হাসান হোসেনের শহীদ কারবালা | শহিদে কারবালা

Sadia
0

 

:হাসান হোসেনের শহীদ কারবালা, শহিদে কারবালা, কারবালার প্রান্তর, কারবালার ইতিহাস, কারবালার গান , কারবালার শিক্ষা,

আসসালামু আলাইকুম, আপনারা সবাই কেমন আছেন? আশা করি সবাই ভাল আছেন । আমিও ভাল আছি আল্লাহর রহমতে । আজকে আপনাদের মাঝে নিয়ে আসলাম,হাসান হোসেনের শহীদ কারবালা, শহিদে কারবালা, কারবালার প্রান্তর, কারবালার ইতিহাস, কারবালার গান , কারবালার শিক্ষা,


হাসান হোসেনের শহীদ কারবালা

ফিরে এসেছে আজ সেই মোহররম --সেই নিখিল-মুসলিমের ক্রন্দন-কাৎরানির দিন। কিন্তু সত্য ক'রে আজ কে কেঁদেছে বলতে পার হে মুসলিম? আজ তোমার চোখে অশ্রু নাই। আজ ক্রন্দন-স্মৃতি তোমার উৎসবে পরিণত! তোমার অশ্রু আজ ভণ্ডামি, ক্রন্দন আজ কৃত্রিম কর্কশ চীৎকার। "হায় হাসান, হায় হোসেন!" ব'লে মিথ্যা বীভৎস চীৎকার ক'রে আর মা ফাতেমার পুত্র-শোকাতুর আত্মাকে পীড়িত ক'রে তুলো না। তোমাদের ঐ যে উদ্দাম বুক-চাপড়ানির বীভৎসতা, সে ব্যর্থ হয়নি ভীরুর দল! সে-আঘাত আল্লার হাবিব হযরত মোহাম্মদ (সা.) বুকে গিয়ে বেজেছে। যাঁরা ধর্মের জন্য সত্যের জন্যে জান কোরবান করেছেন, আজ সেই শহীদ বীরদের জন্য ক্রন্দন-অভিনয় করে আর তাঁদের আত্মার অপমান করো না, নৃশংস অভিনেতার দল! তোমার ধর্ম নাই, অস্তিত্ব নাই, তোমার হাতে শমশের নাই, শির নাঙ্গা, তোমার কোরআন পর-পদদলিত, তোমার গর্দানে গোলামীর জিঞ্জীর, যে শির আল্লার আরশ ছাড়া আর কোথাও নত হয় না, সেই শিরকে জোর করে সেজদা করাচ্ছে অত্যাচারী শক্তি---, আর তুমি করছ আজ সেই শহীদের----ধর্মের জন্য স্বাধীনতার জন্য শহীদের---'মাতমে'র অভিনয়! 

মা ফাতেমা আরশের পায়া ধ'রে কাঁদছেন, স্কন্ধে তাঁর হাসানের বিষ-মাখা নীল পিরান আর হোসেনের খুন-মাখা রক্ত-উত্তরীয়। পুত্র-হারার আকুল ক্রন্দনে খোদার আরশ কেঁপে উঠেছে। হে যুগে-যুগে শোক-অভিনেতা মুসলিমের দল! থামাও -- থামাও মা ফাতেমার ক্রন্দন--- থামাও আল্লার আরশের ভীতি-কম্পন। তোমার স্বাধীনতাকে তোমার সত্যকে তোমার ধর্মকে যে-এজিদের বংশধরেরা লাঞ্ছিত নিপীড়িত করছে, তাদের বিরুদ্ধে তোমাদের ভূ-অবলুণ্ঠিত শির উঁচু হয়ে উঠুক। তোমার ইসলামকে অক্ষতদেহ উন্নত-শির করে রাখ, তোমার স্বাধীনতা তোমার সত্যকে রক্ষা কর, দেখবে পুত্রশোকাতুরা জননী মা ফাতেমার ক্রন্দন থেমে গিয়েছে, আল্লার আরশের কম্পন থেমেছে। ঐ শোন কাশেমের অতৃপ্ত আত্মা ফরিয়াদ করে ফিরছে---"তৃষ্ণা, তৃষ্ণা!" কে দেবে এ-তৃষ্ণাতুর তরুণকে তৃষ্ণার জল? এ-তৃষ্ণা আবে-কাওসারেও মিটবার নয়। এ-কারবালার মরুদগ্ধ পিয়াসী চায় নিখিল-মুসলিম তরুণের রক্ত, ধর্ম আর স্বাধীনতা রক্ষার জন্যে প্রাণ-বলিয়ান। কে আছ অরুণ-খুনের তরুণ শহীদ মুসলিম, কাশেমের এ-তৃষ্ণা এ ক্রন্দন তিক্ততা মেটাবে?ঐ শোন সদ্য স্বামীহারা বালিকা সকীনার মর্মভেদী ক্রন্দন, সে চায় না তার স্বামী কাশেমের প্রাণ, সে চায় ইসলামের স্বাধীনতা রক্ষার জন্যে কাশেমের মত প্রাণ-বলিদান।

