বঙ্গবন্ধুর জীবনী বাংলা রচনা pdf | বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান রচনা | জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান রচনা

বঙ্গবন্ধুর রচনা, বঙ্গবন্ধুর জীবনী বাংলা রচনা, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান রচনা, শেখ মুজিবুর রহমান রচনা, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান রচনা, বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে রচনা, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান রচনা, রচনা বঙ্গবন্ধু, বঙ্গবন্ধু রচনা, bangabandhu sheikh mujibur rahman rachana, বঙ্গবন্ধুর জীবনী বাংলা রচনা ২০০ শব্দের, বঙ্গবন্ধুর জীবনী বাংলা রচনা pdf, বঙ্গবন্ধুর জীবনী সংক্ষেপে রচনা, বঙ্গবন্ধুর জীবনী বাংলা রচনা ১০০০ শব্দ, বঙ্গবন্ধুর জীবনী ও কর্ম রচনা, বঙ্গবন্ধুর জীবনী বাংলা রচনা ৩০০ শব্দ

প্রিয় শিক্ষার্থী বন্ধুরা টাইম অফ বিডির পক্ষ থেকে সবাইকে জানাই আসসালামুআলাইকুম রাহমাতুল্লাহে ওবারাকাতুহু। আশা করি তোমরা সবাই ভালো আছো এবং সুস্থ আছো। আলহামদুলিল্লাহ তোমাদের দোয়ায় আমরাও ভালো আছি। 

বঙ্গবন্ধুর রচনা | বঙ্গবন্ধুর জীবনী বাংলা রচনা | বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান রচনা

বাংলাদেশের জন্মের পেছনে যার অবদান অনস্বীকার্য, তিনি হলেন শেখ মুজিবর রহমান যিনি বাংলাদেশের জাতির জনক হিসেবে পরিচিত। আমাদের বাংলা জাতির পিতা, বাংলার সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি, দেশবন্ধু শেখ মুজিবর রহমান কে নিয়েই আজকের এই রচনা, বঙ্গবন্ধুর রচনা, বঙ্গবন্ধুর জীবনী বাংলা রচনা, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান রচনা, শেখ মুজিবুর রহমান রচনা, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান রচনা, বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে রচনা, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান রচনা, রচনা বঙ্গবন্ধু, বঙ্গবন্ধু রচনা, bangabandhu sheikh mujibur rahman rachana রচনা টির শেষে বঙ্গবন্ধু রচনা টি তোমাদের কেমন লাগলো কমেন্ট করে অবশ্যই জানিও।

শেখ মুজিবুর রহমান রচনা | জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান রচনা

তাহলে শুরু করা যাক বঙ্গবন্ধুর রচনা, বঙ্গবন্ধুর জীবনী বাংলা রচনা, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান রচনা, শেখ মুজিবুর রহমান রচনা, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান রচনা, বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে রচনা, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান রচনা, রচনা বঙ্গবন্ধু, বঙ্গবন্ধু রচনা, bangabandhu sheikh mujibur rahman rachana  টি। শুরু করার আগে বলে নিই- এই রচনা টির সাহায্যে তোমরা স্বাধীনতা ও বঙ্গবন্ধুর উন্নয়ন ভাবনা রচনা এবং ৭ই মার্চের ঐতিহাসিক গুরুত্ত্ব রচনা টিও লিখতে পারবে।

বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে রচনা | জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান রচনা | রচনা বঙ্গবন্ধু

 বঙ্গবন্ধুর রচনা, বঙ্গবন্ধুর জীবনী বাংলা রচনা, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান রচনা, শেখ মুজিবুর রহমান রচনা, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান রচনা, বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে রচনা, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান রচনা, রচনা বঙ্গবন্ধু, বঙ্গবন্ধু রচনা, bangabandhu sheikh mujibur rahman rachana রচনা টির শেষে আমি তোমাদের বলে দেব এই দুই রচনার জন্য কোন কোন হেডলাইন গুলো নিয়ে লিখবে।

