বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ রচনা, আমাদের মুক্তিযুদ্ধ রচনা, মুক্তিযুদ্ধ রচনা ২০০, ৩০০ শব্দের

Govt Education Blog
0
বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ রচনা, মুক্তিযুদ্ধ রচনা, আমাদের মুক্তিযুদ্ধ রচনা, রচনা বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ, মুক্তিযুদ্ধ রচনা ২০০ শব্দের, আমাদের মুক্তিযুদ্ধ রচনা ৫ম শ্রেণি, মুক্তিযুদ্ধ রচনা ১২০০ শব্দের, মুক্তিযুদ্ধ রচনা ৪র্থ শ্রেণি, মুক্তিযুদ্ধ রচনা ৩০০ শব্দের, আমাদের মুক্তিযুদ্ধ রচনা ২০০ শব্দ


টাইম অফ বিডির পক্ষ থেকে সকল শিক্ষার্থী বন্ধুদের জানাই আসসালামুআলাইকুম ওয়ারাহমাতুল্লাহি ওয়াবারাকাতুহ। আশা করি তোমরা সবাই ভাল আছ এবং সুস্থ আছো। আলহামদুলিল্লাহ তোমাদের দোয়ায় আমরাও ভালো আছি।

বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ রচনা, মুক্তিযুদ্ধ রচনা, আমাদের মুক্তিযুদ্ধ রচনা 

আমরা তোমাদের মধ্যে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ রচনা, মুক্তিযুদ্ধ রচনা, আমাদের মুক্তিযুদ্ধ রচনা, রচনা বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ, মুক্তিযুদ্ধ রচনা ২০০ শব্দের, আমাদের মুক্তিযুদ্ধ রচনা ৫ম শ্রেণি, মুক্তিযুদ্ধ রচনা ১২০০ শব্দের, মুক্তিযুদ্ধ রচনা ৪র্থ শ্রেণি, মুক্তিযুদ্ধ রচনা ৩০০ শব্দের, আমাদের মুক্তিযুদ্ধ রচনা ২০০ শব্দ নিয়ে হাজির হয়েছি।

রচনা বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ, মুক্তিযুদ্ধ রচনা ২০০ শব্দের 

বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ রচনা, বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ রচনা, বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ, বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ
বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ রচনা, মুক্তিযুদ্ধ রচনা, আমাদের মুক্তিযুদ্ধ রচনা, রচনা বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ, মুক্তিযুদ্ধ রচনা ২০০ শব্দের, আমাদের মুক্তিযুদ্ধ রচনা ৫ম শ্রেণি, মুক্তিযুদ্ধ রচনা ১২০০ শব্দের, মুক্তিযুদ্ধ রচনা ৪র্থ শ্রেণি, মুক্তিযুদ্ধ রচনা ৩০০ শব্দের, আমাদের মুক্তিযুদ্ধ রচনা ২০০ শব্দ  আমাদের গর্বের ইতিহাস। দীর্ঘ নয় মাস সংগ্রামের পর বিশ্বমানচিত্রে বাংলাদেশ জায়গা করে নিয়েছিল।

আমাদের মুক্তিযুদ্ধ রচনা ৫ম শ্রেণী, মুক্তিযুদ্ধ রচনা ১২০০ শব্দের 

শুধুমাত্র পরীক্ষার খাতায় লিখে নম্বর পাওয়ার জন্য নয়, বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ রচনা, মুক্তিযুদ্ধ রচনা, আমাদের মুক্তিযুদ্ধ রচনা, রচনা বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ, মুক্তিযুদ্ধ রচনা ২০০ শব্দের, আমাদের মুক্তিযুদ্ধ রচনা ৫ম শ্রেণি, মুক্তিযুদ্ধ রচনা ১২০০ শব্দের, মুক্তিযুদ্ধ রচনা ৪র্থ শ্রেণি, মুক্তিযুদ্ধ রচনা ৩০০ শব্দের, আমাদের মুক্তিযুদ্ধ রচনা ২০০ শব্দ সম্পর্কে জানা আমাদের প্রত্যেকের দায়িত্ব। 

