এমআরআই কি এবং কেন করানো হয় | MRI ki and keno korano hoi



    এমআরআই কি কি রোগ নির্ণয় করে 

    আসসালামুআলাইকুম। আশাকরি সৃষ্টিকর্তার অশেষ রহমতে সকলে সুস্থ আছেন। timeofbd.com এর পক্ষ থেকে সকলকে শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন।

    আপনারা অনেকেই আমাদের কাছে জানতে চেয়েছেন MRI দ্বারা কি কি রোগ নির্ণয় করা যায়। তাই আজ আমরা আপনাদের এ সম্পর্কে বিস্তারিত জানাবো।

    MRI কি | MRI কেন করানো হয়

    এমআরআই বা Magnetic Resonance Imaging হল, সবচেয়ে অত্যাধুনিক রোগ নির্ণয়কারী (Diagnostic) একটি পরীক্ষা, যার মাধ্যমে শরীরের অভ্যন্তরীণ অঙ্গের (internal body structures) খুব স্পষ্ট ছবি (Image) নেওয়া হয়, যাতে করে নির্দিষ্ট রোগ বা অস্বাভাবিক অবস্থা খুঁজে বের করা যায়। চিকিৎসা বিজ্ঞানে এটি Radiology বিভাগের অন্তর্গত। এমআরআই বিংশ শতাব্দীর মহান চিকিৎসা হিসাবে ব্যাপকভাবে স্বীকৃত এবং যা অগণিত মানুষের জীবন বাঁচিয়েছে বা আয়ু বাড়িয়েছে।


    চিকিৎসা বিজ্ঞানেMRI Division -টি বৃহৎ Radiology বিভাগের অন্তর্গত হলেও, এই বিষয়টি নিজেই এত বিস্তৃত (MRI Physics, clinical & imaging aspects), এবং সাধারণ X-Ray ভিত্তিক Radiology থেকে এতটাই আলাদা যে, উন্নত বিশ্বের গবেষকরা এটিকে একটি সতন্ত্র বিষয় / বিভাগ হিসেবে বিবেচনা করছেন। Radiology বিভাগের অন্যান্য পরীক্ষা যেমন, X-Ray / CT / DSA/ Interventional Radiology-এর মত MRI পরীক্ষাতে মানব শরীরের জন্য ক্ষতিকারক কোন বিকিরণ (ionizing radiation) ব্যবহৃত হয় না।
    MRI সম্পর্কে মৌলিক ধারণা পেতে ইতিহাস পর্যালোচনা করতে হয়। এ থেকে জানা যায় যে, এমআরআই নামের এই নতুন প্রযুক্তিটির ভিত্তি শুরশু হয়েছিল ১৯৪৬ সালে, যখন এই বছরে Felix Bloch (1905-1983), সুইজারল্যান্ডের পদার্থবিদ) এবং Edward Mills Purcell (1912-1997), আমেরিকান পদার্থবিদ) স্বাধীনভাবে magnetic resonance phenomena আবিষ্কার করেছিলেন এবং পরে এই কাজের জন্য ১৯৫২ সালে পদার্থ বিদ্যায় একত্রে নোবেল পুরস্কার অর্জন করেন। ১৯৭০ সাল পর্যন্ত MRI একটি রাসায়নিক ও ভৌত বিশ্লেষণ (Chemical S Physical analysis) - এর যন্ত্র হিসেবে ব্যবহৃত হত, যাNuclear magnetic resonance (NMR) নামে পরিচিত ছিল। Paul Christian Lauterbur (1992-2007, আমেরিকার রসায়নবিদ), ১৯৭৩ সালে প্রথম NMR image তৈরি করেন, যেটি ছিল test tube-এর চিত্র। Dr. Raymond Johnson Damadian (1936 - , আর্মেনিয় আমেরিকান চিকিৎসক) ছিলেন প্রথম MRI স্ক্যানিং মেশিনের উদ্ভাবক। মানবদেহের স্ক্যান করার করার জন্যNMR-কে নিরাপদে এবং সঠিকভাবে ব্যবহার করে Damadianআজকে পরিচিত এই এমআরআই পদ্ধতি উদ্ভাবন করেন। ক্যান্সার নির্ণয় করতে Dr. Damadian ১৯৭৭ সালের ৩রা জুলাই একজন মানুষের পুরো শরীরের প্রথম স্ক্যানটি (Whole body scan) সম্পাদন করেছিলেন, যাতে প্রায় পাঁচ ঘন্টা সময় লেগেছিল। ১৯৭৭ সালে Sir Peter Mansfield (ব্রিটিশ পদার্থবিদ) দারা echo-planar technique (অতি দ্রুত MRI scanning করার পদ্ধতি) আবিস্কারের পর থেকে পরবর্তী ২০ বছরের বেশি সময় ধরে অনেক বিজ্ঞানী এইMRI-এর খুব দ্রুত উন্নতি সাধন করেন এবং বর্তমান প্রযুক্তিতে নিয়ে আসেন। MRI-কে একটি রোগ নির্ণয়কারী যন্ত্র হিসেবে আবিস্কারের জন্যPaul Lauterbur ও Peter Mansfield ২০০৩ সালে নোবেল পুরস্কার অর্জন করেন।


