এইচএসসি দিনাজপুর বোর্ড ২০১৭ এর বাংলা প্রথম পত্র প্রশ্ন ও সমাধান

Jemi
0
এইচএসসি দিনাজপুর বোর্ড ২০১৭ এর বাংলা প্রথম পত্র প্রশ্ন ও সমাধান



প্রিয় শিক্ষার্থী বন্ধুরা আসসালামুআলাইকুম ওয়ারাহমাতুল্লাহি বারকাতুহু। কেমন আছো তোমরা সবাই?
আশা করি আল্লাহর রহমতে সবাই ভাল আছো। আলহামদুলিল্লাহ আমিও ভাল আছি।


প্রতিবারের মতো আমরা আজ এইচএসসি দিনাজপুর বোর্ড ২০১৭ এর বাংলা প্রথম পত্র প্রশ্ন ও সমাধান নিয়ে হাজির হয়েছি।আমরা এখানে এইচএসসি দিনাজপুর বোর্ড ২০২৪ এর বাংলা প্রথম পত্র প্রশ্ন ও সমাধান সম্পূর্ণ দিয়ে দিব তোমরা খুব সহজে এখান থেকে এইচএসসি দিনাজপুর বোর্ডে২০১৭ এর বাংলা প্রথম পত্র প্রশ্ন ও সমাধান এগুলো পড়ে নিতে পারবে।


     

সৃজনশীল প্রশ্ন 


এইচএসসি দিনাজপুর বোর্ড ২০১৭ এর বাংলা প্রথম পত্র প্রশ্ন ও সমাধান



চণ্ডিপড় শহরের উপকণ্ঠে বাড়ি ভাড়া নেয় সুরেশ ও কল্যাণী ব্যানার্জী । তাদের এক সন্তান শান্ত । স্বামী - স্ত্রী ঢাকুরিজীবী হওয়ায় শান্তকে দেখাশোনার জন্য গ্রাম থেকে আনা হয় অনিতাকে । সারাদিনের খাটুনিতে অনিতার শ্রান্ত শরীরে ঘুম চলে আসে সন্ধ্যারাতে । কল্যাণীর ধারণা অনিতার খাবারের পরিমাণ আরও কমালে ওর ঘুম আসবে না । তাই অনিতার খাবারের পরিমাণ কমিয়ে দেয় কল্যাণী ।কম খেতে খেতে অনিতা শীর্ণকায় হয়ে পড়ে । শান্তর উচ্ছিষ্ট সে চুরি করে খায় । এটা জানতে পেরে কল্যাণী অনিতার উপর নির্যাতন চালায় , তওবা করায় এবং উপদেশ দেয় যে চুরি করে খাওয়া পাপ । ফ্রিজে ভর্তি করা খাবার , শান্ত খাওয়ার ভয়ে পালিয়ে বেড়ায় আর অনিতা শান্তর উচ্ছিষ্টের দিকে লােলুপ দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকে ।


কাকে ইতঃপূর্বে যথােচিত পুরস্কার দেওয়া গিয়েছে বলে কমলাকান্ত মনে করল ? 



উওর:

ডিউক মহাশয়কে ইতঃপূর্বে যথােচিত পুরস্কার দেওয়া হয়েছে বলে কমলাকান্ত মনে  করল ।


 ' সকল দুশ্চিন্তা পরিত্যাগ করিয়া ধর্মাচরণে মন দাও'- কে , কেন বলেছিল ? 


