আসাদ চৌধুরীর কবিতা সমগ্র | Ashad chaudhari poem

Educational help
0
আসাদ চৌধুরী শ্রেষ্ঠ কবিতা, আসাদ চৌধুরীর কবিতা, আসাদ চৌধুরীর কবিতা সমগ্র, রিপোর্ট ১৯৭১ কবিতা, রিপোর্ট ১৯৭১ আসাদ চৌধুরীর কবিতা, বারবারা বিডলারকে কবিতা, বারবারা বিডলারকে আসাদ চৌধুরীর কবিতা, শহীদদের প্রতি কবিতা, শহীদদের প্রতি আসাদ চৌধুরীর কবিতা,

    আসাদ চৌধুরী শ্রেষ্ঠ কবিতা | আসাদ চৌধুরীর কবিতা

     টাইম অফ বিডি এর পক্ষ থেকে আপনাদের সবাইকে জানাই আসসালামু আলাইকুম ওয়ারাহমাতুল্লাহি বারকাতুহু । প্রিয় পাঠকবৃন্দ কেমন আছেন আপনারা সবাই ? আশা করছি আপনারা সবাই ভাল আছেন। আলহামদুলিল্লাহ আপনাদের দোয়ায় আমিও ভাল আছি। আজকে আমরা আপনাদের মাঝে নিয়ে আসলাম আসাদ চৌধুরীর শ্রেষ্ট কবিতাআসাদ চৌধুরীর কবিতা, । আশা করি আপনাদের অনেক ভালো লাগবে।

    রিপোর্ট ১৯৭১ কবিতা | রিপোর্ট ১৯৭১ আসাদ চৌধুরীর কবিতা

    প্রাচ্যের গানের মতো শোকাহত, কম্পিত, চঞ্চল

    বেগবতী তটিনীর মতো স্নিগ্ধ, মনোরম

    আমাদের নারীদের কথা বলি, শোনো।

    এ-সব রহস্যময়ী রমণীরা পুরুষের কণ্ঠস্বর শুনে

    বৃক্ষের আড়ালে স’রে যায়-

    বেড়ার ফোঁকড় দিয়ে নিজের রন্ধনে

    তৃপ্ত অতিথির প্রসন্ন ভোজন দেখে

    শুধু মুখ টিপে হাসে।

    প্রথম পোয়াতী লজ্জায় অনন্ত হ’য়ে

    কোঁচরে ভরেন অনুজের সংগৃহীত কাঁচা আম, পেয়ারা, চালিতা-

    সূর্য্যকেও পর্দা করে এ-সব রমণী।

    অথচ যোহরা ছিলো নির্মম শিকার

    সকৃতজ্ঞ লম্পটেরা

    সঙ্গীনের সুতীব্র চুম্বন গেঁথে গেছে-

    আমি তার সুরকার- তার রক্তে স্বরলিপি লিখি।

    মরিয়ম, যীশুর জননী নয় অবুঝ কিশোরী

    গরীবের চৌমুহনী বেথেলহেম নয়

    মগরেবের নামাজের শেষে মায়ে-ঝিয়ে

    খোদার কালামে শান্তি খুঁজেছিলো,

    অস্ফুট গোলাপ-কলি লহুতে রঞ্জিত হ’লে

    কার কী বা আসে যায়।

    বিপন্ন বিস্ময়ে কোরানের বাঁকা-বাঁকা পবিত্র হরফ

    বোবা হ’য়ে চেয়ে দ্যাখে লম্পটেরক্ষুধা,

    মায়ের স্নেহার্ত দেহ ঢেকে রাখে পশুদের পাপ।

    পোষা বেড়ালের বাচ্চা চেয়ে-চেয়ে নিবিড় আদর

    সারারাত কেঁদেছিলো তাহাদের লাশের ওপর।

    এদেশে যে ঈশ্বর আছেন তিনি নাকি

    অন্ধ আর বোবা

    এই ব’লে তিন কোটি মহিলারা বেচারাকে গালাগালি করে।

    জনাব ফ্রয়েড,

    এমন কি খোয়াবেও প্রেমিকারা আসে না সহজ পায়ে চপল চরণে।

    জনাব ফ্রয়েড, মহিলারা

    কামুকের, প্রেমিকের, শৃঙ্গারের সংজ্ঞা ভুলে গ্যাছে।

    রকেটের প্রেমে পড়ে ঝ’রে গ্যাছে

    ভিক্টোরিয়া পার্কের গীর্জার ঘড়ি,

    মুসল্লীর সেজদায় আনত মাথা

    নিরপেক্ষ বুলেটের অন্তিম আজানে স্থবির হয়েছে।

    বুদ্ধের ক্ষমার মূর্তি ভাঁড়ের মতন

    ভ্যাবাচেকা খেয়ে প’ড়ে আছে, তাঁর

    মাথার ওপরে

    এক ডজন শকুন মৈত্রী মৈত্রী ক’রে

    হয়তো বা উঠেছিলো কেঁদে।


    সংকলিত

    বারবারা বিডলারকে কবিতা | বারবারা বিডলারকে আসাদ চৌধুরীর কবিতা

    বারবারা

    ভিয়েতনামের উপর তোমার অনুভূতির তরজমা আমি পড়েছি-

    তোমার হৃদয়ের সুবাতাস

    আমার গিলে-করা পাঞ্জাবিকে মিছিলে নামিয়েছিল

    প্রাচ্যের নির্যাতিত মানুষগুলোরজন্যে অসীম দরদ ছিল সে লেখায়

    আমি তোমার ওই একটি লেখাই পড়েছি

    আশীর্বাদ করেছিলাম, তোমার সোনার দোয়াত কলম হোক।

    আমার বড়ো জানতে ইচ্ছে করে বারবারা, তুমি এখন কেমন আছ ?

