শ্রমের মর্যাদা রচনা pdf | শ্রমের মর্যাদা রচনা class 5 6 7 8 | শ্রমের মর্যাদা রচনা ২০ ২৫ পয়েন্ট
টাইম অফ বিডির পক্ষ থেকে সকল শিক্ষার্থীর বন্ধুদের জানাই আসসালামুআলাইকুম ওয়ারাহমাতুল্লাহে ওবারাকাতুহু। আশা করি তোমরা সবাই ভালো আছো। আলহামদুলিল্লাহ তোমাদের দোয়ায় আমরাও ভালো আছি।
শ্রমের মর্যাদা রচনা | রচনা শ্রমের মর্যাদা
শ্রমের মর্যাদা রচনা | শ্রমের মর্যাদা রচনা ক্লাস 6, 7, 8, 9, 10
বাংলা রচনা শ্রমের মর্যাদা | শ্রমের মর্যাদা রচনা class 8
শ্রমের মর্যাদা রচনা ২০ পয়েন্ট | প্রবন্ধ রচনা শ্রমের মর্যাদা
শ্রমের মর্যাদা রচনা class 7 | শ্রমের মর্যাদা রচনা ২০ প্যারা
শ্রমের মর্যাদা রচনা
শ্রমের মর্যাদা রচনা (১৫০ শব্দ)
শ্রমের প্রয়োজনীয়তাঃ কথায় আছে, যে ব্যক্তি সৃষ্টিকর্তার উপর বিশ্বাস রেখে সততাকে পুঁজি করে নিরলস পরিশ্রম করে যায় সফলতা তার জন্য সময়ের ব্যপার মাত্র৷ বাবুই পাখি নিরলস শ্রমের মাধ্যমে একটু একটু করে মজবুত বাসা বুনন করে। ফলে, হাজারো ঝড়ে তার বুনন করা বাসা টিকে থাকে। অন্যদিকে চড়ুই পাখি পরিশ্রমী নয়৷ ফলে, অন্যের দালানে বোনা বাসা মুহুর্তের মধ্যেই ভেঙে পড়ে৷ জীবনকে যথাযথ মর্যাদায় প্রতিষ্ঠিত করতে হলে শ্রমের কোন বিকল্প নেই৷ তাই, মানবজীবনকে একটি সুন্দর রূপ দিতে হলে শ্রমের গুরুত্ব অপরিসীম।
শ্রমের মর্যাদা রচনা pdf
এক সময়ের যুদ্ধ বিধ্বস্ত জাপান বর্তমানে উন্নত দেশগুলোর একটি। তাদের উত্তরণের মূলে রয়েছে পরিশ্রম। যে জাতি যত বেশি পরিশ্রমী সে জাতি ততটাই সফল। একটি জাতির উন্নয়নের জন্য কায়িক ও মানসিক উভয় প্রকার শ্রমেরই দরকার হয়। শ্রম কখনোই কাউকে খালি হাতে ফেরায় না। যে ব্যক্তি যত পরিশ্রমী হয় সফলতা ততই তার নিকটে অবস্থান করে। বরং, শ্রম বিমুখ জাতি ও ব্যক্তি সবসময় পিছিয়ে থাকে। কারণ, শ্রমে কখনো কারো সম্মানের হানি ঘটে না, এ সহজ সত্যটা তাদের বোধগম্য হয়না৷ শ্রমের মর্যাদা যে জাতি উপলব্ধি করতেছে তারাই পেরেছে ক্ষুধা, দারিদ্রতা জয় করে সামনে এগিয়ে যেতে।
শ্রমের মর্যাদা রচনা উক্তি