বঙ্গবন্ধু রচনা, bangabandhu sheikh mujibur rahman rachana 

বঙ্গবন্ধুর রচনা, বঙ্গবন্ধুর জীবনী বাংলা রচনা, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান রচনা, শেখ মুজিবুর রহমান রচনা, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান রচনা, বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে রচনা, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান রচনা, রচনা বঙ্গবন্ধু, বঙ্গবন্ধু রচনা, bangabandhu sheikh mujibur rahman rachana 

  • সূচনা
  • বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এর জন্ম ও শিক্ষা
  • রাজনৈতিক জীবন
  • ভাষা আন্দোলনে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান
  • আওয়ামী লীগ প্রতিষ্ঠা
  • যুক্তফ্রন্ট নির্বাচন
  • ছয় দফা আন্দোলন
  • উনসত্তরের গণঅভ্যুত্থান ও বঙ্গবন্ধু
  • উপাধি
  • স্বাধীনতার ঘোষক বঙ্গবন্ধু
  • শেখ মুজিবুর রহমানের হত্যাকাণ্ড
  • বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে রচিত গ্রন্থাবলি
  • বঙ্গবন্ধুর অবদান
  • মুজিব বর্ষ
  • উপসংহার

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান রচনা

সূচনা:
হে বন্ধু বঙ্গবন্ধু, তোমার কালো ফ্রেমের চশমাটা আমায় দাও, আমি চোখে দিয়ে দেখব, তুমি কেমন করে দেশটাকে এতো ভালোবাসো।
বিভিন্ন জাতির শ্রেষ্ঠ পুরুষ থাকে। তেমনই বাঙালি জাতির শ্রেষ্ঠ পুরুষ হলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান । হাজার বছরের ইতিহাসে বাঙালির শ্রেষ্ঠতম অর্জন বাংলাদেশের স্বাধীনতা। আর এই স্বাধীনতা সংগ্রামের ইতিহাসের সঙ্গে যার নাম চিরস্মরণীয় হয়ে আছে, তিনি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। তিনি বাঙালি জাতির অবিসংবাদিত নেতা। পাকিস্তান সৃষ্টির অল্প কিছুকাল পরেই স্পষ্ট হয়ে ওঠে বৈষম্য আর পরাধীনতার গ্লানি। ১৯৪৮ সালে রাষ্ট্রভাষা প্রশ্নে পাকিস্তানি শাসকগােষ্ঠীর সঙ্গে এ দেশের জনগণের দ্বন্দ্ব আরও সুস্পষ্ট হয়। 
নিপীড়িত জাতির ভাগ্যাকাশে যখন দুর্যোগের কালােমেঘ, তখনই বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান শেখ মুজিবুর রহমানের গৌরবময় আবির্ভাব। অসাধারণ দেশপ্রেম ও দূরদর্শী নেতৃত্ব দিয়ে তিনি সমগ্র জাতিকে ঐক্যবদ্ধ করতে পেরেছিলেন। কৃতজ্ঞ বাঙালি জাতি তাই ভালােবেসে ১৯৬৯ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে তাঁকে ‘বঙ্গবন্ধু' উপাধিতে ভূষিত করে। স্বাধীনতার পর তাকে ‘জাতির পিতা’-র মর্যাদায় অভিষিক্ত করা হয়।

