মা মেয়ে নিয়ে কবিতা | মেয়ে বন্ধুর জন্য কবিতা | নষ্ট মেয়ে কবিতা তসলিমা নাসরিন
মেয়ে কবিতা
মেয়েকে নিয়ে কবিতা
আমার চোখে দুনিয়ার সব মেয়ে সুন্দর,
শুধু তুই বাদে।
আমি কুৎসিত নাকি,
যে আমাকে তোর সুন্দর বলতে ইচ্ছে করে না?
হুম তুই কুৎসিত,
তোর কোনো চেহেরা হলো।
কেমন মরা মরা চাওনি তোর,
সর্বদা কপালে বাঁকা টিপ পড়বি।
যে মেয়ে বাঁকা টিপ পড়ে সে কি আর সুন্দর হয়,
তুই বল?
দেখ পরশ তুই এভাবে আমাকে বলতে পারিস না,
আমি মোটেও বাঁকা টিপ পড়ি না,
কই বাঁকা টিপ পড়লাম?
পরশ অবুকের কপালের সামনে হাতটা নিয়ে টিপ টা খুলে ফেললো,
আস্তে করে কপালে চুমু দিয়ে,
টিপটা ঠিক আগের জায়গায় রেখে বললো,
এবার ঠিক আছে।
অবুক লাজুক হাসি দিয়ে বললো,
তুই কি করলি এটা?
আমি না কুৎসিত দেখতে,
তবে কেন আমায় ছুঁয়ে দেখলি?
পরশ অবুকের দিকে চেয়ে হেসে দিলো।
বললো,
তখন তুই কুৎসিত ছিলি।
এখন আমি স্পর্শ করে দিছি,
এখন তুই পৃথিবীর সবচেয়ে সুন্দর।
তোর মতো সুন্দর কেউ নেয়।
অবুক অভিমান করে উঠে দাঁড়ালো,
পেছন থেকে পরশ আবুকের হাতটা ধরে টেনে বসালো।
অবুকের কাছ ঘেঁষে বসে,
ফিসফিস করে বললো,
তুই সর্বদা টিপ পড়ে আসবি না,
আমি চাই না তোকে কেউ আমার থেকে বেশি চেয়ে চেয়ে দেখুক।
আমার যে হিংসে হয়।
আমি সেই মেয়ে কবিতা
" সাধারণ মেয়ে "
আমি অন্তঃপুরের মেয়ে,
চিনবে না আমাকে।
তোমার শেষ গল্পের বইটি পড়েছি,
শরৎবাবু,
“বাসি ফুলের মালা’।
তোমার নায়িকা এলোকেশীর মরণ-
দশা ধরেছিল
পঁয়ত্রিশ বছর বয়সে।
পঁচিশ বছর বয়সের সঙ্গে ছিল তার রেশারেশি,
দেখলেম তুমি মহদাশয় বটে–
জিতিয়ে দিলে তাকে।।
নিজের কথা বলি।
বয়স আমার অল্প।
একজনের মন ছুঁয়েছিল
আমার এই কাঁচা বয়সের মায়া।
তাই জেনে পুলক লাগত আমার দেহে–
ভুলে গিয়েছিলেম, অত্যন্ত সাধারণ
মেয়ে আমি।
আমার মতো এমন আছে হাজার হাজার মেয়ে,
অল্পবয়সের মন্ত্র তাদের যৌবনে।।
তোমাকে দোহাই দিই,
একটি সাধারণ মেয়ের গল্প লেখো তুমি।
বড়ো দুঃখ তার।
তারও স্বভাবের গভীরে
অসাধারণ যদি কিছু
তলিয়ে থাকে কোথাও
কেমন করে প্রমাণ করবে সে,
এমন কজন মেলে যারা তা ধরতে পারে!
