধিক পদ পাশাপাশি বসলেই কিন্তু বাক্য হয় না। গঠনগত দিক থেকে সঠিক হলেও বাস্তবে এর অর্থ ঠিক হয় না। সূর্য কখনো পূর্বদিকে অস্থ যায়না এবং বরশি দিয়ে নারকেল পাড়া যায়না। এক্ষেত্রে বাক্যগুলোর যে বৈশিষ্ট্যটি নষ্ট হয়েছে সেটিই হলো যৌগ্যতা। সঠিক বাক্যগুলো হলোঃ সূর্য পশ্চিমদদিকে অস্ত যায় এবং সে বরশি দিয়ে মাছ ধরে।
উদ্দেশ্য কাকে বলে | বিধেয় কাকে বলে | উদ্দেশ্য ও বিধেয় কাকে বলে
উদ্দেশ্য ও বিধেয়ঃ প্রতিটি বাক্যের দুটি অংশ থাকে।
(১)উদ্দেশ্য
(২) বিধেয়।
(১) উদ্দেশ্যঃ বাক্যে যার সম্পর্কে কিছু বলা হয় সেটা উদ্দেশ্য। উদ্দেশ্য হলো বাক্যের কর্তা। (২) বিধেয়ঃ উদ্দেশ্য সম্পর্কে যা বলা হয় সেটাই বিধেয়। বিধেয় বাক্যের কর্ম সপ্মাদন করে।
যেমনঃ রমা ভালো গান গায়। এখানে 'রমা' হল উদ্দেশ্য এবং 'ভালো গান গায়' হল বিধেয়।
উদ্দেশ্য ও বিধেয়ের সম্প্রসারকঃ যে শব্দ বা শব্দসমষ্টিগুলো উদ্দেশ্য ও বিধেয়কে সম্প্রসারিত করে যে তাকে সম্প্রসারক বলে ।
উদ্দেশ্যের সম্প্রসারকঃ 'বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ১৯১৩ খ্রিস্টাব্দে নোবেল পুরস্কার পেয়েছিলেন গীতাঞ্জলি কাব্যের জন্য।' বাক্যটিতে মূল উদ্দেশ্য হল 'রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর' আর উদ্দেশ্যের সম্প্রসারক হল 'বিশ্বকবি' । মূল বিধেয় হল 'পেয়েছিলেন' । আর এই বিধেয়ের সম্প্রসারক হল, '১৯১৩ সালে গীতাঞ্জলির জন্য নোবেল পুরস্কার।'
সরল বাক্য কাকে বলে| যৌগিক বাক্য কাকে বলে | জটিল বাক্য কাকে বলে
বাক্যের শ্রেণীবিভাগঃ একটি বাক্যকে দুইভাবে শ্রেণিবিন্যাস করা যায়।
(১) গঠনগত শ্রেণীবিভাগ
(২) অর্থগত শ্রেণীবিভাগ ।
(১) গঠনগত শ্রেণীবিভাগঃ গঠনগতভাবে বাক্যকেতি শ্রেণীতে ভাগ করা হয়।
(ক) সরল বাক্য,
(খ) যৌগিক বাক্য
(গ) জটিল বাক্য বা মিশ্র বাক্য
(ক) সরল বাক্যঃ যে বাক্যে একটি সমাপিকা ক্রিয়া থাকে তাকে সরল বাক্য বলে। যেমনঃ সর্বহারা কাব্যের কবি হলেন কাজী নজরুল ইসলাম। ছেলেরা মাঠে খেলছে। সন্ধ্যায় তারা বাড়ি ফিরে হাতমুখ ধুয়ে পড়তে বসবে। এখানে 'হলেন' 'খেলছে' 'বসবে' হল প্রত্যেকটি বাক্যের এক একটি সমাপিকা ক্রিয়া।
(খ) যৌগিক বাক্যঃ যে বাক্যে দুটি সরল বাক্য একটি সংযোজক অব্যয় দ্বারা যুক্ত হয়, তাকে যৌগিক বাক্য বলে।
যৌগিক বাক্যে দুইটি সরল বাক্য অব্যয় পদ (ও, এবং, কিন্তু, সুতরাং, অথবা, নতুবা প্রভৃতি) দ্বারা যুক্ত থাকে। যেমনঃ তারা গরীব কিন্তু চোর নয় । রমা ও শ্যামা আগামীকাল আসবে । তোমার দোষ স্বীকার করো অথবা শাস্তি পাও। এখানে 'কিন্তু' 'ও' 'অথবা' অব্যয়গুলি দুটি করে সরল বাক্যকে যুক্ত করেছে ।
(গ) জটিল বা মিশ্রবাক্যঃ যে বাক্যে একাধিক খন্ড বাক্য থাকলেও তার মধ্যে একটি প্রধান খন্ড বাক্য থাকে এবং এক বা একাধিক অপ্রধান খন্ড বাক্য থাকে তাকে জটিল বাক্য বলে।