মুক্তিযুদ্ধ রচনা ৪র্থ শ্রেণি, মুক্তিযুদ্ধ রচনা ৩০০ শব্দের

নিম্নে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ রচনা, বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ রচনা, মুক্তিযুদ্ধ রচনা, আমাদের মুক্তিযুদ্ধ রচনা, রচনা বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ, মুক্তিযুদ্ধ রচনা ২০০ শব্দের, আমাদের মুক্তিযুদ্ধ রচনা ৫ম শ্রেণি, মুক্তিযুদ্ধ রচনা ১২০০ শব্দের, মুক্তিযুদ্ধ রচনা ৪র্থ শ্রেণি, মুক্তিযুদ্ধ রচনা ৩০০ শব্দের, আমাদের মুক্তিযুদ্ধ রচনা ২০০ শব্দ  তুলে ধরা হলো।

বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ রচনা

ভূমিকাঃ
“স্বাধীনতা তুমি পিতার কোমল জায়নামাজের উদার জমিন।” – শামসুর রাহমান
মানুষ হোক কিংবা প্রাণী- পরাধীনতার শৃঙ্খলে কেউ বন্দি থাকতে চায় না। পরাধীন দেশের নাগরিকেরা জানে স্বাধীনতা কতখানি মূল্যবান৷ বাঙ্গালীর স্বাধীনতা অর্জনের গল্প যেমন গৌরবের তেমনি অশ্রুমাখা। এই গল্পের প্রতিটি পাতা ত্রিশ লক্ষ শহীদের রক্তে ভেজা। বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের প্রতিটি পাতায় পাতায় জড়িয়ে আছে স্বজন হারানোর শোক। হাজারো ত্যাগ তিতিক্ষার বিনিময়ে আমরা পেয়েছি স্বাধীনতা। গর্বের সাথে মাথা উঁচু করে জোর গলায় বলতে পারি আমরা স্বাধীন বাংলাদেশের নাগরিক।

মুক্তিযুদ্ধের স্বরূপঃ সাধারণত কোন দেশের বা জাতি গোষ্ঠীর স্বাধীনতা অর্জনের সংগ্রামকে বলা হয় মুক্তিযুদ্ধ। কোন অশুভ শক্তি বা একদল অত্যাচারী স্বৈরশাসক যখন কোন দেশ বা কোন গোষ্ঠীর উপর অবিচার শুরু করে তখন স্বৈরশাসকদের অত্যাচার থেকে মুক্তির জন্য শুরু হওয়া সংগ্রামকে বলা হয় মুক্তিযুদ্ধ। ৭১ এ পাকিস্তানী হানাদার বাহিনীর বিরুদ্ধে আমাদের সংগ্রাম মুক্তিযুদ্ধের সর্বকৃষ্ট উদাহরণ। বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস আজও বিশ্ববাসী স্মরণ করে।