কাঁচা বয়সের জাদু লাগে ওদের চোখে,
মন যায় না সত্যের খোঁজে,
আমরা বিকিয়ে যাই মরীচিকার দামে।।
কথাটা কেন উঠল তা বলি।
মনে করো তার নাম নরেশ।
সে বলেছিল, কেউ তার
চোখে পড়ে নি আমার মতো।
এতবড়ো কথাটা বিশ্বাস করব যে সাহস হয় না,
না করব যে এমন জোর কই।।
একদিন সে গেল বিলেতে।
চিঠিপত্র পাই কখনো বা।
মনে মনে ভাবি, রাম রাম,
এত মেয়েও আছে সে দেশে,
এত তাদের ঠেলাঠেলি ভিড়!
আর, তারা কি সবাই অসামান্য–
এত বুদ্ধি, এত উজ্জ্বলতা!
আর, তারা সবাই কি আবিষ্কার
করেছে এক নরেশ সেনকে
স্বদেশে যার পরিচয় চাপা ছিল দশের মধ্যে।।
গেল মেলের চিঠিতে লিখেছে,
লিজির সঙ্গে গিয়েছিল
সমুদ্রে নাইতে–
(বাঙালি কবির কবিতা ক’ লাইন
দিয়েছে তুলে,
সেই যেখানে উর্বশী উঠছে সমুদ্র
থেকে)
তার পরে বালির ‘পরে বসল
পাশাপাশি–
সামনে দুলছে নীল সমুদ্রের ঢেউ,
আকাশে ছড়ানো নির্মল সূর্যালোক।
লিজি তাকে খুব আস্তে আস্তে বললে,
“এই সেদিন তুমি এসেছ, দুদিন
পরে যাবে চ'লে---
ঝিনুকের দুটি খোলা,
মাঝখানটুকু ভরা থাক্
একটি নিরেট অশ্রুবিন্দু দিয়ে,
দুর্লভ, মূল্যহীন।’
কথা বলবার কী অসামান্য ভঙ্গি!
সেইসঙ্গে নরেশ লিখেছে,
“কথাগুলি যদি বানানো হয় দোষ কী,
কিন্তু চমৎকার–
হীরে-বসানো সোনার ফুল কি সত্য, তবুও
কি সত্য নয় ? ’
বুঝতেই পারছ একটা তুলনার সংকেত ওর চিঠিতে অদৃশ্য
কাঁটার মতো আমার বুকের
কাছে বিঁধিয়ে দিয়ে জানায়–
আমি অত্যন্ত সাধারণ মেয়ে।
মূল্যবানকে পুরো মূল্য চুকিয়ে দিই
এমন ধন নেই আমার হাতে।
ওগো, নাহয় তাই হল,
নাহয় ঋণীই রইলেম চিরজীবন।।
পায়ে পড়ি তোমার, একটা গল্প
লেখো তুমি শরৎবাবু,
নিতান্তই সাধারণ মেয়ের গল্প–
যে দুর্ভাগিনীকে দূরের
থেকে পাল্লা দিতে হয়
অন্তত পাঁচ-সাতজন অসামান্যার সঙ্গে–
অর্থাৎ, সপ্তরথিনীর মার।
বুঝে নিয়েছি আমার কপাল ভেঙেছে,
হার হয়েছে আমার।
কিন্তু তুমি যার কথা লিখবে
তাকে জিতিয়ে দিয়ো আমার হয়ে,
পড়তে পড়তে বুক যেন ওঠে ফুলে।
ফুলচন্দন পড়ুক তোমার কলমের মুখে।।
তাকে নাম দিয়ো মালতী।
ওই নামটা আমার।
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর,,
মেয়ে বন্ধুর জন্য কবিতা
বন্ধু
রহিম আহাম্মেদ ইমন( বাবু)
হৃদয় হীনা পাষান বন্ধু ছলনাময়ী নারী
কখনো ভাবিনি বন্ধুর সাথে করবো আমি আড়ি।