বঙ্গবন্ধুর জীবনী বাংলা রচনা ২০০ শব্দের

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এর জন্ম ও শিক্ষা:
স্বাধীন বাংলাদেশের স্থপতি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯২০ সালের ১৭ই মার্চ গােপালগঞ্জ জেলার টুঙ্গিপাড়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। পিতা শেখ লুৎফর রহমান, মা সায়েরা খাতুন। দুই ভাই, চার বােনের মধ্যে শেখ মুজিবুর রহমান ছিলেন পিতা-মাতার তৃতীয় সন্তান। পারিবারিক আনন্দঘন পরিবেশে টুঙ্গিপাড়ায় তার শৈশব-কৈশােরের দিনগুলাে কাটে। গিমাডাঙ্গা প্রাইমারি স্কুলে প্রাথমিক শিক্ষা শেষ করার পর তিনি গােপালগঞ্জ মিশন হাইস্কুলে ভর্তি হন এবং এই স্কুল থেকে ১৯৪১ সালে তিনি ম্যাট্রিক পাশ করেন। এই সময় তিনি রাজনীতিতে সক্রিয় হয়ে ওঠেন। শেরে বাংলা এ. কে. ফজলুল হক ও হােসেন শহীদ সােহরাওয়ার্দী গােপালগঞ্জ মিশন স্কুলে এক সংবর্ধনা সভা শেষে ফিরে যাচ্ছিলেন, পথরােধ করে দাঁড়ালেন শেখ মুজিবুর রহমান। স্কুলের ছাত্রাবাস জরাজীর্ণ। ছাত্রাবাস মেরামতের জন্য অর্থ চাই। 
শেরে বাংলা প্রথমে কিশাের মুজিবের সাহস ও স্পষ্ট বক্তব্য আর জনহিতৈষী মননাভাবের পরিচয় পেয়ে বিস্মিত হন। তিনি প্রশ্ন করলেন কত টাকা চাই। দৃপ্তকণ্ঠে কিশাের মুজিব বললেন- বারাে’শ টাকা। শেরে বাংলা এ. কে. ফজলুল হক সাথে সাথে টাকার ব্যবস্থা করলেন। বাল্যকাল থেকেই শেখ মুজিবুর রহমান একটু অন্যরকম ছিলেন। একবার নিজের বাড়ির গােলার ধান গ্রামের গরিব চাষিদের মাঝে বিলিয়ে দেন। পিতা শেখ লুত্যর রহমান এর কারণ জিজ্ঞেস করলে উত্তরে তিনি বলেছিলেন, এবার চাষিদের জমির ধান সব বন্যায় নষ্ট হয়ে গেছে। আকালে পড়েছে কৃষক। আমাদের মতাে ওদের পেটেও ক্ষুধা আছে। ওরাও আমাদের মতাে বাঁচতে চায়। বাবা ছেলের এই সৎ সাহস ও মহানুভবতা দেখে বেশ খুশি হলেন। এভাবে শেখ মুজিবুর রহমান গরিবের বন্ধু আর নিপীড়িত মানুষের হৃদয় জয় করেন। 
কলকাতা ইসলামিয়া কলেজ থেকে ১৯৪৪ সালে আইএ এবং ১৯৪৬ সালে বিএ পাশ করেন তিনি। ১৯৪৬ সালে ইসলামিয়া কলেজ ছাত্রসংসদের সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। ছাত্র শেখ মুজিবুর রহমান ক্রমেই নেতা মুজিবে বিকশিত হতে থাকেন। ১৯৪৭-এ দেশ বিভাগের পর তিনি আইন পড়ার জন্য ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হন।

বঙ্গবন্ধুর জীবনী বাংলা রচনা pdf

রাজনৈতিক জীবন:
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রাহমানের রাজনৈতিক জীবন শুরু হয় ১৯৩৯ সালে মিশনারি স্কুলে পড়ার সময়। স্কুলের ছাদ সংস্কারের জন্য একটি দল গঠন করে নিজ নেতৃত্বে তিনি শেরে বাংলা এ কে ফজলুল হকের নিকট দাবি পেশ করেন।১৯৪০ তিনি নিখিল ভারত মুসলিম ছাত্র ফেডারেশনে এক বছরের জন্যে যুক্ত হন। পরবর্তীতে ১৯৪২ সালে এনট্র্যান্স পাশ কলকাতা ইসলামিয়া কলেজে আইন পড়ার জন্য ভর্তি হন।
কলকাতা ইসলামিয়া কলেজে (বর্তমান নাম মাওলানা আজাদ কলেজ) পড়া থেকেই তিনি সক্রিয়ভাবে ছাত্র রাজনীতি শুরু করেন। ১৯৪৩ সালে তিনি বেঙ্গল মুসলিম লীগে যোগ দান করার সুবাধে তিনি বাঙালি মুসলিম নেতা হুসেইন শহীদ সোহরাওয়ার্দীর সান্নিধ্যে আসেন। একটি পৃথক মুসলিম রাষ্ট্র গড়ে তোলার আন্দোলন নিয়ে তিনি ১৯৪৩ সালে বঙ্গীয় মুসলিম লীগের কাউন্সিলর নির্বাচিত হন।
১৯৪৭ সালে ভারত ও পাকিস্তান পৃথক হওয়ার পর হিন্দু-মুসলিম দাঙ্গা শুরু হয়। মুসলিমদের রক্ষা করার জন্যে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সোহরাওয়ার্দীর সাথে বিভিন্ন রাজনৈতিক তৎপরতায় যুক্ত হন। এরপর ঢাকায় ফিরে এসে ১৯৪৮ সালের জানুয়ারির ৪ তারিখে পূর্ব পাকিস্তান মুসলিম ছাত্রলীগ প্রতিষ্ঠা করেন এবং প্রধান ছাত্রনেতায় পরিণত হন। 