 শহিদে কারবালা

মহররম মাস ও আশুরার (১০ই মুহররম) দিনটা মুসলিম জাহানের উপর চেপে বসা রাজা-বাদশাহ শেখ ও আমির শাসিত রাজতান্ত্রিক দেশগুলোর জন্যে একটা চরম বিব্রতকর দিন। রাজতন্ত্রের বিরোধিতা করার কারনে স্বৈরাচারী শাসক ইয়াজিদের সৈন্যদের হাতে ৬১ হিজরীতে এদিন মহানবীর দৌহিত্র বেহেস্তবাসী যুবকদের সর্দার হযরত ইমাম হুসাইন (রাঃ) শাহাদাত বরন করেছিলেন।তৎকালীণ স্বৈরশাসক ইয়াজিদের হুকুমে তার গর্ভনর ওবাইদুল্লাহ জিয়াদের নেতৃত্বে মহানবীর এই দৌহিত্রকে সেদিন ইতিহাসের নির্মমতম এবং পৈশাচিকভাবে হত্যা করা হয়েছিল। ইসলামের ইতিহাসে অনেক নবী রসুলসহ খলিফা হযরত উসমান, হযরত আলীসহ হুসাইনের চাইতেও বেশী মর্যাদাপূর্ণ আরো অনেক বড় বড় মহান ব্যক্তির হত্যাকান্ডের ঘটনা থাকলেও ৬১ হিজরীর কারবালার ঘটনা এতোটাই পৈচাশিক ও নির্মমতম ছিল যে এটা যুগে যুগে কঠিন হৃদয়কেও নাড়া দিয়েছে, এখনো দেয় এবং নিঃসন্দেহ তা কেয়ামত পর্যন্ত জালিমদের বিরুদ্ধে ধিক্কার জানাতে ও ইসলামী শক্তির পক্ষে মুমীনদের উদ্ভূদ্ধ করায় নিয়ামক ভূমিকা পালন করবে।

শহীদ কারবালা

কারবালার সূত্রপাত: ইসলামের ইতিহাসে কারবালার ঘটনা অত্যন্ত হৃদয়বিদারক ও মর্মস্পর্শী।

৬৮০ খ্রিস্টাব্দের ১০ অক্টোবর মোতাবেক ৬১ হিজরির ১০ মহররম ফুরাত নদীর তীরে ইরাকের তৎকালীন রাজধানী কুফার ২৫ মাইল উত্তরে কারবালার মরুপ্রান্তরে ঐতিহাসিক ‘কারবালা’ সংঘটিত হয়েছিল।

ওইদিন কারবালা প্রান্তরে হজরত ইমাম হোসাইন (রা.) নরপিশাচ সিমারের হাতে শাহাদাতবরণ করেন।

 কারবালার প্রান্তর 

 আব্বাস আলামদার (রা:) কারবালার ময়দানে শহিদ হয়েছিলেন।তার মাজার থেকে অনবরত পানি বের হচ্ছে, ১৪০০ বছর পার হবার পরও এখনো মাজার থেকে পানি বের হচ্ছে।  ইরাকের কারবালায় ইমাম হুসাইন (রা:) এর মাজারের থেকে ৩০০মিটারের মত দূরে অবস্থিত।কারবালার প্রান্তর যখন চারদিকে অবরুদ্ধ করে রেখেছে এয়াজিদ বাহিনী, এমনকি ফোরাত নদীও । এদিকে রাসূলে পাকের আওলাদের তাঁবুতে একফোঁটা পানিও নেই । কচি কচি শিশুরা পানির জন্য ছটফট করে যাচ্ছে । ইমাম হুসাইন (র) এর, ছয় মাসের দুধের শিশু আলী আজগরের অবস্থা আরো করুন । পানিতো নেই, এমনকি মায়ের বুকের দুধও শুকিয়ে গেছে পানির অভাবে । শিশু আলী আজগর বাবা মায়ের দিকে করুন দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে একফোঁটা পানির জন্য । এ করুন দৃশ্য দেখে হযরত আব্বাস আর বরদাশত করতে পারলেননা । পানির মশক নিয়ে দুর্বার গতিতে ছুটে গিয়ে এয়াজিদ বাহিনীকে ফাঁকি দিয়ে ফোরাত নদী থেকে পানি ভরে কাঁধে নিলেন । তিনি নিজে কিছুটা পানি পান করতে চেয়েও শিশু আজগরের তৃষ্ঞান্ত চেহারার কথা মনে পড়ায় পানি পান করলেননা ।এসময় তাঁকে হঠাত্ই ঘিরে ফেলল যালিম এয়াজিদের দল । তিনি এয়াজিদের বূহ্য ভেদ করে কিছুদূর অগ্রসর হলে পেছন থেকে অনবরত তীর নিক্ষেপ করতে থাকে এয়াজিদ বাহিনী, আরো কিছুদূর অগ্রসর হওয়ার পর এয়াজিদ বাহিনীর একজন হযরত আব্বাসের ডান হাত কেটে ফেলেন । তিনি ঐ অবস্থায় মশক বাঁচিয়ে বাম হাতে নিলে ঐ যালিম তাঁর বাম হাতও কেটে ফেললেন । তারপরও তিনি মশকটি চরম কষ্টে দাঁতে কামড়ে ধরে ছুটে চললেন । বীর আব্বাসের এই বীরত্ব দেখে যালিম এয়াজিদিদের আর সহ্য হলোনা , তারা এক সাথে ঝাঁপিয়ে পড়ে হযরত আব্বাসকে শহীদ করে দিলেন । এদিকে পানির জন্য ছটফট করতে থাকা দুধের শিশু হযরত আজগরের জন্য পানিও আর হলোনা । আর এইটা হল,কারবালার ময়দানে, পানির পিপাসায় শহীদ গনের মধ্যে অন্যতম,