মুক্তিযুদ্ধের পটভূমিঃ ১৯৪৭ সালে ভারতীয় উপমহাদেশ থেকে ইংরেজদের শাসনামলের অবসানের মধ্য দিয়ে ভারত ও পাকিস্তান নামের দুটি স্বাধীন রাষ্ট্রের জন্ম হয়। বর্তমান বাংলাদেশের তৎকালীন নাম ছিল পূর্ব পাকিস্তান। কিন্তু পশ্চিম পাকিস্তানী শাসক গোষ্ঠীর পূর্ব পাকিস্তানের অধিবাসীদের প্রতি মনোভাব ছিল বিরূপ। তাদের বিরূপ মনোভাবের প্রথম বহিঃপ্রকাশ ঘটেছিল উর্দুকে রাষ্ট্রভাষা হিসেবে ঘোষণা করার মধ্য দিয়ে। নিজের মায়ের ভাষার সম্মান রক্ষার্থে ১৯৫২ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি রফিক, সালাম, ররকতেরা ১৪৪ ধারা অমান্য করে নেমে এসেছিল রাজপথে। তাদের বুকের তাজা রক্তে ভিজেছিল রাজপথ। ফলশ্রুতিতে, পশ্চিম পাকিস্তানের শাসকেরা বাধ্য হয় বাংলাকে রাষ্ট্র ভাষার মর্যাদা দিতে। পূর্ব পাকিস্তানের জনগণ ধীরে ধীরে পশ্চিম পাকিস্তানের শাসকদের অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ শুরু করে৷ ১৯৬২ সালের শিক্ষা আন্দোলন, ১৯৬৬ সালের ছয়দফা আন্দোলন, ১৯৬৯ সালের গণআন্দোলন ছিল সে প্রতিবাদের বহিঃপ্রকাশ। জেনারেল ইয়াহিয়া খান ১৯৭০ সালে জাতীয় ও প্রাদেশিক পরিষদের নির্বাচনের ঘোষণা দেয়। আওয়ামী লীগ ১১ দফার ভিত্তিতে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করে ও বিপুল ভোটে জয়লাভ করে। কিন্তু পশ্চিম পাকিস্তানের শাসকরা ক্ষমতা হস্তান্তরে অস্বীকৃতি জানায়।

৭ মার্চের ঐতিহাসিক ভাষণঃ ১৯৭০ সালে জাতীয় পরিষদের নির্বাচনে আওয়ামী লীগের জয় লাভের পরেও পশ্চিমা শাসকগোষ্ঠী ক্ষমতা হস্তান্তর না করলে সারা দেশে বিক্ষোভ শুরু হয়৷ পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া খান ৩ মার্চ জাতীয় পরিষদে অধিবেশন ডাকলেও ১ মার্চ তা মুলতবি ঘোষণা করেন। পূর্ব পাকিস্তানে এ খবর ছড়িয়ে পড়া মাত্র দেশের জনগণ বিক্ষোভে ফেটে পড়ে। অবশেষে আসে ৭ মার্চ। তৎকালীন ঢাকার রেসকোর্স ময়দানের ভাষণে শেখ মুজিবুর রহমান সামরিক আইন প্রত্যাহার, সৈন্যদের ব্যারাকে ফিরিয়ে নেওয়া, গণহত্যার তদন্ত, নির্বাচিত প্রতিনিধিদের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তরের মত বিষয়গুলো জনগণের সম্মুখে উপস্থাপন করেন। শেখ মুজিবের অগ্নিঝরা কন্ঠের “এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম” আজো কোটি বাঙ্গালিকে উজ্জীবিত করে।

২৫ মার্চের অতর্কিত আক্রমণঃ শেখ মুজিবের নিকট ইয়াহিয়া খানের ক্ষমতা হস্তান্তরের নাটক পূর্ব পাকিস্তানের জনগণের ভেতর প্রবল ক্ষোভের জন্ম দেয়। সারা দেশে শুরু হয় আন্দোলন। অন্যদিকে ইয়াহিয়া খান পশ্চিম পাকিস্তান থেকে পূর্ব পাকিস্তানে ধীরে ধীরে অস্ত্র ও সামরিক সেনাদের জড়ো করতে থাকে। অবশেষে আসে বাঙ্গালীর ইতিহাসের কালোরাত্রি ২৫ মার্চ৷ ইয়াহিয়া খান তার সেনাদের কুকুরের মতো লেলিয়ে দেয় ঘুমন্ত বাঙ্গালীর উপর। পৃথিবীর ইতিহাসের ঘৃণিত এই হত্যাযজ্ঞ ‘অপারেশন সার্চ লাইট’ নামে পরিচিত। বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ ইতিহাসে এটি এক নির্মম অধ্যায়।