    Nikola Tesla (1856-1943, সাবীর্য় আমেরিকান পদার্থবিদ) ১৮৮২ সালে হাঙ্গেরীর বুদাপেস্টে “আবর্তিত / ঘুরনায়ামান চৌম্বক ক্ষেত্র” (Rotating Magnetic Field) আবিস্কার করেন। ১৯৫৬ সালে, Tesla কে চৌম্বক ক্ষেত্রের শক্তির একক হিসেবে গণ্য করা হয়। চৌম্বক ক্ষেত্রের শক্তি যত বেশি হবে (অর্থাৎ Teslaযত বেশি হবে), শরীরের পরমাণু থেকে নির্গত radio signals -এর পরিমাণও তত বেশি শক্তিশালী হবে, আর সেই জন্যMRI image-এর মানও তত বেশি পরিস্কার হবে।
    বিভিন্ন ধরনের MRI scanner আছে, জানতে হবে কোনটি কি, যেমন, Low-Field (অল্প ক্ষমতা সম্পন্ন) MRI scannerহল যে মেশিনের শক্তি 0.3 Teslaএর কম। সাধারনতOpen MRI মেশিনগুলি বা কিছু closed system MRI মেশিন অল্প ক্ষমতা সম্পন্ন হয়। High-Field (উচ্চ ক্ষমতা সম্পন্ন) MRI scanner হল যে মেশিনের শক্তি ১.০ থেকে ৩.০ Tesla পর্যন্ত। আর এগুলি Supercon MRI scannerহয়। 3.0 Tesla -এর বেশি 7.0 Tesla - পর্যন্ত MRI scanner আছে, তবে সেগুলি শুধুই গবেষণার কাজে ব্যবরিত হয়, কারণ এত বেশি উচ্চ ক্ষমতা সম্পন্নsystem মানব শরীরের জন্য নিরাপদ বলে এখনো বিবেচিত হয়নি। Supercon MRI scanner-এর কথা আজকাল আমরা প্রায়ই শুনি, এই Supercon MRI scannerহল যে MRI মেশিনে অতিপরিবাহী চুম্বক (Superconducting magnet) ব্যবহার করা হয়েছে এবং যার ফলে সেটি অনেক বেশী চৌম্বক ক্ষেত্র (magnetic field) তীব্রতায় পৌঁছাতে পারে। চিকিৎসাগতভাবে clinically) অতিপরিবাহী চুম্বক সাধারণত 1.0 T থেকে 3.0 T পযর্ন্ত চৌম্বক ক্ষেত্রের শক্তি প্রদর্শন করে।


    এমআরআই মেশিন (MRI scanner) কিভাবে কাজ করে | কি কারণে এমআরআই পরীক্ষা (MRI scanner) করা হয়

