জীবনানন্দ দাশের শ্রেষ্ঠ কবিতা | জীবনানন্দ দাশের কবিতা
টাইম অফ বিডি এর পক্ষ থেকে আপনাদের সবাইকে জানাই আসসালামু আলাইকুম ওয়ারাহমাতুল্লাহি বারকাতুহু । প্রিয় পাঠকবৃন্দ কেমন আছেন আপনারা সবাই ? আশা করছি আপনারা সবাই ভাল আছেন। আলহামদুলিল্লাহ আপনাদের দোয়ায় আমিও ভাল আছি। আজকে আমরা আপনাদের মাঝে নিয়ে আসলাম জীবনানন্দ দাশের শ্রেষ্ট কবিতা, জীবনানন্দ দাশের কবিতা, । আশা করি আপনাদের অনেক ভালো লাগবে।
বাংলার মুখ আমি কবিতা | বাংলার মুখ আমি জীবনানন্দ দাশের কবিতা
বাংলার মুখ আমি দেখিয়াছি, তাই আমি পৃথিবীর রূপ
খুঁজিতে যাই না আর : অন্ধকারে জেগে উঠে ডুমুরের গাছে
চেয়ে দেখি ছাতার মতন বড়ো পাতাটির নিচে বসে আছে
ভোরের দোয়েলপাখি — চারিদিকে চেয়ে দেখি পল্লবের স্তূপ
জাম — বট — কাঠালের — হিজলের — অশখের করে আছে চুপ;
ফণীমনসার ঝোপে শটিবনে তাহাদের ছায়া পড়িয়াছে;
মধুকর ডিঙা থেকে না জানি সে কবে চাঁদ চম্পার কাছে
এমনই হিজল — বট — তমালের নীল ছায়া বাংলার অপরূপ রূপ
দেখেছিল; বেহুলার একদিন গাঙুড়ের জলে ভেলা নিয়ে —
কৃষ্ণা দ্বাদশীর জোৎস্না যখন মরিয়া গেছে নদীর চরায় —
সোনালি ধানের পাশে অসংখ্য অশ্বত্থ বট দেখেছিল, হায়,
শ্যামার নরম গান শুনেছিলো — একদিন অমরায় গিয়ে
ছিন্ন খঞ্জনার মতো যখন সে নেচেছিলো ইন্দ্রের সভায়
বাংলার নদী মাঠ ভাঁটফুল ঘুঙুরের মতো তার কেঁদেছিলো পায়।
ঘুমায়ে পড়িব আমি কবিতা | ঘুমায়ে পড়িব আমি জীবনানন্দ দাশের কবিতা
ঘুমায়ে পড়িব আমি একদিন তোমাদের নক্ষত্রের রাতে
শিয়রে বৈশাখ মেঘ-শাদা-শাদা যেন কড়ি-শঙ্খের পাহাড়
নদীর ওপার থেকে চেয়ে রবে- কোনো এক শঙ্খবালিকার
ধূসর রূপের কথা মনে হবে-এই আম জামের ছায়াতে
কবে যেন তারে আমি দেখিয়াছি-কবে যেন রাখিয়াছে হাতে
তার হাতে- কবে যেন তারপর শ্মশান চিতায় তার হাড়
ঝরে গেছে, কবে যেন; এ জনমে নয় যেন-এই পাড়াগাঁর
পথে তবু তিন শো বছর আগে হয়তো বা- আমি তার সাথে
কাটায়েছি; পাঁচশো বছর আগে হয়তো বা — সাতশো বছর
কেটে গেছে তারপর তোমাদের আম জাম কাঁঠালের দেশে;
ধান কাটা হয়ে গেলে মাঠে-মাঠে কতোবার কুড়ালাম খড়;
বাঁধিলাম ঘর এই শ্যামা আর খঞ্জনার দেশ ভালোবেসে,
ভাসানের গান গুনে কত বার ঘর আর খড় গেল ভেসে
মাথুরের পালা বেঁধে কত বার ফাঁকা হল খর আর ঘর।
তোমরা যেখানে সাধ কবিতা | তোমরা যেখানে সাধ জীবনানন্দ দাশের কবিতা