উওর:

 বিড়ালের যুক্তিগ্রাহ্য কথায় পর্যদস্ত হয়ে আত্মপক্ষ সমর্থনের জন্য কমলাকান্ত প্রশ্নোক্ত উক্তিটি করেছিল । 

কমলাকান্তের জন্য রাখা দুধটুকু বিড়াল খেয়ে ফেলায় সে তাকে মারতে উদ্যত হয় । তখন বিড়াল তার চোর হওয়ার কারণ হিসেবে কৃপণ ধনী ব্যক্তিদের ও সাধারণ মানুষের নির্দয়তাকে দায়ী করে । বিড়ালের মুখে এমন যুক্তিগ্রাহ্য কথা শুনে সে পর্যদস্ত হয় । কিন্তু তা বিড়ালকে বুঝতে না দিয়ে আত্মপক্ষ সমর্থনের জন্য কমলাকান্ত উপদেশসূচক প্রশ্নোক্ত উক্তিটি করেছিল ।

 

উদ্দীপকের অনিতা বিড়াল ' প্রবন্ধের কোন শ্রেণিকে স্মরণ করিয়ে দেয় ? ব্যাখ্যা করাে । 


উওর:

উদ্দীপকের অনিতা ‘ বিড়াল ' প্রবন্ধের বিড়াল চরিত্রের নেপথ্যে থাকা বঞ্চিত , নিষ্পেষিত শ্রেণির কথা স্মরণ করিয়ে দেয় ।

 বিড়াল ' প্রবন্থে লেখক বঞ্চিত ও দলিতের ক্ষোভ , প্রতিবাদ ও মর্মবেদনাকে ফুটিয়ে তুলেছেন । বিড়ালের মুখ দিয়ে শােষক - শােষিত , ধনী - দরিদ্রের অধিকার বিষয়ক সংগ্রামের কথা বলেছেন । বিড়ালটি হয়ে উঠেছে সকল উপেক্ষিত অধিকার বঞ্চিত মানুষের প্রতিনিধি ।

উদ্দীপকে আট বছর বয়সী অনিতাকে ঠিকমতাে খেতে দেয় না গৃহকত্রী কল্যাণী । ক্ষুধার জ্বালায় একপর্যায়ে চুরি করে খেতে শুরু করে অনিতা । তখন কল্যাণী তার উপর নির্যাতন চালায় ও এই বলে উপদেশ দেয় যে চুরি করা পাপ । কল্যাণীর ছেলে শান্ত খেতেই চায় না । আর অনিতা শান্তর উচ্ছিষ্ট খাওয়ার জন্য লােলুপ দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকে । অন্যদিকে ' বিড়াল ' প্রবন্ধটিতে বিড়ালটি ক্ষুধার জ্বালায় কমলাকান্তের জন্য রাখা দুধ খেয়ে ফেলে । মানুষ মাছের কাঁটা , পাতের ভাত ফেলে দিলেও বিড়ালকে দেয় না । কিন্তু সমাজের শিরােমণিদের ক্ষেত্রে তারা খেতে না চাইলেও অপরিমিত খাওয়ানাের আয়ােজন করা হয় । বিড়ালের এ অভিযােগের মধ্য দিয়ে সকল দরিদ্র , ক্ষুধার্ত মানুষের প্রতি সমাজের উঁচু তলায় থাকা মানুষের আচরণের নগ্ন দিক ফুটে ওঠে । উদ্দীপকের অনিতা ও ‘ বিড়াল ’ প্রবন্ধের বিড়াল দুজনই শােষিত শ্রেণির কথাই স্মরণ করিয়ে দেয় ।



উদ্দীপকের ভাবার্থ “ বিড়াল ' প্রবন্ধের আলােকে মূল্যায়ন করাে


উওর:

 উদ্দীপকের মধ্যে ‘ বিড়াল ' প্রবন্ধের মূলভাবটিই ফুটে উঠেছে।

বিড়াল ' প্রবন্ধে বঞ্চিত শ্রেণির মর্মবেদনা প্রকাশ পেয়েছে । একইসঙ্গে এখানে ফুটে উঠেছে ধনী ও ক্ষমতাশালী ব্যক্তিদের নির্দয়তার দিকটিও । 

উদ্দীপকের অনিতা একজন গৃহকর্মী । সারাদিন প্রচণ্ড খাটুনির পরও গৃহকত্রী তাকে ঠিকমতাে খেতে দেয় না । ফলে একসময় সে বাধ্য হয়ে চুরি করে খেতে শুরু করে । এদিকে ‘ বিড়াল ' প্রবন্ধের বিড়ালটিও ক্ষুধার জ্বালায় কমলাকান্তের জন্য রাখা দুধটুকু খেয়ে ফেলেছিল । 