বঙ্গবন্ধুর জীবনী সংক্ষেপে রচনা

ভাষা আন্দোলনে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান:
মূলত বাংলাকে রাষ্ট্র ভাষা করার দাবি অর্থাৎ ভাষা আন্দোলনের মধ্য দিয়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের রাজনৈতিক তৎপরতার বিকাশ ঘটে। পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী খাজা নাজিমউদ্দিন গণ-পরিষদের ১৯৪৮ সনের ফেব্রুয়ারি ২৩ তারিখে অধিবেশনে উর্দুই হবে পাকিস্তানের একমাত্র রাষ্ট্রভাষা বলার পরিপেক্ষিতে সমগ্র পূর্ব পাকিস্তানে বিরূপ প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়। 
তখন বঙ্গবন্ধু এ সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আন্দোলন শুরুর সিদ্ধান্ত নেন। ১৯৪৮ সালে সর্বদলীয় রাষ্ট্রভাষা সংগ্রাম পরিষদ গঠিত হলে এর সঙ্গে তিনি যুক্ত হন। এ বছর ১১ই মার্চ রাষ্ট্রভাষা বাংলার দাবিতে হরতাল পালনের সময় তিনি গ্রেফতার ও কারারুদ্ধ হন। ‘বাংলাকে পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষা করার জন্য কেন্দ্রীয় সরকারকে সুপারিশ করে পূর্ববঙ্গ পরিষদে একটি প্রস্তাব গ্রহণ করা হবে’- এ মর্মে রাষ্ট্রভাষা সংগ্রাম পরিষদের সঙ্গে পূর্ববঙ্গের নাজিমুদ্দিন সরকার চুক্তিবদ্ধ হলে তিনি মুক্তি লাভ করেন।

বঙ্গবন্ধুর জীবনী বাংলা রচনা ১০০০ শব্দ

আওয়ামী লীগ প্রতিষ্ঠা:
সোহরাওয়ার্দী এবং মাওলানা ভাসানী কর্তৃক পূর্ব পাকিস্তান আওয়ামী মুসলিম লীগ গঠন করার পর বঙ্গবন্ধু মুসলিম লীগ ছেড়ে দেন। ১৯৪৯ সালে আওয়ামী মুসলিম লীগ গঠিত হলে তিনি যুগ্ম সম্পাদকের পদ লাভ করেন এবং ১৯৫৩ সালে সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। 

যুক্তফ্রন্ট নির্বাচন:

১৯৫৩ সালে দলের সেক্রেটারি জেনারেল নির্বাচিত হওয়ার পর তিনি ১৪ নভেম্বর সাধারণ নির্বাচনে অংশগ্রহণের জন্য অন্যান্য দল নিয়ে যুক্তফ্রন্ট গঠনের সিদ্ধান্ত নেন। ১৯৫৪ সালের ১০ মার্চ অনুষ্ঠিত নির্বাচনে ২৩৭ টি আসনের মধ্যে যুক্তফ্রন্ট ২২৩ টি আসনে বিপুল ব্যবধানে জয় লাভ করে। যার মধ্যে ১৪৩ টি আসনই আওয়ামী লীগ লাভ করেছিল।
গোপালগঞ্জে আসনে বঙ্গবন্ধুর প্রতিদ্বন্দ্বী ছিল শক্তিশালী মুসলিম লীগ নেতা ওয়াহিদুজ্জামান। যাকে তিনি ১৩,০০০ ভোটের ব্যবধানে পরাজিত করেন। ১৫ মে বঙ্গবন্ধু কৃষি ও বন মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পাওয়ার পর ২৯ মে কেন্দ্রীয় সরকার যুক্তফ্রন্ট ভেঙে দেয় এবং ৩০ মে ঢাকায় ফিরার পথে বন্দর থেকেই তাকে আটক করা হয়। দীর্ঘ ৭ মাস পর ২৩ ডিসেম্বর তাকে মুক্তি দেওয়া হয়। 
পরবর্তীতে ১৯৫৫ সালের ৫ জুন আইন পরিষদের সদস্য মনোনীত হলে তিনি পল্টন ময়দানে অনুষ্ঠিত এক সম্মেলনে ২১ দফা দাবি পেশ করেন। 