সেই শহীদ " হযরত আব্বাস আলান্দার (র:)" এর মাজার শরীফ, ( ইরাক )

যার মাজার থেকে, সেই দিন থেকে এখনো পর্যন্ত,,দিবা রাত্রী,অলৌকিক ভাবে পানি বের হচ্ছে ,,, সুবহানাল্লাহ

কারবালার ইতিহাস

রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর অতি আদরের নাতি হুসাইন (রা.) খাতুনে জান্নাত ফাতেমা (রা.)-এর দ্বিতীয় সন্তান। জন্মের পর নবীজি (সা.) তাঁর কানে আজান দেন। রাসুল (সা.) তার নাম রাখেন ‘হুসাইন’।নবীজি (সা.) তাঁকে অত্যাধিক স্নেহ করতেন। বুকে জড়িয়ে চুমু খেতেন আর বলতেন, ‘হুসাইন আমার; আমি হুসাইনের।’ যে ব্যক্তি হাসান-হুসাইনকে ভালোবাসবে, আল্লাহও তাকে ভালবাসবে। 

মুয়াবিয়া (রা.)-এর ইন্তেকালের পর ইসলামী খেলাফতের মসনদে অধিষ্ঠিত হয় তদীয় পুত্র ইয়াজিদ। নবীদৌহিত্র হুসাইন (রা.) ইয়াজিদের হাতে বায়েত গ্রহণ থেকে বিরত থাকেন। তিনি ভেবেছিলেন, খেলাফতের জন্য তিনিই বেশি যোগ্য। আর এতে সন্দেহ নেই যে হুসাইন (রা.) জ্ঞান, গরিমা, আলম, আখলাক সর্বদিক থেকে ইয়াজিদের চেয়ে অগ্রগামী ছিলেন। 

কুফাবাসী হুসাইন (রা.)-এর বায়েত গ্রহণ না করার বিষয়টি জানতে পেরে তাঁর কাছে চিঠি প্রেরণ করতে থাকে যে ‘আপনি এখানে চলে আসুন। আমরা আপনার হাতে বায়েত গ্রহণ করব।’ পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণের জন্য হুসাইন (রা.) চাচাতো ভাই মুসলিম বিন আকিলকে কুফায় প্রেরণ করেন। তিনি সেখানে পৌঁছে হুসাইন (রা.)-এর পক্ষ থেকে বায়েত গ্রহণ শুরু করেন। 

