নবীজির মেরাজ গমন | ইসরা ও মেরাজ

 


নবীজির মেরাজের ঘটনা, শবে মেরাজের নামাজ কয় রাকাত, শবে মেরাজের ঘটনা ,শবে মেরাজের কাহিনী , মেরাজের নামাজ কত রাকাত ,নবীজির মেরাজ গমন , ইসরা ও মেরাজ,

আসসালামু আলাইকুম আপনারা সবাই কেমন আছেন আশা করি আপনারা সবাই ভাল আছেন আমিও আল্লাহর রহমতে ভালো আছি আজকে আপনাদের মাঝে নিয়ে আসলাম নবীজির মেরাজের ঘটনা, শবে মেরাজের নামাজ কয় রাকাত, শবে মেরাজের ঘটনা ,শবে মেরাজের কাহিনী , মেরাজের নামাজ কত রাকাত ,নবীজির মেরাজ গমন , ইসরা ও মেরাজ,

নবীজির মেরাজের ঘটনা

নবীজির মেরাজের ঘটনা সম্পর্কে আমরা কম বেশি জানি। মহান আল্লাহ তা'আলার পক্ষ হতে হযরত জিব্রাইল আলাই সালাম এর মাধ্যমে নবীজিকে আরশে নিয়ে যাওয়া হয়।মহানবী হযরত মুহাম্মদ সাল্লাহু সাল্লাম কে মসজিদুল হারাম হতে মসজিদুল আকসা হতে প্রথম আকাশে তারপর দ্বিতীয় আকাশে তারপর তৃতীয় তারপর চতুর্থ তারপর পঞ্চম আকাশে তারপর ষষ্ঠ তারপর সপ্তম আকাশে নিয়ে যাওয়া হয় এবং মহানবী হযরত মুহাম্মদ সাল্লাহু সাল্লাম মহান আল্লাহর দিদার লাভ করেন আসমানে হযরত মুসা আলাই সালাম এর সাথে পূর্ববর্তী নবী-রাসূলদের দেখা হয় যেমন হযরত ঈসা আলাই সাল্লাম হযরত ইব্রাহিম আলাই সাল্লাম হযরত ইউসুফ আলাই সাল্লাম হযরত হারুন আলাই সাল্লাম প্রমুখের সাথে দেখা হয় এবং তারা মহানবী হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু সাল্লাম কে সালাম জানান নবীজি মেরাজে গিয়ে বিশ্বের সকল মুসলমানদের জন্য পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আনেন আমাদের উপর ফরয ইবাদত এই নামাজের মাধ্যমে আমরা মহান আল্লাহতালার দরবারে আমাদের সকল মনের আশা প্রকাশ করি। প্রতিদিন পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করলে 50 ওয়াক্ত নামাজের সওয়াব হবে।


 শবে মেরাজের নামাজ কয় রাকাত

শবে মেরাজ এর মাধ্যমেই আমরা সালাত উপহার পেয়েছি সালাত ইসলামের পাঁচটি স্তম্ভের মধ্যে একটি এটি এমন একটি ইবাদত যার মাধ্যমে আমরা মহান আল্লাহর সবচেয়ে কাছে যেতে পারি এবং সালাতের মাধ্যমে আমরা মহান আল্লাহতালার কাছে দোয়া করতে পারি আমাদের পুনা থেকে পবিত্র থাকার জন্য এবং রহমত চাইতে পারি। শবে মেরাজের নামাজ নফল না পড়লে গুনাহ নেই কিন্তু পড়লে  সওয়াব আছে। এশার ফরজ নামাজ আদায়ের পর শবে মেরাজের 12 রাকাত নফল নামাজ আছে কেউ ইচ্ছা করলে থেকে বেশি আদায় করতে পারে এবং এই নামাজ দুই দুই রাকাত করে পড়তে হয় এবং চার রাকাতের পর মোনাজাত করতে হয়।