তোমরা যেখানে সাধ চলে যাও — আমি এই বাংলার পারে
র’য়ে যাব; দেখিব কাঁঠালপাতা ঝরিতেছে ভোরের বাতাসে;
দেখিব খয়েরি ডানা শালিখের সন্ধ্যায় হিম হয়ে আসে
ধবল রোমের নিচে তাহার হলুদ ঠ্যাং ঘাসে অন্ধকারে
নেচে চলে-একবার — দুইবার — তারপর হঠাৎ তাহারে
বনের হিজল গাছ ডাক দিয়ে নিয়ে হৃদয়ের পাশে;
দেখিব মেয়েলি হাত সকরুণ — শাদা শাঁখা ধূসর বাতাসে
শঙ্খের মতো কাঁদে: সন্ধ্যায় দাঁড়ালে সে পুকুরের ধারে,
খইরঙা হাঁসটিরে নিয়ে যাবে যেন কোন্ কাহিনীর দেশে –
‘পরণ-কথা’র গন্ধ লেগে আছে যেন তার নরম শরীরে,
কল্মীদামের থেকে জন্মেছে সে যেন এই পুকুরের নীরে –
নীরবে পা ধোয় জলে একবার — তারপর দূরে নিরুদ্দেশে
চ’লে যায় কুয়াশায় — তবু জানি কোনোদিন পৃথিবীর ভিড়ে
হারাব না তারে আমি — সে যে আছে আমার এ বাংলার তীরে।
যেদিন সরিয়া যাব কবিতা | যেদিন সরিয়া যাব জীবনানন্দ দাশের কবিতা
যেদিন সরিয়া যাব তোমাদের কাছ থেকে – দূর কুয়াশায়
চ’লে যাবো, সেদিন মরণ এসে অন্ধকারে আমার শরীর
ভিক্ষা ক’রে লয়ে যাবে;- সেদিন দু’দও এই বাংলার তীর —
এই নীল বাংলার তীরে শুয়ে একা একা কি ভাবিব, হায়;-
সেদিন র’বে না কোনো ক্ষোভ মনে –এই সোঁদা ঘাসের ধুলায়
জীবন যে কাটিয়াছে বাংলায় – চারিদিকে বাঙালীর ভিড়
বহুদিন কীর্তন ভাসান গান রুপকথা যাত্রা পাঁচালীর
নরম নিবিড় ছন্দে যারা আজো শ্রাবণের জীবণের জীবন গোঙায়,
আমারে দিয়াছে তৃপ্তি; কোনো দিন রুপহীন প্রবাসের পথে
বাংলার মুখ ভুলে খাঁচার ভিতরে নষ্ট শুকের মতন
কাটাইনি দিন মাস,বেহুলার লহনার মধুর জগতে
তাদের পায়ের ধুলো – মাখা পথে বিকায়ে দিয়েছি আমি মন
বাঙালি নারীর কাছে – চাল- ধোয়া স্নিগ্ধ হাত, ধান – মাখা চুল,
হাতে তার শাড়িটির কস্তা পাড়; – ডাঁশা আম কামরাঙা কুল।
Tag: জীবনানন্দ দাশের শ্রেষ্ঠ কবিতা, জীবনানন্দ দাশের কবিতা, জীবনানন্দ দাশের কবিতা সমগ্র, jibanananda das poem, বাংলার মুখ আমি কবিতা, বাংলার মুখ আমি জীবনানন্দ দাশের কবিতা, তোমরা যেখানে সাধ কবিতা, তোমরা যেখানে সাধ জীবনানন্দ দাশের কবিতা, ঘুমায়ে পড়িব আমি কবিতা, ঘুমায়ে পড়িব আমি জীবনানন্দ দাশের কবিতা, যেদিন সরিয়া যাব কবিতা, যেদিন সরিয়া যাব জীবনানন্দ দাশের কবিতা,
প্রতিদিন ১০০-২০০ টাকা ইনকাম করতে চাইলে এখানে কমেন্ট করে জানান। আমরা আপনায় কাজে নিয়ে নেবো। ধন্যবাদ