যেমনঃ (i) যদি পরিশ্রম না কর তাহলে পরীক্ষায় ফেল করবে। (ii) যখন বৃষ্টি হচ্ছিল তখন আমি বই পড়ছিলাম। (iii) তপন যে গল্পটি লিখেছিল তা পত্রিকায় ছাপা হয়েছে।
(২) অর্থগত শ্রেণীবিভাগঃ অর্থগতভাবে বাক্যকে সাতটি শ্রেণীতে ভাগ করা হয়েছে।
(ক) নির্দেশক বাক্য
(খ) প্রশ্ন বাচক বাক্য
(গ) অনুজ্ঞাসূচক বাক্য
(ঘ) প্রার্থনা সূচক বাক্য
(ঙ) আবেগসূচক বাক্য
(চ) সন্দেহ বাচক বাক্য
(ছ) শর্তসাপেক্ষ বাক্য
(ক) নির্দেশক বাক্যঃ যে বাক্যে কোন বক্তব্য, তথ্য বা বিবৃতি প্রকাশ করা হয় তাকে নির্দেশক বাক্য বলে।
যেমনঃ এবছর বেশি বৃষ্টি হয়নি। আমাদের একটি বড় বাগান আছে।
নির্দেশক বাক্য আবার দুই প্রকার। (i) ইতিবাচক বাক্য বা হ্যাঁ বাচক (ii) নেতিবাচক বা না বাচক
(i) ইতিবাচক বাক্য বা হ্যাঁ বাচকঃ যে বাক্যের অর্থকে স্বীকৃতি দেয়া হয় তাকে ইতিবাচক বাক্য বা হ্যাঁ বাচক বাক্য বলে।
যেমনঃ ছাত্রীরা রোজ বাংলা ক্লাস করে। আমি গান শুনতে ভালবাসি।
(ii) নেতিবাচক বা না বাচক বাক্যঃ যে বাক্যের অর্থ দ্বারা কোনো কাজকে অস্বীকৃতি দেওয়া হয় তাকে নেতিবাচক বা না বাচক বাক্য বলে।
যেমনঃ সে কাল স্কুলে যায়নি। আমি ভাত খাবনা।
(খ) প্রশ্নসূচক বাক্যঃ যে বাক্যে কোনোকিছু জিজ্ঞাসা বা প্রশ্ন করা হয় তাকে প্রশ্ন বাচক বাক্য বলে । যেমনঃ তোমার নাম কী? তুমি কখন বাড়ি যাবে?
(গ) অনুজ্ঞাসূচক বাক্যঃ যে বাক্যে আদেশ, উপদেশ, অনুরোধ ইত্যাদি প্রকাশ করা হয় সেই বাক্যকে অনুজ্ঞাবাচক বাক্য বলে।
যেমনঃ এখানে এস। পড়াশুনায় মনোযোগ দাও। ১০ মিনিটের মধ্যে লিখে দাও।
(ঘ) প্রার্থনা সূচক বাক্যঃ যে বাক্যে মনের ইচ্ছা, আকাঙ্ক্ষা, প্রার্থনা প্রভৃতি প্রকাশ পায় তাকে প্রার্থনা সূচক বাক্য বলে।
যেমনঃ ঈশ্বর তোমার মঙ্গল করুন। তুমি জীবনে সুখী হও।
(ঙ) আবেগসূচক বাক্যঃ যে বাক্যে আবেগ, আনন্দ, উচ্ছ্বাস, রাগ, দুঃখ, ঘৃণা, ভয় ইত্যাদি প্রকাশ পায় সেই বাক্যকে আবেগসূচক বাক্য বলে।
যেমনঃ হায় হায়! আমার কি সর্বনাশ হয়ে গেল। বাঃ! কি সুন্দর পাখি।
(চ) সন্দেহ বাচক বাক্যঃ যে বাক্যে বক্তার মনে কোনোও সন্দেহ, সংশয় বা অনুমান প্রকাশ পায় তাকে সন্দেহ বাচক বাক্য বলে।
যেমনঃ তোরা বুঝি এ বাড়ি ছেড়ে যাচ্ছিস? আমি হয়তো কাল নাও যেতে পারি।
(ছ) শর্তসাপেক্ষ বাক্যঃ যে বাক্যে বর্ণিত একটি ঘটনা বা অবস্থার উপর অন্য কোনো একটি ঘটনা বা অবস্থা নির্ভর করে তাকেই শর্তসাপেক্ষ বাক্য বলে।
যেমনঃ যদি বৃষ্টি হয় তাহলে আমরা যাব না। যদি মন দিয়ে পড় তাহলে পরীক্ষায় পাস করবে।
ট্যাগঃ বাক্য কাকে বলে, আসত্তি কাকে বলে, যৌগ্যতা কাকে বলে, আকাঙ্খা কাকে বলে, উদ্দেশ্য কাকে বলে, বিধেয় কাকে বলে, উদ্দেশ্য ও বিধেয় কাকে বলে, সরল বাক্য কাকে বলে, যৌগিক বাক্য কাকে বলে, জটিল বাক্য কাকে বলে।