 শবে মেরাজের ঘটনা 

মহানবী হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু সাল্লাম শবে মেরাজ এর মাধ্যমে মহান আল্লাহ তাআলার দিদার লাভ করেন এবং মহানবী হযরত মুহাম্মদ সাল্লাহু সাল্লাম হযরত জিবরাঈল আমার সাথে আরশে জান তিনি মসজিদুল হারাম মসজিদুল আকসা প্রথম দ্বিতীয় তৃতীয় চতুর্থ পঞ্চম ষষ্ঠ এবং সপ্তম আকাশে আরশে যান এবং মহানবী হযরত মুহাম্মদ সাল্লাহু সাল্লাম মেরাজে গিয়ে মানুষের জন্য 50 ওযক্ত নামাজের পরিবর্তে পাঁচ অক্ত নামাজ নিয়ে আসেন যা সকলের উপর ফরজ ।মনোজ বাবু সাল্লাল্লাহু আলাই সাল্লাম মেরাজে গিয়ে তিনি জান্নাত জাহান্নাম দেখে আসেন এটি মহানবী হযরত মুহাম্মদ সাল্লাহু সাল্লাম এর একটি মোজেজা যা অন্যান্য মোজেজা গুলোর মধ্যে অন্যতম।মহানবী হযরত মুহাম্মদ সাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম একদলকে দেখতে পেলেন যারা তাদের কঠোর শাস্তি হচ্ছে এবং তা হলো,যাদের পেট এত বড় ছিলাে যে তারা তাদের পেটের ভারে উঠে দাঁড়াতে পারছিলাে না। আর তাদের উপর দিয়ে অজস্র পশু তাদের পিষে দিয়ে যাচ্ছিলাে। এরা হলাে তারা যারা - সুদ থেকে আয় করতাে।

রাসূল সাঃ সেখানে দাজ্জালকেও দেখেছিলেন। তার একটি চোখ নষ্ট ছিলাে।সবশেষে রাসূল (সাঃ) পৃথিবীতে ফিরে এলেন। আল-বােরাকে করে তিনি মসজিদুল আকসাতে তার বেঁধে রাখা বাহন মক্কা পাড়ি দিলেন।


শবে মেরাজের কাহিনী 


মেরাজের সময় রাসূল সাঃ ও তার বান্দার উপর নামাজ  ফরজ করার পর তাকে জান্নাত ও জাহান্নাম দেখানাে হয়। জান্নাতের সংখ্যা ৮ টি ও জাহান্নাম ৭ টি। জান্নাতে তিনি মুক্তোর তৈরি তাবু দেখতে পেলেন। আর মাটি ছিলাে কস্তুরির। আর জাহান্নামে বিভিন্ন ধলের মানুষ নানাভাবে শাস্তি পাচ্ছে।


*তিনি একদল মানুষকে দেখলেন যাদের নাক উঠের মতাে হয়ে গেছে। তাদের গরম কয়লা খাওয়ানাে হচ্ছিলাে। আর তা তাদের শরীরের ভিতর দিয়ে গিয়ে পায়ূপথ দিয়ে বের হচ্ছিলাে। যখন তিনি জানতে চাইলেন এরা কারা? জিব্রাইল আঃ বললেন - এরা এতিমদের সম্পদ অন্যায়ভাবে কেড়ে নিয়েছিলাে।


*আরেকদল মানুষ ছিলাে। যাদের নখ ছিলাে তামার তৈরি। তারা নিজেরাই নিজেদের শরীরে সেই ধারালাে নখ দিয়ে আঁচর দিচ্ছিলাে। আর তাদের পাপ ছিলাে তারা গীবত করতাে। (গীবত- পিছনে মানুষের সম্পর্কে এমন কথা বলা যা সে শুনলে কষ্ট পায় বা মারামারি লেগে যাওয়ার সম্ভবনা থাকে)