শ্রমের সাথে সভ্যতার বিকাশের সম্পর্কঃ একসময় মানুষ বন-জঙ্গলে বসবাস করতো। পরে তারা নিজেদের সুরক্ষার জন্য গুহা খনন আরম্ভ করে। কাঁচা মাংস খাওয়া বাদ দিয়ে ধীরে ধীরে কৃষিকাজ আরম্ভ করে। শ্রমের মাধ্যমে ধীরে ধীরে সভ্যতা বিকাশের গল্প আরম্ভ হয়। শ্রম ব্যতীত কখনোই আমরা আজকের একুশ শতাব্দীর আধুনিক সভ্যতায় উপনীত হতে পারতাম না৷ নদীর বুকে দাঁড়িয়ে থাকা সেতু, বড় বড় দালানকোঠা, চারপাশের আধুনিক আলোকসজ্জা সব কিছুর পেছনে রয়েছে বহু বছরের অজস্র মানুষের দৈহিক ও মানসিক শ্রম।
শ্রমের মর্যাদা রচনা ২৫ পয়েন্ট
কোন মানুষের চরিত্রের সুন্দর দিকসমূহ পরিস্ফুটিত হয় একমাত্র শ্রমের মাধ্যমে। কথায় আছে, “অলস মস্তিষ্ক শয়তানের কারখানা “। শ্রম ও সততাকে অবলম্বন করে যে কাজই করা হোক না কেন সে কাজই উত্তম। কারণ, কোন কাজই ছোট নয়। সুন্দর ব্যক্তিজীবন বা সুন্দর দেশ – উভয় ক্ষেত্রে সর্বপ্রথম যেটি দরকার হয় সেটি হচ্ছে শ্রম। সকল মানুষকেই জীবনযুদ্ধে জয়ী হতে হলে নিরলস পরিশ্রম করে যেতে হয় কারণ, “Life is not a bed of rose”. শ্রমের মর্যাদা তাই সকলকেই উপলব্ধি করতে হবে।
শ্রম ও সফলতাঃ সৃষ্টিকর্তার পরে যদি আর কিছু আমাদের ভাগ্য নিয়ন্ত্রণ করতে পারে সেটি হচ্ছে শ্রম। একমাত্র শ্রম দিয়ে মানুষ তার দুঃসময়কে কাটিয়ে সুসময়কে ফেরত আনতে পারে। শ্রম ব্যতীত সুসময়ের আশা করা অলিক স্বপ্ন দেখা ছাড়া আর কিছু নয়। যে ব্যক্তি তার মেধার উপর বিশ্বাস রেখে পরিশ্রম করে যায় সফলতা তার জন্য সময়ের ব্যপার মাত্র। যে দেশের জনগোষ্ঠী যত বেশি পরিশ্রমী সে দেশের অবস্থান ততই দৃঢ়। ব্যক্তিজীবন ও রাষ্ট্রজীবন উভয় ক্ষেত্রে সফলতা অর্জন করতে হলে শ্রমের কোন বিকল্প নেই। শ্রমের মর্যাদা সঠিকভাবে অনুধাবন করে গত তিন দশকে চায়না নিজেদের অর্থনৈতিকভাবে নিয়ে গেছে অন্য উচ্চতায়।
শ্রমের মর্যাদা রচনা সহজ
শ্রমের মর্যাদা রচনা class 5
মানসিক বিকাশ ও শ্রমের গুরুত্বঃ “ঘুম বাদ দিয়ে কাজে যাও। মরার পরে ঘুমানোর যথেষ্ট সময় পাবে।” -মাইকেল ব্যাসে জনসন।
কথায় আছে “অলস মস্তিষ্ক শয়তানের কারখানা “। একটু লক্ষ্য করলে দেখা যায় আমরা যখন কাজ বাদ দিয়ে অকারণে সময় নষ্ট করি তখন হাজারো অকাজের চিন্তা আমাদের মস্তিষ্ককে গ্রাস করে নেয়। আমাদের মধ্যে এমন অনেকে রয়েছে যারা কোন কাজ শুরুর আগে ঘন্টাখানেক সময় নষ্ট করে শুধু কাজটি কিভাবে শুরু করা হবে সে চিন্তা করে৷ অথচ, যে সময়টা অযথা চিন্তায় নষ্ট করা হচ্ছে সে সময় কাজ শুরু করলে কাজের অনেকাংশ সমাপ্ত হয়ে যায়। একটা শিশুকে আপনি যখন অনেক খেলনা নিয়ে খেলতে দেবেন তখন সে তার