বঙ্গবন্ধুকে গ্রেফতার ও স্বাধীনতার ঘোষণাঃ ইয়াহিয়া খান জানতো, যে বঙ্গে বঙ্গবন্ধু আছে সে বাঙ্গালীকে যুদ্ধে হারানো এত সহজ হবে না। তাই কাপুরুষের মতো ২৫ মার্চ আক্রমণের রাতে তারা বঙ্গবন্ধুকে ধানমন্ডির ৩২ নম্বর বাড়ি থেকে গ্রেফতার করে নিয়ে যায়। তবে বঙ্গবন্ধু আগেই স্বাধীনতার ঘোষণা দেন। বঙ্গবন্ধুর স্বাধীনতার ঘোষণা ২৬ মার্চ বেলা ২টায় প্রথম চট্টগ্রাম বেতার কেন্দ্র থেকে প্রচার করা হয়। মেজর জিয়াউর রহমান ২৭ মার্চ কালুরঘাটস্থ স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্র থেকে বঙ্গবন্ধুর নামে স্বাধীনতা ঘোষণাপত্র পাঠ করেন।

অস্থায়ী সরকার গঠনঃ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে রাষ্ট্রপতি করে ১৯৭১ সালের ১০ এপ্রিল গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের স্থায়ী সরকার গঠন করা হয়৷ ১৭ এপ্রিল মুজিবনগরের মেহেরপুরের বৈদ্যনাথতলায় “গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের অস্থায়ী সরকার ” শপথ গ্রহণ করেন৷ বঙ্গবন্ধুর অনুপস্থিতিতে উপ-রাষ্ট্রপতি সৈয়দ নজরুল ইসলাম অস্থায়ী রাষ্ট্রপতির দায়িত্ব পালন করেন। তাজউদ্দীন আহমদ প্রধানমন্ত্রীর, ক্যাপ্টেন এম মনসুর আলী অর্থ, শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রী ও এ এইচ এম কামরুজ্জামান স্বরাষ্ট্র, সরবরাহ, ত্রাণ ও পুনর্বাসন এবং কৃষি মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।

মুক্তিবাহিনী ও মুক্তিযুদ্ধ: ২৫ মার্চ পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী কাপুরুষের মতো ঘুমন্ত বাঙ্গালীর উপর ঝঁপিয়ে পড়ার পর পশ্চিমা শাসকগোষ্ঠী ভেবেছিল বাঙ্গালী আর কখনো তাদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের কথা ভুলেও ভাববেনা। কিন্তু, তাদের এ ধারণা ভুল প্রমাণিত হতে বেশি সময়ের প্রয়োজন হয়নি। কর্নেল এম এ জি ওসমানীর নেতৃত্বে ১৯৭১ সালের ৪ এপ্রিল সিলেটের তেলিয়াপাড়ার চা বাগানে ১৩,০০০ সদস্য নিয়ে মুক্তিফৌজ গঠন করা হয়। কর্নেল এম এ জি ওসমানীকে এই বাহিনীর কমান্ডার ইন চীফ করে মুক্তিফৌজের নামকরণ করা হয় মুক্তিবাহিনী। তার নেতৃত্বে অনিয়মিত গেরিলা বাহিনী এবং নিয়মিত বাহিনী নামে আরো দু’টি বাহিনী গঠন করা হয়। নিয়মিত বাহিনীর অধীনে জেড ফোর্স, কে ফোর্স এবং এস ফোর্স নামের তিনটি বিগ্রেড বাহিনী গঠন করা হয়। জেড ফোর্সের কমান্ডার ছিলেন মেজর জিয়াউর রহমান, কে ফোর্সের মেজর খালেদ মোশাররফ এবং এস ফোর্সের কেএম শফিউল্লাহ।

মুক্তিযুদ্ধের ১১টি সেক্টরঃ বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ পরিচালনার সুবিধার্থে যুদ্ধের প্রধান সেনাপতি আতাউল গণি ওসমানী সমগ্র বাংলাদেশকে ১১টি সেক্টর ও ৬৪টি সাব-সেক্টরে ভাগ করেন। মুক্তিযুদ্ধের ১১টি সেক্টরের সেক্টর কমান্ডারদের নাম, সীমানা ও সদর দপ্তর নিম্নে উল্লেখ করা হলোঃ