ছয় দফা আন্দোলন:

১৯৬৪ সালের ২৫ জানুয়ারি সোহরাওয়ার্দীর মৃত্যুর পর অনুষ্ঠিত এক বৈঠকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে পাকিস্তানের অন্যতম প্রধান রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগের মহাসচিব নির্বাচিত করা হয়। এ সময় বঙ্গবন্ধু সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা প্রতিরোধকল্পে বিশেষ ব্যবস্থা গ্রহণ করেন। এ দেশের মানুষের অধিকার আদায় এবং শােষণ-বঞ্চনার প্রতিবাদ করতে গিয়ে শেখ মুজিবুর রহমান বহুবার গ্রেফতার ও কারারুদ্ধ হন। 
১৯৬৬ সালে তিনি পেশ করেন বাঙালি জাতির ঐতিহাসিক মুক্তির সনদ ছয় দফা। এ সময় নিরাপত্তা আইনে তিনি বারবার গ্রেফতার হতে থাকেন। আজ গ্রেফতার হয়ে আগামীকাল জামিনে মুক্ত হলে সন্ধ্যায় তিনি আবার গ্রেফতার হন। এরকমই চলে পর্যায়ক্রমিক গ্রেফতার। তিনি কারারুদ্ধ জীবনযাপন করতে থাকেন। তাঁকে প্রধান আসামি করে দায়ের করা হয় আগরতলা মামলা।

উনসত্তরের গণঅভ্যুত্থান ও বঙ্গবন্ধু:

আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলা চলাকালীন সময়ে কেন্দ্রীয় ছাত্র সংগ্রাম পরিষদ ১৯৬৯ সালের জানুয়ারি ৫ তারিখে দফা দাবি পেশ করে যার মধ্যে শেখ মুজিবের ছয় দফার সবগুলোই দফাই অন্তর্ভুক্ত ছিল। আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলা প্রত্যাহারের দাবিতে দেশব্যাপী ছাত্র আন্দোলনের প্রস্তুতি শুরু হয়। যা পরবর্তীতে গণ আন্দোলনের রূপ নেয়। এই গণ আন্দোলনই ঊনসত্তরের গণঅভ্যুত্থান নাম পরিচিত।
মাসব্যাপী চলতে থাকে আন্দোলন, কারফিউ, ১৪৪ ধারা ভঙ্গ, পুলিশের গুলিবর্ষণ। পরবর্তীতে এই আন্দোল চরম রূপ ধারণ করলে তৎকালীন রাষ্ট্রপতি আইয়ুব খান তাদের রাজনৈতিক নেতাদের দিয়ে গোলটেবিলে বৈঠকে আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলা প্রত্যাহার ও বঙ্গবন্ধুকে মুক্তি দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। 

উপাধি:

১৯৬৯ সালের ২৩শে ফেব্রুয়ারি ছাত্র সংগ্রাম পরিষদ কর্তৃক আয়ােজিত রেসকোর্স ময়দানের (বর্তমানে সোহরাওয়ার্দী উদ্যান) লক্ষ মানুষের এক নাগরিক সংবর্ধনায় তাঁকে 'বঙ্গবন্ধু' উপাধিতে ভূষিত করা হয়। স্বাধীন বাংলাদেশের স্থপতি হিসেবে রাষ্ট্রীয়ভাবে বঙ্গবন্ধুকে বাংলাদেশের "জাতির জনক" বা "জাতির পিতা" হিসেবে স্বীকৃতি দেয়া হয়েছে। এছাড়া সম্প্রতি ২০২৪ সালের ১৬ আগস্ট জাতিসংঘে বাংলাদেশ স্থায়ী মিশন আয়োজিত জাতীয় শোক দিবসের অনুষ্ঠানে তাকে ‘বিশ্ব বন্ধু’ (ফ্রেন্ড অব দ্যা ওয়ার্ল্ড) হিসেবে আখ্যা দেয়া হয়। ভারতের সংস্কৃতি মন্ত্রণালয় ২০২৪ সালের গান্ধী শান্তি পুরষ্কারের জন্য বঙ্গবন্ধুর নাম ঘোষণা করে। বঙ্গবন্ধুর জন্মবার্ষিকী ও বাংলাদেশের স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীর প্রাক্কালে এই পুরষ্কারের ঘোষণা দেওয়া হয়।