    সাধারণভাবে এমআরআই পরীক্ষা দ্বারা নিম্নলিখিত রোগ নির্ণয় করা যায় : ১. মস্তিষ্কের রোগ, যেমন টিউমার, স্ট্রোক এবং অন্যান্য; ২. মেরুদণ্ডের রোগ/আঘাত; ৩. জোড়া রোগ ও ক্রীড়াজনিত আঘাত; ৪. হাড় ও মাংসপেশির সমস্যা; ৫. রক্তনালীর অস্বাভাবিকতা; ৬. মহিলাদের স্তন ও তল পেটের সমস্যা; ৭. প্রস্টেট সমস্যা; ৮. লিভার, পিত্ত নালী ও কিছু আন্ত্রিক রোগ; ৯. নির্দিষ্ট নাক, কান ও গলা (ইএনটি) রোগ, ইত্যাদি।
    কিভাবে এমআরআই পরীক্ষার জন্য প্রস্তুত করা হয়?
    নিরাপদে স্ক্যান করা যাবে তা নিশ্চিত করার জন্য একজন সদস্য কিছু নিরাপত্তা প্রশ্নাবলী করবেন ও আপনাকে একটি স্ক্রীনিং ফর্ম পূরণ করতে বলা হবে।
    পরীক্ষা করার আগে রোগীকে যে সব ধাতব বস্তু অপসারণ করতে হবে তা হল: পার্স, মানিব্যাগ, ব্যাংক কার্ড, ঘড়ি, চশমা, কলম, ক্লিপ, কয়েন, চাবি, জুতা, বেল্ট buckles, সেফটি পিন, চুলের পিন, মেটাল গহনা, ইলেক্ট্রনিক ডিভাইস যেমন, beepers বা সেল ফোন, শ্রবণ যন্ত্র (Hearing aids) ধাতব প্লেট লাগানো আলগা দাঁত, পোষাক যাতে ধাতব দ্রব্য আছে, যেমন - মেটাল চেইন, বোতাম, হুক ইত্যাদি।


    কে বা কারা এমআরআই পরীক্ষা করতে পারবে না

    যদি কৃত্রিম হার্টের বাল্ব, ধাতব জয়েন্ট, অঙ্গ, প্লেট, screw রড বা আলগা দাঁত লাগানো থাকে তাহলে বিশেষজ্ঞ রেডিওলজিস্ট এর সাথে কথা বলুন। তিনি আপনার কাগজ পত্র দেখে পরামর্শ দিবেন।


    কিভাবে এমআরআই পরীক্ষা করা হয়

    এমআরআই পরীক্ষাটি যন্ত্রণাহীন। যখন স্ক্যানার কাজ করে, তখন এটি দুমদাম শব্দ তৈরি করতে পারে, এইজন্য আপনার কানে হেডফোন লাগিয়ে দেওয়া হতে পারে এবং এতে আপনি গান শুনতে পারেন। এই শব্দ স্বাভাবিক এবং আপনার চিন্তা করার প্রয়োজন নেই। একটি পরীক্ষা সম্পূর্ণ করতে ১০ থেকে ৪০ মিনিট সময় ব্যয় হয়, তবে পরীক্ষাভেদে ৬০ মিনিট বা তার বেশি সময় লাগতে পারে। পরীক্ষা চলাকালীন রোগীর উচিত সম্পূর্ণ শিথিল থাকা, কোন রকম নড়াচড়া করলে ছবি ঝাপসা হয়ে যেতে পারে।


    যে সকল রোগী এমআরআই পরীক্ষার জন্য শান্তভাবে শুয়ে থাকতে পারেন না তাদেরকে এই পরীক্ষাকালীন সময়ের জন্য ঔষধের মাধ্যমে হালকা ঘুম পাড়িয়ে দেয়ার জন্য শিরাতে একটি ইঞ্জেকশন দিতে হয় (I.V. Sedation)। সম্পূর্ণ প্রক্রিয়াটি একজন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক (Anesthesiologist) দ্বারা সম্পন্ন করা হয়। জাগরণের পর ঔষধ থেকে কোন দীর্ঘস্থায়ী প্রভাব সাধারণত থাকে না, অথবা স্বল্প সময় নিদ্রালু (drowsy) মনে হতে পারে।


    আপনার এমআরআই পরীক্ষা করার সময়, স্ক্যানার অপারেটর (MRI Technologist) জানালা দিয়ে বা মনিটরে সব সময়ে আপনাকে দেখেন, প্রয়োজনে আপনি তার সাথে কথা বলতে পারেন এবং শুনতে পারেন। যদি আপনার কোন প্রশ্ন থাকে বা অস্বাভাবিক কিছু যদি মনে করেন তবে পরীক্ষা চলাকালীন তার সাথে যোগাযোগ করতে পারবেন।


    কিছু এমআরআই পরীক্ষার জন্য, রোগীর শিরাতে একটি ঔষধ / MRI contrast agent (Gadolinium) ইঞ্জেকশনের প্রয়োজন হতে পারে। যে অংশের পরীক্ষা করা হচ্ছে তার খুব বেশি পরিষ্কার ছবি নিয়ে আরও সঠিকভাবে রোগ নির্ণয়ের জন্য এটির প্রয়োজন হয়। এতে পরীক্ষার সময় কিছু বেশি লাগে। এক্সরে বা সিটি পরীক্ষায় ব্যবহৃত এজেন্টের ন্যায় এমআরআই এজেন্টে আয়োডিন থাকে না, অতএব এতে খুব কমই এলার্জীর বা অন্যান্য সমস্যা সৃষ্টির সম্ভাবনা থাকে। স্ক্যান করার পরে, আপনার কোন সীমাবদ্ধতা থাকে না এবং আপনি স্বাভাবিক কাজে যেতে পারেন।