১নং সেক্টর কমান্ডার: মেজর জিয়াউর রহমান (এপ্রিল- জুন), ক্যাপ্টেন রফিকুল ইসলাম (জুন-ডিসেম্বর)। চট্টগ্রাম ও পাবর্ত্য চট্টগ্রাম এলাকা ছিল ১ নং সেক্টরের অন্তর্ভুক্ত। ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের হরিনা ছিল সেক্টর নং ১ এর সদর দপ্তর।

২নং সেক্টর কমান্ডার: মেজর খালেদ মোশাররফ (এপ্রিল-অক্টোবর), ক্যাপ্টেন এ টি এম হায়দার (অক্টোবর- ডিসেম্বর)। ঢাকা, নোয়াখালী, ফরিদপুর ও কুমিল্লার অংশ বিশেষ ছিল সেক্টর ২ এর অংশ। ঢাকা, কুমিল্লা, আখাউড়া–ভৈরব, নোয়াখালী ও ফরিদপুরের কিছু অংশ নিয়ে গঠিত হয়েছিল সেক্টর ২। ভারতের ত্রিপুরার মেঘালয় অঞ্চলে সেক্টর নং ২ এর সদর দপ্তর অবস্থিত ছিল৷

৩নং সেক্টর কমান্ডার: মেজর কে. এম. শফিউল্লাহ্ (এপ্রিল-সেপ্টেম্বর), মেজর এ.এন.এম. নুরুজ্জামান (অক্টোবর-ডিসেম্বর)। কুমিল্লা, কিশোরগঞ্জ ও হবিগঞ্জ ছিল ৩ নং সেক্টরের অন্তর্ভুক্ত। মুক্তিযুদ্ধের সেক্টর নং ৩ এর সদর দপ্তর ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের কলাগাছিয়ায় অবস্থিত ছিল৷

৪নং সেক্টর কমান্ডার: মেজর সি. আর. দত্ত (মে-ডিসেম্বর)। মৌলভীবাজার ও সিলেটের পূর্বাংশ সেক্টর ৪ এর অংশ ছিল। এই সেক্টরের সদর দপ্তর প্রথমে করিমগঞ্জে থাকলেও পরবর্তীতে আসামের মাছিমপুরে স্থানান্তর করা হয়।

৫নং সেক্টর কমান্ডার: মেজর মীর শওকত আলী (আগস্ট- ডিসেম্বর)। বৃহত্তর ময়মনসিংহের সীমান্তবর্তী অঞ্চল এবং সিলেট জেলার অংশ বিশেষ নিয়ে গঠিত হয়েছিল মুক্তিযুদ্ধের ৫ নং সেক্টর। সেক্টর নং ৫ এর সদর দপ্তর ছিল সুনামগঞ্জ জেলার ছাতকের বাঁশতলায়।

৬নং সেক্টর কমান্ডার: উইং কমান্ডার এম. কে. বাশার (জুন-ডিসেম্বর)। রংপুর বিভাগ ছিল সেক্টর ৬-এর অন্তর্ভুক্ত। এই সেক্টরের সদর দপ্তর ছিল বুড়িমারী, পাটগ্রাম।

৭নং সেক্টর কমান্ডার: মেজর খন্দকার নাজমুল হক (এপ্রিল-আগস্ট), মেজর কিউ. এন. জামান (আগস্ট-ডিসেম্বর)। রাজশাহী বিভাগ ছিল সেক্টর ৭-এর অন্তর্ভুক্ত। ভারতের পশ্চিমবঙ্গের তরঙ্গপুরে ছিল এই সেক্টরের সদর দপ্তর।

৮নং সেক্টর কমান্ডার: মেজর এম. এ. ওসমান চৌধুরী (এপ্রিল-আগস্ট), মেজর এম. এ. মঞ্জুর (আগস্ট- ডিসেম্বর)। কুষ্টিয়া, যশোর, দৌলতপুর সাতক্ষীরা সড়ক পর্যন্ত খুলনা জেলা ও ফরিদপুরের কিছু অংশ নিয়ে গঠিত হয়েছিল সেক্টর নং ৮।