বঙ্গবন্ধুর জীবনী ও কর্ম রচনা

স্বাধীনতার ঘোষক বঙ্গবন্ধু:

জেনারেল ইয়াহিয়া খান ১লা মার্চ জাতীয় পরিষদের অধিবেশন অনির্দিষ্টকালের জন্য স্থগিত করার প্রতিবাদে শেখ মুজিবুর রহমান ৩রা মার্চ অসহযােগ আন্দোলনের ডাক দেন। ৭ই মার্চ ঐতিহাসিক রেসকোর্স ময়দানে স্মরণকালের বৃহত্তম জনসভায় বঙ্গবন্ধু ঘােষণা করেনঃ 

এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম
এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম।

২৫ মার্চ কালরাত্রিতে পাকবাহিনীর হত্যাযজ্ঞে সারা বাংলাদেশের মানুষ বিক্ষোভে ফেটে পড়ে। এমনি অবস্থায় গ্রেফতারের আগ মুহূর্তে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান যে স্বাধীনতার ঘােষণা দেন তা ওয়ারলেসের মাধ্যমে প্রাপ্ত হয়ে চট্টগ্রামের আওয়ামী লীগ নেতা এম.এ. হান্নান কালুরঘাট বেতার কেন্দ্র থেকে পাঠ করলে সারাদেশে ব্যাপক আলােড়ন সৃষ্টি হয়। পূর্ব বাংলা রেজিমেন্টের মেজর জিয়াউর রহমান বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের হয়ে ২৭ মার্চ চট্টগ্রামের কালুরঘাট থেকে স্বাধীনতা ঘোষণা করেন। যা আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম প্রচার করে, ফলে বিশ্ব বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ ঘোষণা সম্পর্কে জানতে পারে।

বঙ্গবন্ধুর জীবনী বাংলা রচনা ৩০০ শব্দ

শেখ মুজিবুর রহমানের হত্যাকাণ্ড:

দীর্ঘ নয় মাস রক্তক্ষয়ী যুদ্ধ শেষে বাংলাদেশের স্বাধীনতার সূর্য উদিত হয়। বিজয় দিবস বাঙালির বিজয় সূচিত হয়।বাংলাদেশের বিজয়ের পর ১৯৭২ সালের ১০ই জানুয়ারি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে মুক্তি দেওয়া হয়। দেশে ফেরার পর ১২ই জানুয়ারি তিনি প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শাসনভার গ্রহন করেন। এবং যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশ গড়ে তােলার কাজে আত্মনিয়ােগ করেন। কিন্তু পরাজিত হায়েনার দল তার সাফল্য ও বাঙালির উত্থানকে মেনে নিতে পারেনি। 
তাই আবার শুরু হয় ষড়যন্ত্র। দেশ যখন সকল বাধা দূর করে এগিয়ে যাচ্ছিল, তখন দেশীয় ষড়যন্ত্রকারী ও আন্তর্জাতিক চক্রের শিকারে পরিণত হন। ১৯৭৫ সালের ১৫ই আগস্ট সামরিক বাহিনীর তৎকালীন কিছু উচ্চাভিলাষী ও বিপথগামী সৈনিকের হাতে বঙ্গবন্ধু সপরিবারে নিহত হন। তাই বাঙালি জাতি প্রতিবছর ১৫ ই আগস্ট জাতীয় শোক দিবস পালন করে। 

বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে রচিত গ্রন্থাবলি:

সর্বকালের শ্রেষ্ঠ বাঙালি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান নিজেই দুইটি খন্ডে তার আত্মকাহিনী লিখেন। যেখানে তিনি ব্যক্তিগত জীবনের পাশাপাশি রাজনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গি বর্ণনা করেছেন। মৃত্যুর পর তার কন্যা ও বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রচনা দুটি গ্রন্থ আকারে প্রকাশ করেন।
শারীরিকভাবে শেখ মুজিবুর রহমানের মৃত্যু হলেও তিনি অমর, অক্ষয়। ২০১২ সালে প্রকাশিত হয়েছে বঙ্গবন্ধুর বৈচিত্র্যময় জীবনের অসাধারণ এক খণ্ডাংশ ‘অসমাপ্ত আত্মজীবনী'। দেশপ্রেমিক প্রতিটি বাঙালি হৃদয়ে চির অম্লান হয়ে রয়েছে একটি নাম- শেখ মুজিবুর রহমান। কবি অন্নদাশংকরের ভাষায় বলতে হয়

যতকাল রবে পদ্মা-যমুনা-গৌরী-মেঘনা বহমান
ততকাল রবে কীর্তি তােমার শেখ মুজিবুর রহমান।

বঙ্গবন্ধুর অবদান:

দ্বিধাবিভক্ত পরাধীন জাতিকে সুসংগঠিত করে স্বাধীনতার মন্ত্রে উজ্জীবিত করা এবং সঠিক নেতৃত্ব দেওয়া সহজ কাজ নয়। অথচ এই কঠিন কাজটি বঙ্গবন্ধু খুব সহজেই করতে পেরেছিলেন। স্বাধিকার থেকে স্বাধীনতার সংগ্রাম সবই পরিচালনা করেছেন শেখ মুজিবুর রহমান অসীম দক্ষতা ও যােগ্যতায়। তাঁর ছিল মানুষকে উদ্বুদ্ধ করার মতাে অসাধারণ বজ্রকণ্ঠ। অনলবর্ষী বক্তা হিসেবে তাঁর ছিল বিপুল খ্যাতি। এর প্রমাণ পাওয়া যায় ঐতিহাসিক ৭ই মার্চের ভাষণে। অকৃত্রিম দেশপ্রেম, সাধারণ জনগণের প্রতি গভীর ভালােবাসা, অমায়িক ব্যক্তিত্ব, উপস্থিত বুদ্ধি তাঁকে বাঙালি জাতির অবিসংবাদিত নেতায় পরিণত করেছে। স্বাধীনতার পর তিনি খুব বেশিদিন ক্ষমতায় থাকার সুযোগ পাননি। যতটুকু সময় ক্ষমতায় ছিলেন, তিনি যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশকে পুনর্গঠনের উদ্যোগ গ্রহণ করেন। 
১৯৭২ সালের ১২ই জানুয়ারি ক্ষমতা লাভের পর কিছুদিনের মধ্যে ভারতীয় বাহিনীর দেশত্যাগ করা এবং মুক্তিবাহিনীর অস্ত্রসমর্পণ করার ঘােষণা দেন। বিশ্বের ১০৪টি দেশ স্বাধীন বাংলাদেশকে স্বীকৃতি প্রদান করে। বাংলাদেশ জাতিসংঘের সদস্যপদ, জোটনিরপেক্ষ আন্দোলন ও ইসলামি সম্মেলন সংস্থার সদস্যপদ লাভ করে বঙ্গবন্ধুর আমলে। ১৯৭২ সালের ১৪ই ডিসেম্বর বাংলাদেশের নতুন সংবিধান গৃহীত হয়। তাঁর সরকারের সময় ব্যাংক, বিমাসহ শিল্পকারখানা জাতীয়করণ করা হয়। ১৯৭৪ সালে তিনি জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে প্রথম বাংলায় বক্তৃতা দেন। তাঁর নেতৃত্বে অর্জিত হয়েছিল বাঙালির হাজার বছরের স্বপ্ন স্বাধীনতা। এই স্বাধীনতা বাঙালি জাতির জীবনে সূচনা করেছে এক নবদিগন্ত। আত্মপরিচয়হীন জাতি খুঁজে পেয়েছে তার অস্তিত্ব ও আত্মমর্যাদা।

