সুকুমার রায়ের কবিতা সমগ্র | Sukumar Roy poem

Educational help
0

 

সুকুমার রায়ের শ্রেষ্ঠ কবিতা, সুকুমার রায়ের কবিতা, সুকুমার রায়ের কবিতা সমগ্র, ষোল আনাই মিছে কবিতা, ষোল আনাই মিছে সুকুমার রায়ের কবিতা, সৎপাত্র কবিতা, সৎপাত্র সুকুমার রায়ের কবিতা, ভূতুড়ে খেলা কবিতা, ভুতুড়ে খেলা সুকুমার রায়ের কবিতা, মূর্খ মাছি কবিতা, মূর্খ মাছি সুকুমার রায়ের কবিতা,

    সুকুমার রায়ের শ্রেষ্ঠ কবিতা | সুকুমার রায়ের কবিতা

    টাইম অফ বিডি এর পক্ষ থেকে আপনাদের সবাইকে জানাই আসসালামু আলাইকুম ওয়ারাহমাতুল্লাহি বারকাতুহু । প্রিয় পাঠকবৃন্দ কেমন আছেন আপনারা সবাই ? আশা করছি আপনারা সবাই ভাল আছেন। আলহামদুলিল্লাহ আপনাদের দোয়ায় আমিও ভাল আছি। আজকে আমরা আপনাদের মাঝে নিয়ে আসলাম সুকুমার রায়ের শ্রেষ্ট কবিতাসুকুমার রায়ের কবিতা, । আশা করি আপনাদের অনেক ভালো লাগবে।

    ষোল আনাই মিছে কবিতা | ষোল আনাই মিছে সুকুমার রায়ের কবিতা


    বিদ্যে বোঝাই বাবুমশাই চড়ি সখের বোটে, 

    মাঝিরে কন, ''বলতে পারিস সূর্যি কেন ওঠে? 

    চাঁদটা কেন বাড়ে কমে? জোয়ার কেন আসে?'' 

    বৃদ্ধ মাঝি অবাক হয়ে ফ্যালফ্যালিয়ে হাসে। 

    বাবু বলেন, ''সারা জীবন মরলিরে তুই খাটি, 

    জ্ঞান বিনা তোর জীবনটা যে চারি আনাই মাটি।'' 


    খানিক বাদে কহেন বাবু, ''বলতো দেখি ভেবে 

    নদীর ধারা কেমনে আসে পাহাড় থেকে নেবে? 

    বলতো কেন লবণ পোরা সাগর ভরা পানি?'' 

    মাঝি সে কয়, ''আরে মশাই অত কি আর জানি?'' 

    বাবু বলেন, ''এই বয়সে জানিসনেও তা কি 

    জীবনটা তোর নেহাৎ খেলো, অষ্ট আনাই ফাঁকি!'' 


    আবার ভেবে কহেন বাবু, '' বলতো ওরে বুড়ো, 

    কেন এমন নীল দেখা যায় আকাশের ঐ চুড়ো? 

    বলতো দেখি সূর্য চাঁদে গ্রহণ লাগে কেন?'' 

    বৃদ্ধ বলে, ''আমায় কেন লজ্জা দেছেন হেন?'' 

    বাবু বলেন, ''বলব কি আর বলব তোরে কি তা,- 

    দেখছি এখন জীবনটা তোর বারো আনাই বৃথা।'' 


    খানিক বাদে ঝড় উঠেছে, ঢেউ উঠেছে ফুলে, 

    বাবু দেখেন, নৌকাখানি ডুবলো বুঝি দুলে! 

    মাঝিরে কন, '' একি আপদ! ওরে ও ভাই মাঝি, 

    ডুবলো নাকি নৌকা এবার? মরব নাকি আজি?'' 

    মাঝি শুধায়, ''সাঁতার জানো?''- মাথা নাড়েন বাবু, 

    মূর্খ মাঝি বলে, ''মশাই, এখন কেন কাবু? 

    বাঁচলে শেষে আমার কথা হিসেব করো পিছে, 

    তোমার দেখি জীবন খানা ষোল আনাই মিছে!''

    সংকলিত

    সৎপাত্র কবিতা | সৎপাত্র সুকুমার রায়ের কবিতা

    শুনতে পেলাম পোস্তা গিয়ে— 

    তোমার নাকি মেয়ের বিয়ে ? 