মতো করে খেলায় ব্যস্ত থাকবে। আর খেলনা ছাড়া সে দেখবেন একদিকে ওদিক ছুটে বেড়াচ্ছে। এখানে ছুটে বেড়ানো হতে পারে কায়িক শ্রমের উদাহরণ আর খেলনা নিয়ে ব্যস্ত থাকা মানসিক শ্রম। সুতরাং, শিশু থেকে বয়স্ক সকলেরই মানসিক বিকাশ বা নিজেদের নেতিবাচক চিন্তা থেকে দূরে সরিয়ে রাখার জন্য শ্রমের গুরুত্ব রয়েছে।
শ্রমের মর্যাদা অনুচ্ছেদ class 7
ছাত্রজীবন ও শ্রমের গুরুত্বঃ “প্রতিভা বলে কিছুই নেই, সাধনা কর; সিদ্ধি লাভ হবেই।”- সমাজবিজ্ঞানী পার্সো।
আমাদের মধ্যে কেউ তীক্ষ্ণ মেধার অধিকারী আবার কেউ স্বল্প। এমন অনেক ছাত্র রয়েছে যারা প্রচুর মেধাবী হওয়ার সত্ত্বেও সে মেধাকে কোন কাজে লাগাতে পারেনা। এর একটাই কারণ- শ্রমের অভাব। আবার এমন অনেক ছাত্র রয়েছে যারা হয়তো তুলনামূলকভাবে কম মেধার অধিকারী কিন্তু শ্রমের মাধ্যমে তারা ঠিক তাদের লক্ষ্যে পৌঁছে যায়। কোন ছাত্র যত তার পড়াশোনাতে শ্রম দেবে ততই তার মেধা বিকশিত হবে৷ ছাত্র জীবনে শ্রমের মর্যাদা যারা বুঝতে পারে না, পুরো জীবনটাই তাদের হতাশার অন্ধকারে কাটিয়ে দিতে হয়।
রাষ্ট্রজীবন ও শ্রমের গুরুত্বঃ শ্রমের মাধ্যমে কোন পিছিয়ে পড়া জাতিও যে নিজেদের শক্ত অবস্থান তৈরি করতে পারে তার উৎকৃষ্ট উদাহরণ হচ্ছে চীন ও জাপান। চীনে একসময় কর্মসংস্থানের অভাবে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। তারপর তারা উত্তরণের হাতিয়ার হিসেবে বেছে নিয়েছিল কারিগরি শিক্ষাকে। আর, বর্তমানে অনেক দেশের অর্থনীতি চীনের উপর নির্ভরশীল। যুদ্ধ বিধ্বস্ত জাপান বর্তমানে অর্থনৈতিকভাবে শক্তিশালী দেশগুলোর একটি। এটি সম্ভব হয়েছে শুধুমাত্র পরিশ্রমের কারণে। জাতীয় জীবনে উন্নয়ন আনায়নের ক্ষেত্রে শ্রমের কোন বিকল্প নেই।
ধর্মীয় দৃষ্টিকোণ ও শ্রমের মর্যাদাঃ ‘তোমরা কেউ দড়ি নিয়ে পাহাড়ের দিকে চলে যাবে, লাকড়ি জমা করে পিঠে বোঝা বয়ে এনে তা বিক্রি করবে এবং এমনিভাবে আল্লাহ তার প্রয়োজন মিটিয়ে দেবেন, দ্বারে দ্বারে ভিক্ষার জন্য ঘুরে করুণা ও লাঞ্ছনা পাওয়ার চেয়ে এটা অনেক ভালো।’ (বুখারী)।সকল ধর্মেই শ্রমের মর্যাদা নিয়ে কথা বলা হয়েছে। সব ধর্মেই বলা হয়েছে কোন কাজই ছোট নয়৷ যে কাজ সততার সাথে করা হয় সে কাজ কখনোই ছোট হয়না। অলস ব্যক্তি কখনোই সৃষ্টিকর্তার প্রিয় হতে পারেনা৷ সততার সাথে যে ব্যক্তি সৃষ্টিকর্তার উপর বিশ্বাস রেখে পরিশ্রম করে যায় একদিন সে সফল হবেই।