মুজিব বর্ষ | মুজিব বর্ষের লোগো

মুজিব বর্ষ হলো বাংলাদেশের জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিক পালনের জন্য ঘোষিত বর্ষ। বাংলাদেশ সরকার ২০২৪-২১ সালকে (১৭ই মার্চ ২০২৪ থেকে ১৭ই মার্চ ২০২৪ পর্যন্ত) মুজিব বর্ষ হিসেবে পালনের ঘোষণা দেয়। এবং অনেক কর্মসূচি হাতে নেওয়া হয়।
করোনাভাইরাসের কারণে কর্মসূচিগুলো নির্ধারিত সময়ে যথাযথভাবে করতে না পারায় মুজিববর্ষের মেয়াদ প্রায় ৯ মাস বাড়িয়ে সময়কাল ২০২৪ সালের ১৭ মার্চ থেকে ২০২৪ সালের ১৬ ডিসেম্বর পর্যন্ত করা হয়। ২০২৪ সালের ১২-২৭ নভেম্বরে প্যারিসে অনুষ্ঠিত ৪০তম সাধারণ অধিবেশনে অধিবেশনে ২৫ নভেম্বরে ইউনেস্কোর সকল সদস্যের উপস্থিতিতে মুজিব বর্ষ পালনের চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। মুজিব বর্ষ পালনে 'তুমি বাংলার ধ্রুব তারা' শিরনামে একটি থিম সঙ্গিত রচনা করা হয়। গানটি লিখেছেন কামাল চৌধুরী এবং গানে কণ্ঠ দিয়েছে দেশের বরেণ্য সব শিল্পীরা।

উপসংহার:

বাংলাদেশের স্বাধীনতার ইতিহাসে যার নাম উজ্জ্বল নক্ষত্রের মতাে দীপ্যমান তিনি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। তাঁর দূরদশী, বিচক্ষণ এবং সঠিক নেতৃত্বেই বাংলাদেশ স্বাধীন হয়েছিল। তিনি সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি এবং স্বাধীন বাঙালি জাতির জনক। তিনি নিজের স্বার্থকে কখনােই প্রাধান্য দেননি। জাতির কল্যাণের কথাই তিনি সবসময় ভেবেছেন। জেল-জুলুম ও নির্যাতনের কাছে তিনি কখনাে মাথা নত করেননি। 

সমস্ত জাতিকে তিনি মুক্তি ও স্বাধীনতার চেতনায় ঐক্যবদ্ধ ও উদ্বুদ্ধ করেছিলেন। তাঁর আত্মত্যাগ জাতিকে মহান মর্যাদায় অধিষ্ঠিত করেছে। বঙ্গবন্ধুকে বাংলাদেশ থেকে বিচ্ছিন্ন করে দেওয়া বাঙালি জাতির অস্তিত্বকে অস্বীকার করার শামিল। 'বঙ্গবন্ধু' ও 'বাংলাদেশ' আজ সমগ্র বাঙালি জাতির কাছে এক ও অভিন্ন নাম।

তোমার স্বপ্নে পথ চলি আজো
চেতনায় মহীয়ান।
মুজিব তোমার অমিত সাহসে
জেগে আছে কোটি প্রাণ।

Tag: বঙ্গবন্ধুর রচনা, বঙ্গবন্ধুর জীবনী বাংলা রচনা, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান রচনা, শেখ মুজিবুর রহমান রচনা, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান রচনা, বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে রচনা, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান রচনা, রচনা বঙ্গবন্ধু, বঙ্গবন্ধু রচনা, bangabandhu sheikh mujibur rahman rachana, বঙ্গবন্ধুর জীবনী বাংলা রচনা ২০০ শব্দের, বঙ্গবন্ধুর জীবনী বাংলা রচনা pdf, বঙ্গবন্ধুর জীবনী সংক্ষেপে রচনা, বঙ্গবন্ধুর জীবনী বাংলা রচনা ১০০০ শব্দ, বঙ্গবন্ধুর জীবনী ও কর্ম রচনা, বঙ্গবন্ধুর জীবনী বাংলা রচনা ৩০০ শব্দ