    গঙ্গারামকে পাত্র পেলে ? 

    জানতে চাও সে কেমন ছেলে ? 

    মন্দ নয় সে পাত্র ভালো 

    রঙ যদিও বেজায় কালো ; 

    তার উপরে মুখের গঠন 

    অনেকটা ঠিক পেঁচার মতন ; 

    বিদ্যে বুদ্ধি ? বলছি মশাই— 

    ধন্যি ছেলের অধ্যবসায় ! 

    উনিশটিবার ম্যাট্রিকে সে 

    ঘায়েল হয়ে থামল শেষে । 

    বিষয় আশয় ? গরীব বেজায়— 

    কষ্টে–সৃষ্টে দিন চলে যায় । 


    মানুষ তো নয় ভাইগুলো তার— 

    একটা পাগল একটা গোঁয়ার ; 

    আরেকটি সে তৈরী ছেলে, 

    জাল করে নোট গেছেন জেলে । 

    কনিষ্ঠটি তবলা বাজায় 

    যাত্রাদলে পাঁচ টাকা পায় । 

    গঙ্গারাম তো কেবল ভোগে 

    পিলের জ্বর আর পাণ্ডু রোগে । 

    কিন্তু তারা উচ্চ ঘর, 

    কংসরাজের বংশধর ! 

    শ্যাম লাহিড়ী বনগ্রামের 

    কি যেন হয় গঙ্গারামের ।— 

    যহোক, এবার পাত্র পেলে, 

    এমন কি আর মন্দ ছেলে ?

    সংকলিত


    ভূতুড়ে খেলা কবিতা | ভুতুড়ে খেলা সুকুমার রায়ের কবিতা

    পরশু রাতে পষ্ট চোখে দেখনু বিনা চশমাতে, 

    পান্তভূতের জ্যান্ত ছানা করছে খেলা জোছনাতে৷ 

    কচ্ছে খেলা মায়ের কোলে হাত পা নেড়ে উল্লাসে, 

    আহলাদেতে ধুপধুপিয়ে কচ্ছে কেমন হল্লা সে৷ 

    শুনতে পেলাম ভূতের মায়ের মুচকি হাসি কট্কটে— 

    দেখছে নেড়ে ঝুন্টি ধ'রে বাচ্চা কেমন চট্পটে৷ 

    উঠছে তাদের হাসির হানা কাষ্ঠ সুরে ডাক ছেড়ে, 

    খ্যাঁশ্ খ্যাঁশানি শব্দে যেন করাত দিয়ে কাঠ চেরে! 

    যেমন খুশি মারছে ঘুঁষি, দিচ্ছে কষে কানমলা, 

    আদর করে আছাড় মেরে শূন্যে ঝোলে চ্যাং দোলা৷ 

    বলছে আবার, "আয়রে আমার নোংরামুখো সুঁটকো রে, 

    দেখনা ফিরে প্যাখনা ধরে হুতোম–হাসি মুখ করে! 


    ওরে আমার বাঁদর–নাচন আদর–গেলা কোঁত্কা রে! 

    অন্ধবনের গন্ধ–গোকুল, ওরে আমার হোঁত্কা রে! 

    ওরে আমার বাদলা রোদে জষ্টি মাসের বিষ্টি রে, 

    ওরে আমার হামান–ছেঁচা যষ্টিমধুর মিষ্টি রে৷ 

    ওরে আমার রান্না হাঁড়ির কান্না হাসির ফোড়নদার, 

    ওরে আমার জোছনা হাওয়ার স্বপ্নঘোড়ার চড়নদার৷ 

    ওরে আমার গোবরা গণেশ ময়দাঠাসা নাদুস্ রে, 

    ছিঁচকাঁদুনে ফোক্লা মানিক, ফের যদি তুই কাঁদিস রে—" 

    এই না ব'লে যেই মেরেছে কাদার চাপটি ফট্ ক'রে, 

    কোথায় বা কি, ভূতের ফাঁকি মিলিয়ে গেল চট্ ক'রে!

    সংকলিত

    মূর্খ মাছি কবিতা | মূর্খ মাছি সুকুমার রায়ের কবিতা

    মাকড়সা 

    সান্-বাঁধা মোর আঙিনাতে 

    জাল বুনেছি কালকে রাতে, 

    ঝুল ঝেড়ে সব সাফ করেছি বাসা। 

    আয় না মাছি আমার ঘরে, 

    আরাম পাবি বসলে পরে, 

    ফরাশ পাতা দেখবি কেমন খাসা! 