৯নং সেক্টর কমান্ডার: ক্যাপ্টেন এম. এ. জলিল (এপ্রিল-ডিসেম্বর)। সুন্দরবন ও বরিশাল বিভাগ সেক্টর ৯ এর অন্তর্ভুক্ত ছিল। এই সেক্টরের সদর দপ্তর ছিল ভারতের বসিরহাটের টাকিতে।

১০নং সেক্টরের কোন সেক্টর কমান্ডার ছিল না

১১নং সেক্টর কমান্ডার: মেজর জিয়াউর রহমান(জুন-আগস্ট), মেজর এ. তাহের (আগস্ট-নভেম্বর), ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট এম. হামিদুল্লাহ (নভেম্বর-ডিসেম্বর)। বৃহত্তর ময়মনসিং বিভাগ ছিল সেক্টর নং ১১-এর অন্তর্ভুক্ত। ১১ নং সেক্টরের সদর দপ্তর হিসেবে ভারতের আসামের মহেন্দ্রগঞ্জকে বেছে নেওয়া হয়েছিল।

মুক্তিযুদ্ধ ও আন্তর্জাতিক বিশ্ব: বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ এ আন্তর্জাতিক মহলের সহযোগিতা অবিস্মরণীয় হয়ে থাকবে৷ ডাচ বংশোদ্ভুত অস্ট্রেলিয়ান নাগরিক ওডারল্যান্ড পাকিস্তানিদের গণহত্যার ভয়াবহতার কিছু ছবি গোপনে আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে পাঠিয়েছিলেন। আগস্ট মাসের দিকে তিনি টঙ্গীতে বাটা কোম্পানির ভিতরে গেরিলা প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করেছিলেন এবং টঙ্গী ও এর আশপাশ এলাকায় বেশ কয়েকটি সফল গেরিলা হামলা চালিয়েছিলেন৷বিখ্যাত ভারতীয় সংগীতজ্ঞ পণ্ডিত রবিশঙ্কর ও জর্জ হ্যারিসন কর্তৃক পরিচালিত ‘কনসার্ট ফর বাংলাদেশ’ বিশ্বমন্ডলে স্বাধীনতাকামী বাঙালীর সংকটের কথা তুলে ধরেছিল। আমাদের প্রতিবেশী রাষ্ট্র ভারত তখন প্রায় এক কোটি শরণার্থীকে তাদের দেশে আশ্রয় দিয়েছিল। ভারতের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী বাংলাদেশের পক্ষে জনমত তৈরি করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিলেন৷ মুক্তিযুদ্ধের সময় সোভিয়েত ইউনিয়ন বাংলাদেশের সমর্থনে থাকলেও মার্কিন প্রশাসন বাংলাদেশের বিরোধিতা করে। কিন্তু সে দেশের সাধারণ জনগণ মার্কিন প্রশাসনকে পাকিস্তানকে গোলাবারুদ সরবরাহ বন্ধ করতে বাধ্য করে৷

বাংলাদেশ-ভারত যৌথ কমান্ডো বাহিনীর আক্রমণঃ ১৯৭১ সালের ২১ নভেম্বর ভারতের কমান্ডার জগজিৎ সিং অরোরার নেতৃত্বে বাংলাদেশ-ভারত যৌথ কমান্ডো গঠন করা হয়। ভারতীয় সেই বাহিনী মিত্রবাহিনী নাম নিয়ে গভীর রাতে বাংলাদেশের সকল রুটে প্রবেশ করে এবং পাকিস্তানের প্রতিটি বিমানঘাটিতে হামলা চালিয়ে পাকিস্তানের বিমানবাহিনীকে অচল করে দেয়।ভারতীয় বিমানবাহিনী কুর্মিটোলা বিমানঘাটিতে ৫০ টন বোমা ফেলে পাকিস্তানের প্রায় এক ডজনের মতো বিমান বিদ্ধস্ত করে। ভারতীয় বিমানবাহিনী ও বাংলাদেশের সশস্ত্র যোদ্ধাদের যৌথ আক্রমণে শুরু হয় মুক্তিযুদ্ধের চূড়ান্ত অধ্যায়। বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে অনেক ভারতীয় সেনা শহিদ হয়।