    নিশ্চয়ই তুমি ডেট করতে শিখে গেছ।

    গাউনের রঙ আর হ্যাট নিয়ে কি চায়ের টেবিলে মার সঙ্গে ঝগড়া হয়?

    অনভ্যস্ত ব্রেসিয়ারের নিচে তোমার হৃদয়কে কি চিরদিন ঢেকে দিলে।

    আমার ভীষণ জানতে ইচ্ছে করে বারবারা।

    তোমাদের কাগজে নিশ্চয়ই ইয়াহিয়া খাঁর ছবি ছাপা হয়-

    বিবেকের বোতামগুলো খুলে হৃদয় দিয়ে দেখো

    ওটা একটা জল্লাদের ছবি

    পনেরো লক্ষ নিরস্ত্র লোককে ঠাণ্ডা মাথায় সে হ্ত্যা করেছে

    মানুষের কষ্টার্জিত সভ্যতাকে সেগলা টিপে হত্যা করেছে

    অদ্ভুত জাদুকরকে দেখ

    বিংশ শতাব্দীকে সে কৌশলে টেনে হিঁচড়ে মধ্যযুগে নিয়ে যায়।

    দেশলাইয়ের বাক্সর মতো সহজে ভাঙে

    গ্রন্থাগার, উপাসনালয়, ছাত্রাবাস,

    মানুষের সাধ্যমত ঘরবাড়ি

    সাত কোটি মানুষের আকাঙ্ক্ষিত স্বপ্নের ফুলকে সে বুট জুতোয়

    থেতলে দেয়।

    টু উইমেন ছবিটা দেখেছ বারবারা ?

    গির্জার ধর্ষিতা সোফিয়া লোরেনকেদেখে নিশ্চয়ই কেঁদেছিলে

    আমি কাঁদিনি, বুকটা শুধু খাঁ খাঁ করেছিল-

    সোফিয়া লোরেনকে পাঠিয়ে দিয়ো বাংলাদেশে

    তিরিশ হাজার রমণীর নির্মম অভিজ্ঞতা শুনে

    তিনি শিউরে উঠবেন।

    অভিধান থেকে নয়

    আশি লক্ষ শরণার্থীর কাছে জেনে নাও, নির্বাসনের অর্থ কী ?

    জর্জ ওয়াশিংটনের ছবিওলা ডাকটিকেটে খোঁজ থাকবে না স্বাধীনতার

    আমাদের মুক্তিযুদ্ধের কাছে এসো-

    সাধু অ্যাবের মর্মর মূর্তিকে গণতন্ত্র আর মানবতার জন্য

    মালির ঘামে ভেজা ফুলের তোড়া দিয়োনা-

    নিহত লোকটি লজ্জায় ঘৃণায় আবার আত্মহত্যা করবে।

    বারবারা এসো,

    রবিশঙ্করের সুরে সুরে মুমূর্ষু মানবতাকে গাই

    বিবেকের জংধরা দরোজায় প্রবল করাঘাত করি

    অন্যায়ের বিপুল হিমালয় দেখে এসে ক্রুদ্ধ হই, সংগঠিত হই

    জল্লাদের শাণিত অস্ত্র

    সভ্যতার নির্মল পুষ্পকে আহত করার পূর্বে,

    দর্শন ও সাহিত্যকে হত্যা করার পূর্বে

    এসো বারবারা বজ্র হয়ে বিদ্ধ করি তাকে।


    সংকলিত

    শহীদদের প্রতি কবিতা | শহীদদের প্রতি আসাদ চৌধুরীর কবিতা

    তোমাদের যা বলার ছিল

    বলছে কি তা বাংলাদেশ ?

    শেষ কথাটি সুখের ছিল ?

    ঘৃণার ছিল ?

    নাকি ক্রোধের,

    প্রতিশোধের,

    কোনটা ছিল ?

    নাকি কোনো সুখের

    নাকি মনে তৃপ্তি ছিল

    এই যাওয়াটাই সুখের।

    তোমরা গেলে, বাতাস যেমন যায়

    গভীর নদী যেমন বাঁকা

    স্রোতটিকে লুকায়

    যেমন পাখির ডানার ঝলক

    গগনে মিলায়।

    সাঁঝে যখন কোকিল ডাকে

    কারনিসে কি ধুসর শাখে

    বারুদেরই গন্ধস্মৃতি

    ভুবন ফেলে ছেয়ে

    ফুলের গন্ধ পরাজিত

    স্লোগান আসে ধেয়ে।

    তোমার যা বলার ছিল

    বলছে কি তা বাংলাদেশ ?


    সংকলিত


    Tag: আসাদ চৌধুরী শ্রেষ্ঠ কবিতা, আসাদ চৌধুরীর কবিতা, আসাদ চৌধুরীর কবিতা সমগ্র, রিপোর্ট ১৯৭১ কবিতা, রিপোর্ট ১৯৭১ আসাদ চৌধুরীর কবিতা, বারবারা বিডলারকে কবিতা, বারবারা বিডলারকে আসাদ চৌধুরীর কবিতা, শহীদদের প্রতি কবিতা, শহীদদের প্রতি আসাদ চৌধুরীর কবিতা, 

    Post a Comment

    0Comments

    প্রতিদিন ১০০-২০০ টাকা ইনকাম করতে চাইলে এখানে কমেন্ট করে জানান। আমরা আপনায় কাজে নিয়ে নেবো। ধন্যবাদ

    Post a Comment (0)