কবর জিয়ারত করার সঠিক শুদ্ধ নিয়ম
আবদুল্লাহ বিন বারিদা থেকে বর্ণিত, রাসূল (সা.) বলেছেন, তোমরা কবরস্থানে গমন কর, কেননা এটা তোমাদের আখেরাতের কথা স্মরণ করিয়ে দেয়।’ [ (মুসলিম, তিরমিজি)। ]
আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসূল (সা.) তাঁর মায়ের কবর জিয়ারত করে এত কাঁদলেন যে, তাঁর কান্না দেখে আশপাশের সবাই কাঁদল। তারপর রাসূল (সা.) বললেন, ‘আমি আমার প্রভুর কাছে অনুমতি চেয়েছি আমার মায়ের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করার। কিন্তু আমাকে অনুমতি দেয়া হয়নি। অতঃপর অনুমতি চাই মায়ের কবর জিয়ারত করার জন্য। এবার আমাকে অনুমতি দেয়া হলো। অতএব, তোমরা কবর জিয়ারত কর। কেননা এটা আখেরাতকে স্মরণ করিয়ে দেয়।’ (মুসলিম, আবু দাউদ)।
আয়েশা (রা.) বলেন, ‘একদিন নবীজী (সা.) আমার কাছে রাতযাপন করেন সে দিন তিনি শেষ রাতে জান্নাতুল বাকি নামক কবরস্থানের উদ্দেশে বেরিয়ে যান।’ (মুসলিম)।
কবর জিয়ারত আমাদের প্রিয় নবীর (সা.) একটি গুরত্বপূর্ণ সুন্নত। দুনিয়ার মোহ ও প্রাচুর্যের চাকচিক্যে ভুলে থাকা মানুষদের মাঝে-মধ্যেই কবরস্থানে গমন করা উচিত। কেননা এটা নিজেদের সংযত করতে, আল্লাহ ও পরকালের কথা স্মরণ করাতে খুবই সহায়ক।
জিয়ারতের উদ্দেশ্য : ইমাম ইবনুল কায়িম (রহ.) বলেছেন, রাসূল (সা.) যখন কবর জিয়ারত করতেন, কবরের অধিবাসীদের জন্য দোয়া করা এবং তাদের জন্য ক্ষমা চাওয়ার উদ্দেশ্যেই জিয়ারত করতেন। (ফিকহুস সুন্নাহ।)
জিয়ারতের নিয়ম : বিভিন্ন হাদিস থেকে জানা যায়, রাসূল (সা.) প্রায় সময়ই শেষ রাতে কবর জিয়ারত করতেন। তাই সম্ভব হলে শেষ রাতে কবর জিয়ারত করা উত্তম। কেননা মন তখন অধিক নরম থাকে। তাছাড়া অন্য সময়ও কবর জিয়ারত করা রাসূল (সা.) থেকে প্রমাণিত।
অধিকাংশ আলেমের মতে, জুতা-স্যান্ডেল পায়ে রেখে কবরের কাছে যাওয়া যায়। তবে ইমাম আহমদের মতে, প্রয়োজন না হলে জুতাসহ যাওয়া মাকরুহ। (ফিকহুস সুন্নাহ)।
জিয়ারতকারী যখন কবরের কাছে পৌঁছবে, মৃত ব্যক্তির মাথা বরাবর কিবলামুখী হয়ে দাঁড়াবে।
কবরবাসীকে সম্বোধন করে সালাম দেবে এবং তাদের জন্য মহান প্রভুর কাছে ক্ষমা চেয়ে দোয়া করবে। এ ক্ষেত্রে হাত তুলে ও না তুলে উভয় অবস্থায় দোয়া করা যাবে। আয়েশা (রা.) বলেন, রাসূল (সা.) বাকি কবরস্থানে পৌঁছে হাত উঠিয়ে দোয়া করেছিলেন। (মুসলিম)
জিয়ারতের দোয়া : আয়েশা (রা.) বলেন, আমি রাসূলকে (সা.) জিজ্ঞেস করলাম, হে আল্লাহর রাসূল। কবরবাসীকে কী বলব? তখন তিনি বললেন, হে আয়েশা তুমি বলবে, ‘মোমিন ও মুসলমানদের বাসভূমির অধিবাসীদের ওপর শান্তি বর্ষিত হোক। আমাদের মধ্যে থেকে যারা আগে আগে চলে গেছে এবং যারা পেছনে রয়েছে আল্লাহ তাদের সবার ওপর করুণা বর্ষণ করুন। ইনশাআল্লাহ আমরা তোমাদের সঙ্গে মিলিত হব। (মুসলিম)
এই দোয়াগুলোর সমর্থনে কোরআনের একটি আয়াত উল্লেখ করা যায়। আল্লাহ তায়ালা বলেছেন, ‘আর যারা তাদের পরে এসেছে এবং বলেছে, হে আমাদের রব! আমাদের ক্ষমা কর এবং আমাদের যেসব ভাই ঈমান সহকারে অতিবাহিত হয়েছে, তাদেরও ক্ষমা কর। আর মোমিনদের জন্য আমাদের মনে কোনো বিদ্বেষ সৃষ্টি করো না। হে আমাদের রব! তুমি তো ক্ষমাশীল, মমতাময়।’ (সূরা হাশর : ১০)।
Tags: কবর জিয়ারত করার সঠিক শুদ্ধ নিয়ম
প্রতিদিন ১০০-২০০ টাকা ইনকাম করতে চাইলে এখানে কমেন্ট করে জানান। আমরা আপনায় কাজে নিয়ে নেবো। ধন্যবাদ