শ্রমশীল ব্যক্তির উদাহরণ: “লোকে আমাকে প্রতিভাবান বলে, কিন্তু আমি পরিশ্রম ছাড়া কিছুই জানি না।”- দার্শনিক ডাল্টন
ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর ল্যাম্প পোস্টের আলোতে নিজে পড়াশোনা করতেন। শ্রমের এর চেয়ে বড় উদাহরণ আর কি হতে পারে। বিজ্ঞানী টমাস আলভা এডিসনের কথা মনে আছে তো? যিনি এক হাজার বারের চেষ্টায় বৈদ্যুতিক বাতি আবিষ্কার করতে পেরেছেন। যুগে যুগে যে সকল ব্যক্তিরা অমর হয়ে আছেন তাদের সফলতার মূলে রয়েহে শ্রম৷ নিউটন, জর্জ ওয়াশিংটন, আব্রাহাম লিংকন, আইনস্টাইন, ইসলাম ধর্মের প্রবর্তক মহানবী হযরত মুহম্মদ (স.) প্রত্যেকে ছিলের প্রচুর পরিশ্রমী। নিজের অক্লান্ত পরিশ্রম ব্যাখ্যা করতে গিয়ে নিউটন বলেছিলেন –
“আমার আবিষ্কারের কারণ প্রতিভা নয়, বহু বছরের চিন্তাশীলতা ও পরিশ্রমের ফলে দূরূহ তত্ত্বগুলোর রহস্য আমি ধরতে পেরেছি।”
শ্রমবিমুখতার পরিণামঃ পিঁপড়া আর ঘাসফড়িংয়ের গল্পটি মনে আছে তো? পিঁপড়া ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে খাদ্য মজুদ করে রেখেছিল আর ঘাসফড়িং খাদ্য আছে দেখে হেসেখেলে দিন কাটাচ্ছিল৷ ফলে, শীতকালে খাদ্যের অভাবে ঘাসফড়িং মারা গিয়েছিল। বাস্তবেও পিঁপড়া পরিশ্রমী প্রাণী। কারণ, একটি পিঁপড়া তার শরীরের চেয়ে ৪০ গুণ বেশি ওজনের বস্তু বহন করতে পারে। শ্রমবিমুখ ব্যক্তি সাময়িক সুখের লোভে ভবিষ্যতের কথা ভুলে যায়। তারা ভুলে যায় যে শ্রম সাময়িক কষ্টের হলেও এর ফল মিষ্টি। শ্রমবিমুখ ব্যক্তি পরিবার ও দেশের জন্য অনেকটা বোঝাস্বরূপ।
বাংলাদেশ ও শ্রমের ক্ষেত্রে লিঙ্গবৈষম্যঃ বিশ্বে যা কিছু মহান সৃষ্টি চির কল্যাণকর/ অর্ধেক তার করিয়াছে নারী, অর্ধেক তার নর। কাজী নজরুল ইসলামের এই কথাটি আমাদের দেশে এখনো বইয়ের পাতাতেই সীমাবদ্ধ রয়েছে। এদেশে অর্থনীতিতে নারীদের প্রতিভা থাকার সত্ত্বেও সামাজিক কারণে তারা অংশগ্রহণের সুযোগ পায়না। অনেকেই মনে মনে এই ধারণা পুষে রাখে যে নারী মানেই তার দক্ষতা শুধু রান্নাঘর অবধি সীমাবদ্ধ। অথচ, পোশাকশিল্পের আয়ের সিংহভাগ আসে নারীদের হাত ধরে। কিন্তু, তাও তারা শ্রমের যথাযথ মর্যাদা পায়না। যতদিন নারীদের শ্রমের যথাযথ মূল্যায়ন করা হবেনা ততদিন দেশ কাঙ্খিত গতিতে এগিয়ে যেতে পারবেনা৷