মুক্তিযুদ্ধ ও বুদ্ধিজীবী হত্যাকাণ্ড: পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী বুঝতে পেরেছিল তারা পরাজয়ের সন্নিকটে অবস্থান করছে। তাই তারা অন্য এই গভীর ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হতে থাকে। বাংলাদেশকে চিরপঙ্গু করে দেওয়ার নীলনকশা তারা প্রণয়ন করতে থাকে৷
এদেশের দোসর রাজাকার, আলবদর ও আল-শামস বাহিনীর সহায়তায় হানাদার বাহিনী ঝাপিয়ে পড়ে আমাদের দেশের সূর্যসন্তানদের উপর। ১৪ ডিসেম্বর রাতের অন্ধকারে এদেশের মুক্তিকামী ও মুক্তিযুদ্ধের সমর্থনকারী সকল শিক্ষক, চিকিৎসক, ডাক্তার, সাংবাদিক, বুদ্ধিজীবীদের ধরে নিয়ে হত্যা করে। শহীদ বুদ্ধিজীবীদের অনেকেরই ক্ষতবিক্ষত দেহ ঢাকার রায়ের বাজারের বধ্যভূমিতে পাওয়া যায়।

পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর আত্মসমর্পণ: মুক্তিবাহিনী ও মিত্র বাহিনীর সাথে যুদ্ধে হানাদার বাহিনী কোণঠাসা হয়ে পড়লে মিত্র বাহিনীর ফিল্ড মার্শাল শ্যাম মানেকশ পাকিস্তানি জেনারেল নিয়াজীকে আত্মসমর্পণের প্রস্তাব দেন। জেনারেল নিয়াজী ১৬ ডিসেম্বর বর্তমান সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে অর্থাৎ তৎকালীন রেসকোর্স ময়দানে বিকেল ৪টা ৩১ মিনিটে ৯৩ হাজার সৈন্য নিয়ে সম্মিলিত বাহিনীর প্রধান জগজিৎ সিং অরোরার নিকট তিনি আত্মসমর্পণ করেন। গ্রুপ ক্যাপ্টেন এ কে খন্দকার বাংলাদেশের পক্ষে নেতৃত্ব দেন ।

বাংলাদেশকে স্বীকৃতি প্রদানকারী দেশসমূহঃ বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ দেশ হওয়ার আগেই ১৯৭১ সালের ৬ ডিসেম্বর ভুটানের তৎকালীন রাজা জিগমে দর্জি ওয়াংচুক স্বাধীন সার্বভৌম রাষ্ট্র হিসেবে বাংলাদেশকে স্বীকৃতি জানিয়ে তারবার্তা দেন। একই দিনে বেলা ১১টার সময় ভারত বাংলাদেশকে স্বীকৃতি প্রদান করে৷ ১৯৭২ সালে ৮৭টি দেশ স্বাধীন বাংলাদেশকে স্বীকৃতি জানায়। ১৯৭৩ সালে মোট ১৮টি দেশ স্বাধীন বাংলাদেশকে স্বীকৃতি জানায়। ১৯৭৪ সালে মোট ৭ টি দেশ বাংলাদেশকে স্বীকৃতি প্রদান করে। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধুর হত্যার আগ পর্যন্ত ১০৪ দেশ (সৌদি আরব ও চীন ছাড়া) বাংলাদেশকে স্বীকৃতি দিয়েছিল। অবশেষে বঙ্গবন্ধু হত্যার পর ১৯৭৫-এ সৌদি আরব ও চীন বাংলাদেশকে স্বীকৃতি দেয়।