জনমে জনমে থাকিবে মরে দিয়েছিলে এই কথা
সেই তুমি আজ অন্যের বুকে যতনে রাখিছো মাথা।
বর সেজে আমি বুধ বেসে তুমি, করিতাম কতো খেলা
বুঝিনি তখন নিয়তির টানে করে যাবে অবহেলা।
বন্ধু নাকি শত্রু তুমি, বুঝি নাতো প্রিয়তমা
দূরে গেলেও তোমার জন্য ভালোবাসা আছে জমা।
তুমি ছিলে সহজ সরল সচ্ছ একটা মেয়ে
ভালোই লাগতো তোমার মতো সতেজ বন্ধু পেয়ে।
অন্তর নিয়ে বিকিকিনি করে কিবা হয়েছে লাভ
যেখানে যে ঘাটে যারে পেয়েছো,তার সাথেই করেছো ভাব।
এই তুমি আর সেই তুমি, আমার তুমি নাই
তাই ফাগুন এলেও মন বাগানে ফুল তো ফোটে নাই।
ইমন বাবু ভেবে বলে একি ভীষন দা ই
বন্ধু বি নে আমার জীবন শুন্য পড়ে রই।
মা মেয়ে নিয়ে কবিতা
চাঁদ সূর্য (গীতি কবিতা)
সেখ বেনজীর আহমেদ
আমি কাকে বলি সুন্দর, মা না মেয়ে।
কে আছো, কে যাও আমার এ গান গেয়ে।।
কোন গ্রামের মেয়ে তুমি, কোন গ্রামের মা
কে বলবে আমায় সে ঠিকানা।
চাঁদ সূর্য কেমন করে উঠল গাঁয়ে।।
ওকে করি আশির্বাদ, তোমার জন্য ভালোবাসা
কেন হবে অপবাদ, কেন হবে সব দূরাশা।
সব মলিনতা যাক জ্যোৎস্না রাতে ধুয়ে।।
সূর্যের হাসি যেন চাঁদের মুখে
থাকো থাকো সকলে এক সাথে সুখে দুঃখে।
আমি রচি আমার এ গান তোমাদের নিয়ে।।
নষ্ট মেয়ে কবিতা তসলিমা নাসরিন
নষ্ট মেয়ে
- তসলিমা নাসরিন---কিছুক্ষণ থাকো
ওরা কারো কথায় কান দেয় না, যা ইচ্ছে তাই করে,
কারও আদেশ উপদেশের তোয়াককা করে না,
গলা ফাটিয়ে হাসে, চেঁচায়, যাকে তাকে ধমক দেয়
নীতি রীতির বালাই নেই, সবাই একদিকে যায়, ওরা যায় উল্টোদিকে
একদম পাগল!
কাউকে পছন্দ হচ্ছে তো চুমু খাচ্ছে, পছন্দ হচ্ছে না, লাত্থি দিচ্ছে
লোকে কি বলবে না বলবে তার দিকে মোটেও তাকাচ্ছে না।
ওদের দিকে লোকে থুতু ছোড়ে, পেচ্ছাব করে
ওদের ছায়াও কেউ মাড়ায় না, ভদ্রলোকেরা তো দৌড়ে পালায়।
নষ্ট মেয়েদের মাথায় ঘিলু বলতেই নেই, সমুদ্রে যাচ্ছে, অথচ ঝড় হয় না তুফান হয়
একবারও আকাশটা দেখে নিচ্ছে না।
ওরা এরকমই, কিছুকে পরোয়া করে না
গভীর অরণ্যে ঢুকে যাচ্ছে রাতবিরেতে, চাঁদের দিকেও দিব্যি হেঁটে যাচ্ছে!
আহ, আমার যে কী ভীষণ ইচ্ছে করে নষ্ট মেয়ে হতে।
Tag:মেয়ে কবিতা, আমি সেই মেয়ে কবিতা, মেয়ে বন্ধুর জন্য কবিতা, মেয়েকে নিয়ে কবিতা , মা মেয়ে নিয়ে কবিতা , নষ্ট মেয়ে কবিতা তসলিমা নাসরিন