এবং পত্র মারফত তাঁকে কুফায় আগমনের আমন্ত্রণ জানান। সে অনুযায়ী হুসাইন (রা.) ৬০ হিজরির ৯ জিলহজ মক্কা থেকে কুফার উদ্দেশে রওনা করেন। ততক্ষণে কুফার পরিস্থিতি পাল্টে গেছে। কুফার নতুন গভর্নর উবায়দুলাহ বিন জিয়াদ হজরত হুসাইন (রা.)-এর যাত্রা প্রতিহত করার জন্য হুর বিন ইয়াজিদের নেতৃত্বে এক দল সৈন্য প্রেরণ করে। হুসাইন (রা.) চলতে চলতে কারবালা নামক স্থানে পৌঁছে বাধাপ্রাপ্ত হন। তিনি অস্ফুটচিত্তে বললেন, ‘হাজা কারবুন ওয়া বালাউন’ এটা সংকটময়, বিপদসঙ্কুল স্থান। তিনি সঙ্গীদের এখানেই তাঁবু গাড়তে নির্দেশ দেন। হুর বিন জিয়াদ হুসাইন (রা.)কে বললেন, ‘আপনি কুফা ছাড়া যেদিকে ইচ্ছা যেতে পারেন। আমাকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, আপনাকে যেন কিছুতেই কুফা প্রবেশ করতে না দিই।’ কুফার গভর্নর ইবনে জিয়াদ সীমারকে নতুন সেনাপতি নিয়োগ করে নির্দেশ দিল, হুসাইনকে ইয়াজিদের হাতে বায়েত গ্রহণে বাধ্য করবে নতুবা তাঁর শির আমার সামনে উপস্থিত করবে। সীমার কারবালায় পৌঁছে গনর্ভরের নির্দেশ শুনালে হুসাইন (রা.) তাকে তিনটি প্রস্তাব দেন। ‘১. আমাকে মদিনায় যেতে দাও। ২. সরাসরি ইয়াজিদের কাছে পাঠিয়ে দাও। ৩. কোনো ইসলামী অঞ্চলের সীমান্তের দিকে চলে যেতে দাও।’ কিন্তু ইয়াজিদের সৈন্যরা কোনো প্রস্তাবই মানতে রাজি হলো না। তারা ইবনে জিয়াদের সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করতেই দৃঢ়তা দেখাল। অবশেষে বেধে যায় যুদ্ধ। সৈন্ সংখ্যার দিক থেকে হজরত হুসাইন (রা.)-এর সঙ্গীজ ছিলেন ইয়াজিদের বাহিনী থেকে  নেহাত অপ্রতুল। হুসাইন (রা.)-এর  সব সঙ্গী বীরত্বের সঙ্গে যুদ্ধ করে শাহাদাত বরণ করেন। সবার শেষে হুসাইন (রা.) বীরবিক্রমে যুদ্ধ চালিয়ে যান। কিন্তু ইয়াজিদ বাহিনীর সম্মিলিত আক্রমণে তিনিও শাহাদাতের সুধা পান করেন। 


 কারবালার গান 

কারবালা ইসলামের ইতিহাসে একটি মর্মান্তিক ঘটনা যেখানে ইমাম হোসাইন নির্মমভাবে শহীদ হন।কারবালা নিয়ে বিভিন্ন গান নির্মিত হয়েছে আপনারা হয়তো গানগুলো খুঁজছেন আমরা আমাদের পোস্টে গানগুলো দিয়েছি আশা করি আপনারা অনেক উপকৃত হবেন।


কারবালার শিক্ষা 

নবীজী (সা.) কে হুসাইন (রা.) শাহাদতের পূর্বাভাস দেয়া হয়েছিল।আয়শা (রা.) বর্ণনা করেন, রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘যে ভূমিতে হুসাইনকে হত্যা করা হবে জিবরাঈল আমাকে সে স্থানের মাটি দেখিয়েছেন। যে ব্যক্তি হুসাইনের রক্ত ঝরাবে সে মহান আল্লাহর রোষানলে পতিত হবে। হে আয়শা, এ ঘটনা আমাকে অত্যন্ত ব্যথিত করে। আমার উম্মতের মধ্যে কে সেই ব্যক্তি যে আমার হুসাইনকে হত্যা করবে?

কারবালায় মূলত বাতিলের পরাজয় এবং সত্য ও হকপন্থীদের বিজয় সূচিত হয়েছে।এ ঘটনা আমাদের শিক্ষা দেয় আল্লাহর সন্তুষ্টি ও দ্বিন প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে সব কাজে ত্যাগ এবং কোরবানির জন্য প্রস্তুত থাকতে হবে। সুযোগ থাকার পরও যেমন হুসাইন (রা)-এর সাথীরা তাঁকে ছেড়ে না গিয়ে তাঁর সঙ্গে একাত্মতা ঘোষণা করে সঙ্গে থেকেছেন, তেমনি আমাদেরও উচিত সত্যপন্থীদের সমর্থন, সহযোগিতা ও সঙ্গে থাকা

Tag:হাসান হোসেনের শহীদ কারবালা, শহিদে কারবালা, কারবালার প্রান্তর, কারবালার ইতিহাস, কারবালার গান , কারবালার শিক্ষা,



Post a Comment

0Comments

প্রতিদিন ১০০-২০০ টাকা ইনকাম করতে চাইলে এখানে কমেন্ট করে জানান। আমরা আপনায় কাজে নিয়ে নেবো। ধন্যবাদ

Post a Comment (0)