    সমগ্র এমআরআই পরীক্ষাটি সম্পন্ন হওয়ার পরে, ছবিগুলি একজন MRI বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক (MRI Specialist Radiologist) দেখেন এবং এই ছবিগুলি (Scan/Image) ব্যাখ্যা করে একটি রিপোর্ট লিখেন। পরবর্তী পদক্ষেপ নিয়ে আলোচনা করার জন্য এই রিপোর্ট নিয়ে আপনার ডাক্তারের (Referring physician) সঙ্গে যোগাযোগ করা উচিত, এবং প্রয়োজনে পরে Radiologist -এর সাথেও কথা বলতে পারেন।


    এমআরআই পরীক্ষা কতটা নিরাপদ

    আপনার এমআরআই পরীক্ষা প্রভাবিত হতে পারে এরকম যে কোনো অভ্যন্তরীণ বস্তু (implanted object) বা শারীরিক অবস্থা সম্পর্কে প্রশ্ন বা উদ্বেগ থাকলে এমআরআই কেন্দ্রে Radiologist-এর সাথে যোগাযোগ করুন বাMRI Technologist-কে জিজ্ঞেস করুন।
    এটা সুনিশ্চিতভাবে বলা যায় যে, যেহেতু এমআরআই পরীক্ষাটির মাধ্যমে অত্যন্ত নিরাপদভাবে অনেক বেশি সুক্ষ রোগ নির্ণয় করা যায়, সেহেতু প্রয়োজনে, বিশেষ করে ছোটদের ক্ষেত্রে এই পরীক্ষাটিই করানো উচিত, কারণ এতে কোন ক্ষতিকারকRadiation নেই এবং ব্যবরিত contrast agent তুলনামুলক সমস্যার সৃষ্টি করে না।


    যে অংশেরscanning হবে তার সম্পুর্ণ পরীক্ষা (full study) / আংশিক পরীক্ষাও (Screening study) করানো যেতে পারে। আংশিক পরীক্ষাটি (Screening study) মাত্র ১০ মিনিটে শেষ করা যায়। এছাড়া আরও একটি কথা মনে রাখতে হবে, যদি সম্ভব হয় এই পরীক্ষাটি একটি Supercon MRI মেশিনে করানো উচিত।


    এমআরআই স্ক্যানার আপনার শরীরের ছবি নেওয়ার জন্য একটি অত্যন্ত শক্তিশালী চুম্বক (যেমন 0.2, 0.3, 1, 1.5 অথবা 3 টেসলা), রেডিও ফ্রিকোয়েন্সি তরঙ্গ (radiofrequency wave) এবং একটি শক্তিশালী কম্পিউটার ব্যবহার করে। এখানে আবারো মনে করিয়ে দিই যে, এক্সরে বা সিটি স্ক্যানের মত এমআরআই মেশিন কোন ক্ষতিকারক বিকিরণ (ionizing radiation) ব্যবহার করে না।


    এমআরআই দ্বারা কি কি রোগ নির্ণয় করা যায়

    শরীরের বিভিন্ন অংশের সুক্ষ রোগ নির্ণয়ের জন্য বর্তমানে এমআরআই একটি নির্ভরযোগ্য ও পছন্দের পদ্ধতিতে পরিণত হয়েছে। মস্তিষ্ক, মেরুদণ্ড, জয়েন্ট (যেমন, হাঁটু, কাঁধ, কব্জি, এবং গোড়ালি), পেট, স্তন, রক্তনালী, হার্ট এবং শরীরের অন্যান্য অংশের পরীক্ষার জন্য এমআরআই ব্যবহার করা হয়।


    এমআরআই পরীক্ষার জন্য সাধারনত বিশেষ কোন প্রস্তুতির প্রয়োজন হয় না। বেশিরভাগ পরীক্ষার ক্ষেত্রে আপনি স্বাভাবিক খেতে/পান করতে, বা কোনো নির্দিষ্ট ঔষধ চালিয়ে যেতে পারেন। তবে এমআরআই সিস্টেমের শক্তিশালী চুম্বক দ্বারা আকৃষ্ট না হওয়ার জন্য, রোগী কোন প্রকার ধাতব বস্তু (ferromagnetic objects) নিয়ে এমআরআই কক্ষে প্রবেশ করতে পারবে না।