    মাছি 

    থাক্ থাক্ থাক্ আর বলে না, 

    আন্কথাতে মন গলে না- 

    ব্যবসা তোমার সবার আছে জানা। 

    ঢুক্লে তোমার জালের ঘেরে 

    কেউ কোনদিন আর কি ফেরে? 

    বাপ্রে! সেথায় ঢুক্তে মোদের মানা। 


    মাকড়সা 

    হাওয়ায় দোলে জালের দোলা 

    চারদিকে তার জান্লা খোলা 

    আপ্নি ঘুমে চোখ যে আসে জুড়ে! 

    আয় না হেথা হাত পা ধুয়ে 

    পাখ্না মুড়ে থাক্ না শুয়ে- 

    ভন্ ভন্ ভন্ মরবি কেন উড়ে? 


    মাছি 

    কাজ নেই মোর দোলায় দুলে, 

    কোথায় তোমার কথায় ভুলে 

    প্রাণটা নিয়ে টান্ পড়ে ভাই শেষে। 

    তোমার ঘরে ঘুম যদি পায় 

    সে ঘুম কভু ভাঙবে না হায়- 

    সে ঘুম নাকি এমন সর্বনেশে! 


    মাকড়সা 

    মিথ্যে কেন ভাবিস্ মনে? 

    দেখ্না এসে ঘরের কোণে 

    ভাঁড়ার ভরা খাবার আছে কত! 

    দে-টাপাটপ ফেলবি মুখে 

    নাচ্বি গাবি থাক্বি সুখে 

    ভাবনা ভুলে বাদ্শা-রাজার মতো। 


    মাছি 

    লোভ দেখালেই ভুলবে ভবি, 

    ভাবছ আমায় তেমনি লোভী! 

    মিথ্যে দাদা ভোলাও কেন খালি, 

    করব কি ছাই ভাড়ার দেখে? 

    প্রণাম করি আড়াল থেকে- 

    আজকে তোমার সেই গুড়ে ভাই বালি। 


    মাকড়সা 

    নধর কালো বদন ভরে 

    রূপ যে কত উপচে পড়ে! 

    অবাক দেখি মুকুটমালা শিরে! 

    হাজার চোখে মানিক জ্বলে! 

    ইন্দ্রধনু পাখার তলে! 

    ছয় পা ফেলে আয় না দেখি ধীরে। 


    মাছি 

    মন ফুর্ফুর্ ফুর্তি নাচে- 

    একটুখানি যাই না কাছে! 

    যাই যাই যাই- বাপ্রে একি বাঁধা। 

    ও দাদা ভাই রক্ষে কর! 

    ফাঁদ পাতা এ কেমন তরো। 

    পড়ে হাত পা হল বাঁধা। 


    দুষ্টুলোকের মিষ্টি কথায় 

    দুষ্টুলোকের মিষ্টি কথায় 

    নাচলে লোকের স্বস্তি কোথায়? 

    এমনি দশাই তার কপালে লেখা। 

    কথার পাকে মানুষ মেরে 

    মাকড়জীবী ঐ যে ফেরে, 

    গড় করি তার অনেক তফাৎ থেকে।


    সংকলিত


    Tag: সুকুমার রায়ের শ্রেষ্ঠ কবিতা, সুকুমার রায়ের কবিতা, সুকুমার রায়ের কবিতা সমগ্র, ষোল আনাই মিছে কবিতা, ষোল আনাই মিছে সুকুমার রায়ের কবিতা, সৎপাত্র কবিতা, সৎপাত্র সুকুমার রায়ের কবিতা, ভূতুড়ে খেলা কবিতা, ভুতুড়ে খেলা সুকুমার রায়ের কবিতা, মূর্খ মাছি কবিতা, মূর্খ মাছি সুকুমার রায়ের কবিতা, 

    Post a Comment

    0Comments

    প্রতিদিন ১০০-২০০ টাকা ইনকাম করতে চাইলে এখানে কমেন্ট করে জানান। আমরা আপনায় কাজে নিয়ে নেবো। ধন্যবাদ

    Post a Comment (0)