মুক্তিযুদ্ধে নারীর ভূমিকাঃ লাখো নারীর সম্ভ্রম হারানোর গল্প বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ। মুক্তিযুদ্ধে নারীদের ভূমিকা ছিল অনস্বীকার্য। কানন দেবী, উপাসনা রায়, সুধারানী কর, পূর্ণিমা রানী দাস ও নিপা রানী মুজমদারের মত নাম অজানা অনেকেই প্রশিক্ষণ সেবার দায়িত্বে নিয়োজিত ছিলেন। প্রীতিরানী দাস পুরকায়স্থ, শুক্লা রানী দে, হেমলতা দেব ছাড়াও আরো অনেকে আহত মুক্তিযোদ্ধাদের চিকিৎসা সেবায় নিয়োজিত ছিলেন। ছায়ানট সভাপতি সনজীদা খাতুন কলকাতায় বসে মুক্তিদ্ধের রণাঙ্গনে গানের টিম পাঠিয়ে উদ্দীপ্ত করতেন যোদ্ধাদের। কাঁকন বিবি, তারামন বিবি, শিরিন বানু মিতিল, রওশন আরার মত অনেকে অস্ত্র হাতে সরাসরি যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছিলেন।

মুক্তিযুদ্ধে কবি, সাহিত্যিক ও শিল্পীদের ভূমিকাঃ মুক্তিযুদ্ধে সাহিত্যিকরা ছিল কলমযোদ্ধা আর শিল্পীরা ছিল কন্ঠযোদ্ধা। কবি, সাহিত্যিকরা তাদের কবিতা, গল্প গান দিয়ে মুক্তিযোদ্ধাদের অনুপ্রাণিত করতেন৷ অনেক শিল্পীরা প্রতিবেশী রাষ্ট্রে নাটক, গান পরিবেশন করে মুক্তিযুদ্ধের জন্য টাকা সংগ্রহ করতো৷ মুক্তিযুদ্ধের সময় “চরমপত্র” ও “জল্লাদের দরবার” নামের অনুষ্ঠান দুটো মুক্তিযোদ্ধাদের অনুপ্রাণিত করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিল৷ সকলের সম্মলিত প্রচেষ্টায় আজ আমরা পেয়েছি সোনার বাংলাদেশ।

উপসংহারঃ
“সাবাশ বাংলাদেশ,
এ পৃথিবী অবাক তাকিয়ে রয়
জ্বলে পুড়ে মরে ছারখার
তবু মাথা নোয়াবার নয়।।”- সুকান্ত ভট্টাচার্য্য
বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ সারা বিশ্বকে দেখিয়েছিল কিভাবে নিরস্ত্র এক জাতি দেশপ্রেমের তাগিদে দেশকে হায়েনাদের হাত থেকে মুক্ত করেছিল। যে চেতনায় উজ্জীবিত হয়ে মুক্তিযোদ্ধারা এদেশকে স্বাধীন করেছিল তরুণ প্রজন্মের দায়িত্ব হলো সে চেতনাকে সাথে নিয়ে এইটি সুন্দর, সমৃদ্ধ দেশ গড়া। যেদিন এদেশে অশুভ শক্তি পরাজিত হবে, থাকবেনা সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা সেদিন দেওয়া হবে আমাদের মুক্তিযোদ্ধাদের প্রকৃত সম্মান৷ বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ একই সাথে কষ্টের, দুঃখের, গৌরবের।

Tag: বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ রচনা, মুক্তিযুদ্ধ রচনা, আমাদের মুক্তিযুদ্ধ রচনা, রচনা বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ, মুক্তিযুদ্ধ রচনা ২০০ শব্দের, আমাদের মুক্তিযুদ্ধ রচনা ৫ম শ্রেণি, মুক্তিযুদ্ধ রচনা ১২০০ শব্দের, মুক্তিযুদ্ধ রচনা ৪র্থ শ্রেণি, মুক্তিযুদ্ধ রচনা ৩০০ শব্দের, আমাদের মুক্তিযুদ্ধ রচনা ২০০ শব্দ 

Post a Comment

0Comments

প্রতিদিন ১০০-২০০ টাকা ইনকাম করতে চাইলে এখানে কমেন্ট করে জানান। আমরা আপনায় কাজে নিয়ে নেবো। ধন্যবাদ

Post a Comment (0)