    যেহেতু এমআরআই স্ক্যানার একটি অত্যন্ত শক্তিশালী চুম্বক ব্যবহার করে, তাই যে সকল রোগীর শরীরের ভিতরে medical implant (ইলেক্ট্রনিক অথবা চৌম্বকীয় ধাতব/ Magnetic metals, eg: Iron, Nickel, Cobalt) বস্তু বসানো আছে তাদের এমআরআই স্ক্যান করা চলবে না। এতে মেডিকেল ডিভাইসটি তার স্থান থেকে সরে যেতে পারে/ অস্বাভাবিক উত্তপ্ত হতে পারে/ ছবির মানে হস্তক্ষেপ করতে পারে বা ডিভাইসটির কাজ প্রভাবিত হতে পারে। নিম্নলিখিত মেডিকেল ডিভাইসগুলি উদাহরণ মাত্র যা এমআরআই পরীক্ষা করার সময় স্বাস্থ্য ঝুঁকি বা অন্যান্য সমস্যা তৈরি করতে পারে: ১. পেসমেকার ও অন্যান্য অভ্যন্তরীণ ইলেক্ট্রনিক ডিভাইস; ২. Aneurysm ক্লিপ (মস্তিষ্কের রক্তনালীর অপারেশনে লাগানো); ৩. Cochlear (কান) ইমপ্লান্ট; ৪. শরীরের/চোখের ভিতরে বা কাছাকাছি কোন চৌম্বক ধাতব বস্তু যদি থাকে; যেমন বুলেট, ধাতুর টুকরা ইত্যাদি।


    উচ্চ ক্ষমতা সম্পন্ন (High-field) এমআরআই স্ক্যানার প্রায় ১.৫ মিটার দীর্ঘ একটি সুড়ঙ্গের মত, যা একটি বড় গোলাকার চুম্বক (magnet) দ্বারা বেষ্টিত। রোগী একটি পালঙ্কের (couch) উপরে শুয়ে থাকবে যা স্ক্যানারের মধ্যে ঢুকে যাবে। শরীরের যে অংশের পরীক্ষা করা হচ্ছে তাতে একটি Receiving Device (Radiofrequency coil) লাগানো হয়, যা সে অংশের চতুদিকে বা পিছনে স্থাপন করা হয়। এই receiving device একটি aerial এর মত কাজ করে এবং এটি আপনার শরীর থেকে নির্গত ক্ষুদ্র রেডিও সংকেত (radio signals) সনাক্ত করে। এই স্বতন্ত্র সংকেতগুলি দ্রুত স্থানীয় চৌম্বকীয় ক্ষেত্র পরিবর্তন করে ও বিশেষ কম্পিউটার প্রক্রিয়ার দ্বারা শরীরের যে অংশের পরীক্ষা হয় সে অংশের ছবি উৎপাদন করে।


    যদি সঠিক নিরাপত্তামূলক সতর্কতা নেয়া হয়, তাহলে এমআরআই পরীক্ষা অত্যন্ত নিরাপদ। সাধারণভাবে, এমআরআই পদ্ধতি কোন ব্যথা উৎপাদন এবং কোনো ধরনের স্বল্পমেয়াদী বা দীর্ঘমেয়াদী টিস্যু ক্ষতি করে না। তবে গর্ভাবস্থার প্রথম তিনমাস, এবং যদি বিগত ৮ সপ্তাহের মধ্যে মস্তিষ্ক, কান, চোখ, হৃদয়, বা রক্তনালীর অপারেশন হয়ে থাকে, তবে এমআরআই স্ক্যানিং সাময়িক এড়ানোর চেষ্টা করতে পারেন।


    ট্যাগঃ এমআরআই কি কি রোগ নির্ণয় করে, MRI কি,   MRI কেন করানো হয়, এমআরআই মেশিন (MRI scanner) কিভাবে কাজ করে, এমআরআই দ্বারা কি কি রোগ নির্ণয় করা যায়, কি কারণে এমআরআই পরীক্ষা (MRI scanner) করা হয়, কে বা কারা এমআরআই পরীক্ষা করতে পারবে না, কিভাবে এমআরআই পরীক্ষা করা হয়, এমআরআই পরীক্ষা কতটা নিরাপদ।