আরেকদল মানুষ ছিলাে যাদের সামনে পবিত্র সুস্বাদু মাংস রাখা ছিলাে। আরেক পাত্রে পঁচে যাওয়া দুর্গন্ধযুক্ত মাংস ছিলাে। আর তারা সে পঁচে যাওয়া মাংসটাই খাচ্ছিলাে। এরা হলাে তারা যারা নিজের স্বামী বা স্ত্রী থাকা শর্তেও অন্যের সাথে শারিরীক সম্পর্কে লীপ্ত ছিলাে।



 নবীজির মেরাজ গমন 

মালিক ইবনু সাসাআ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন,
নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, আমি কা'বা ঘরের নিকট নিদ্রা ও জাগরণ- এ দু'অবস্থার মাঝামাঝি অবস্থায় ছিলাম।
অতঃপর তিনি দু'ব্যক্তির মাঝে অপর এক ব্যক্তি অর্থাৎ নিজের অবস্থা উল্লেখ করে বললেন, আমার নিকট সােনার একটি পেয়ালা নিয়ে আসা হল- যা হিক্মত ও ঈমানে ভরা ছিল।
অতঃপরৎআমার বুক হতে পেটের নিচ পর্যন্ত চিরে ফেলা হল।অতঃপর
আমার পেট যমযমের পানি দিয়ে ধােয়া হল।
অতঃপর তা হিক্মত ও ঈমানে পূর্ণ করা হল এবং আমার নিকট সাদা রঙের চতুষ্পদ জন্তু আনা হল,
যা খচ্চর হতে ছােট আর গাধা হতে বড়।
অর্থাৎ বােরাক।অতঃপর তাতে চড়ে আমি জিব্রাঈল (আঃ) সহ চলতে চলতে পৃথিবীর নিকটতম আসমানে গিয়ে পৌঁছলাম।জিজ্ঞেস করা হল, এ কে?
উত্তরে বলা হল, জিব্রাঈল। জিজ্ঞেস করা হল, আপনার সঙ্গে আর কে?উত্তর দেয়া হল, মুহাম্মদ (সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়া সাল্লাম)। প্রশ্ন করা হল তাঁকে আনার জন্য কি পাঠানাে
হয়েছে?
তিনি বললেন, হ্যাঁ। বলা হল, তাঁকে মারহাবা, তাঁরতিনি বললেন, হ্যাঁ। বলা হল, তাঁকে মারহাবা, তাঁর আগমন কতই না উত্তম।
অতঃপর আমি আদম ('আঃ)-এর নিকট গেলাম।
তাঁকে সালাম করলাম।
তিনি বললেন, পুত্র ও নবী! তােমার প্রতি মারহাবা। অতঃপর আমরা দ্বিতীয় আসমানে গেলাম।
জিজ্ঞেস করা হল, এ কে?
তিনি বললেন, আমি জিব্রাঈল। জিজ্ঞেস করা হল, আপনার সঙ্গে আর কে?
তিনি বললেন,
মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)। প্রশ্ন করা হল, তাঁকে আনার জন্য কি পাঠানো হয়েছে? তিনি বললেন, হ্যাঁ।
বলা হল, তাঁকে মারহাবা আর তাঁর আগমন কতই না
উত্তম।
অতঃপর আমি ঈসা ও ইয়াহইয়া (আঃ)-এর নিকট
আসলাম।
তাঁরা উভয়ে বললেন, ভাই ও নবী! আপনার প্রতি
মারহাবা।
অতঃপর আমরা তৃতীয় আসমানে পৌঁছলাম। জিজ্ঞেস করা হল, এ কে? উত্তরে বলা হল, আমি
জিব্রাঈল।
প্রশ্ন করা হল, আপনার সঙ্গে কে? বলা হল, মুহাম্মদ (সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়া সাল্লাম)।
জিজ্ঞেস করা হল, তাঁকে আনার জন্য কি পাঠানাে তিনি বললেন, হ্যাঁ। আসমানে পৌঁছান এবং সেখান সেখানে তার সাথে দেখা হয় এমনি আল্লাহর প্রেরিত নবী রাসুলের সাথে যেমন হযরত ইউসুফ আলাই সাল্লাম হযরত হারুন আলাই সালাম আলাই সালাম এবং বিভিন্ন বিষয়ে তার দেখা হয় এবং তিনি মহান আল্লাহর দিদার লাভ করেন ।

ইসরা ও মেরাজ

মি'রাজ আরবী উরুজ শব্দ থেকে নির্গত, যার অর্থ ঊর্ধ্বে গমন করা। আর মি'রাজ শব্দের অর্থ ঊর্ধ্বে তারােহণের বাহন। মি'রাজের ঘটনা কখন সংঘটিত হয়েছিলাে এ ব্যাপারে বিভিন্ন বর্ণনা পাওয়া যায়। তবে নির্ভর যােগ্য সূত্রে শুধু এতটুকুই পাওয়া যায় যে, মি'রাজের ঘটনা হিজরতের এক বা দেড় বছর আগে সংঘটিত হয়েছিল। কিন্তু মাস, দিন তারিখের ব্যাপারে নির্ভরযােগ্য কোন দলীল নেই। যদিও সাধারণ জনগণের মাঝে প্রসিদ্ধ হলাে রজব মাসের ২৭ তম তারিখে সংঘটিত হয়েছিল। (আল মাওয়াহিবুল লাদুন্নিয়াহ ও শরহুল মাওয়াহিবিল লাদুন্নিয়াহ খঃ৮ পৃঃ ১৮/১৯)

পরিভাষায় মসজিদে হারাম থেকে মসজিদে আকসা পর্যন্ত রাত্রে ভ্রমণকে ইসরা ও তথা হতে সিদরাতুলমুনতাহা ও তদূর্ধ্ব পর্যন্ত ভ্রমণকে মি'রাজ বলা হয়।

ইসরা ও মি'রাজের ঘটনা সম্পর্কে কুরআনে কারীমে ইরশাদ হচ্ছে

شبح الذي أسرى بعبده ليلا من المسجد الحرام إلى المسجد الأقصا الذئ بركنا حوله لثرية من أيتنا إنه هق الشميغ

অর্থ: পবিত্র ঐ মহান সত্ত্বা যিনি রাত্রি বেলায় তাঁর বান্দাকে মসজিদে হারাম থেকে মসজিদে আকসা পর্যন্ত ভ্রমণ করিয়েছেন, যার আশপাশকে আমি বরকতময় করেছি। এটা এজন্য যাতে আমি তাকে আমার নিদর্শনাবলী দেখাতে পারি। (সূরা বনী ইসরাইল আয়াত নং-১) মেরাজের একটা অংশ হলাে ইসরা। ইসরা অর্থ রাত্রিকালীন ভ্রমণ। যেহেতু নবী করিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের মেরাজ রাত্রিকালে হয়েছিল, তাই এটিকে ইসরা বলা হয়। বিশেষত বায়তুল্লাহ শরিফ থেকে বায়তুল মুকাদ্দাস পর্যন্ত সফরকে ইসরা বলা হয়ে থাকে। কোরআনে আল্লাহ তাআলা বলেন: 'তিনি পবিত্র (আল্লাহ) যিনি তাঁর বান্দাকে রাত্রিভ্রমণ করিয়েছেন মসজিদুল হারাম থেকে মসজিদুল আকসা পর্যন্ত। যার আশপাশ আমি বরকতময় করেছি। যাতে আমি তাকে আমার নিদর্শনসমূহ দেখাতে পারি। নিশ্চয় তিনিই সর্বশ্রোতা, সর্বদ্রষ্টা।' (সুরা-১৭ [৫০] ইসরা-বনি ইসরাইল, রুকু: ১, আয়াত: ১, পারা: ১৫, পৃষ্ঠা ২৮৩/১)।



Tag:নবীজির মেরাজের ঘটনা, শবে মেরাজের নামাজ কয় রাকাত, শবে মেরাজের ঘটনা ,শবে মেরাজের কাহিনী , মেরাজের নামাজ কত রাকাত ,নবীজির মেরাজ গমন , ইসরা ও মেরাজ,