‘ বিড়াল ’ প্রবন্ধে একটি বিড়ালের কণ্ঠে সকল বঞ্চিত , নিষ্পেষিত ও দলিতের ক্ষোভ , প্রতিবাদ ও মর্মবেদনা ফুটে উঠেছে । বিড়ালটির অভিযােগ এই যে , মানুষের নির্দয়তাই তাকে চুরি করতে বাধ্য করেছে । তাদের মতাে ক্ষুধার্ত , বঞিতরা খাবারের অভাবে কষ্ট পায় অথচ ধনী ব্যক্তিদের জন্য খাবারের আয়ােজন করতেই ব্যস্ত সবাই । বিড়ালের মতে , চোরের দণ্ড হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে কৃপণ ধনী ও নির্দয় মানুষেরও দণ্ড হওয়া দরকার । উদ্দীপকের চিত্রও ‘ বিড়াল ' প্রবন্ধটির অনুরূপ । অনিতা ক্ষুধার জ্বালায় শীর্ণকায় হয়ে পড়ে আর কল্যাণীর ছেলে শান্ত খাওয়া থেকে পালিয়ে বেড়ায় । খাওয়ার অভাবে যে ছটফট করে সে খেতে পায় না , আর যে ভরপেটে থাকে তার জন্যই সকল খাদ্যের আয়ােজন । ' বিড়াল ' প্রবন্ধে ফুটে ওঠা বঞ্ছিতের হাহাকার উদ্দীপকেও সমানভাবে প্রকাশিত হয়েছে । 



সৃজনশীল প্রশ্ন 

এইচএসসি দিনাজপুর বোর্ড ২০১৭ এর বাংলা প্রথম পত্র প্রশ্ন ও সমাধান



মন্বন্তরের সময় নিঃসন্তান হরিদাসী আত্মীয়ের বাড়ি থেকে ফেরার পথে ধানক্ষেতের পাশে পরিত্যক্ত একটি শিশু দেখতে পায় ।পরম স্নেহে অসহায় শিশুকে কোলে তুলে নেয় সে এবং মাতৃত্বের মমতায় তাকে বড় করে তোলে । কিন্তু বাদ সাধে সমাজ । তাদের হাত হরিদাসীর কুড়িয়ে পাওয়া ছেলেটি মুসলমানের ছেলে , তাকে কাছে রাখলে ব্রাহ্মণ সমাজের অশুচি হবে । কিন্তু হরিদাসী এত 
কিছু মানতে চায় না । তার কাছে মাতৃত্বের দাবিই বড় বিষয় ।


বুড়িকে মা বলে ডাকে কে ? 


উওর:

বুড়িকে মা বলে ডাকে হাজরা ব্যাটার বউ । 


চিনবে না । আমি অনেকদিন গায়ে আসিনি " - উক্তিটি কেন করা হয়েছে ? 


উওর:

গায়ে বহুদিন না আসায় তাকে চেনার কথা বােঝাতে ' আহ্বান ' গল্পের কথক আলােচ্য উক্তিটি করেছিল । 

কথক শহরে চাকরি করে । এ কারণে তার গাঁয়ে আসা হয় না । তার পৈতৃক বাড়ি যা ছিল ভেঙেচুরে ভিটিতে জঞ্জাল গজিয়েছে । তাই গায়ের অনেক লােকই তাকে চিনবে না সেটাই স্বাভাবিক । এ কারণেই বৃদ্ধা কথককে চিনতে না পারলে কথক প্রশ্নোক্ত উক্তিটি করেছিল।


উদ্দীপকের হরিদাসীর মধ্যে আহ্বান ' গল্পের কোন চরিত্রের ছায়াপাত লক্ষণীয় , ব্যাখ্যা করো । 

উওর:

 আহ্বান ’ গল্পে জাতি - ধর্মের উর্ধ্বে আত্মিক সম্পর্কের বিষয়টি অধিক গুরুত্বের সঙ্গে বিধৃত হয়েছে ।

 ‘ আহ্বান ' গল্পে ফুটে উঠেছে হৃদয়ের নিবিড় আন্তরিকতার স্পর্শে গড়ে ওঠা মমতাময় এক সম্পর্কের কথা । গাঁয়ের এক বৃদ্ধা শহর থেকে আসা কথকের প্রতি স্নেহের টান অনুভব করেছে । তাই কোনাে স্বার্থ ছাড়াই সে কথকের প্রতি স্নেহের প্রকাশ ঘটিয়েছে । 

উদ্দীপকের নিঃসন্তান হরিদাসী কুড়িয়ে পাওয়া একটি শিশুকে পরম মমতায় বড় করে তােলে । সমাজের মানুষ ছেলেটিকে মুসলমান ভেবে হরিদাসীকে বলে তাকে ত্যাগ করতে । কিন্তু হরিদাসীর কাছে ধর্মের ব্যবধানের চেয়ে মাতৃত্বের দাবিই বড় হয়ে ওঠে । অন্যদিকে আহ্বান গল্পের বৃদ্ধার কাছেও সবচেয়ে বড় হয়ে উঠেছে তার স্নেহের দিকটি । কথক হিন্দু হলে ও মুসলিম বৃদ্ধার কাছে তা গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠেনি । নিজের ছেলে মনে করেই বৃদ্ধা কখনাে পাকা আম , পাতিলেবু কখনাে কাঁচকলা বা কুমড়াে দিয়ে তার স্নেহের প্রকাশ ঘটিয়েছে । ধর্মীয় ব্যবধান ও রক্তের সম্পর্কের উর্ধ্বে গিয়ে হরিদাসী ও বৃদ্ধা তাদের স্নেহকেই মর্যাদা দিয়েছে । 


প্রেক্ষাপট আলাদা হলেও বুড়ি ও হরিদাসীর মধ্যে প্রাধান্য পেয়েছে মাতৃত্বের হাহাকার- উক্তিটি বিশ্লেষণ করাে । 


উওর:

 ‘ আহ্বান ’ গল্পে উদার মাতৃত্ববােধের প্রকাশ লক্ষ করা যায় বলে বলা যায় যে , প্রশ্নোক্ত কথাটি যুক্তিসংগত ।

 ' আহ্বান ' গল্পে একটি নির্মল সম্পর্কের চিত্র অঙ্কিত হয়েছে । বৃদ্ধা ও কথকের মাঝে গড়ে ওঠা নিঃস্বার্থ সম্পর্কটিতে স্নেহ - মমতার বাইরে অন্য আর কিছুই মুখ্য হয়ে উঠতে পারেনি । 

উদ্দীপকের হরিদাসী ধানক্ষেতের পাশে একটি শিশুকে কুড়িয়ে পায় । সমাজের বাধা - নিয়মকে তােয়াক্কা না করেই শিশুটিকে আপন করে নেয় সে । অন্যদিকে ' আহ্বান ' গল্পের বুড়িটিও কথককে স্নেহ - মমতার সম্পর্কে বেঁধে নেয় । ধর্ম , বর্ণ , আর্থিক অবস্থান ভিন্ন হলেও বা রক্তের সম্পর্ক না থাকলেও বৃদ্ধা কৃথককে আপন ভেবে নিয়েছিল । 

বাজারে যাওয়ার পথে বৃদ্ধার সঙ্গে দেখা হয়েছিল কথকের । তখন কথক বৃদ্ধার খোঁজখবর নিলে নিঃসঙ্গ বৃদ্ধা কথকের মাঝে পুত্রের ছায়া খুঁজে পায় । এরপর থেকেই বৃদ্ধ নানাভাবে কথকের প্রতি তার স্নেহের প্রকাশ ঘটাতে থাকে । কখনাে দুধ , পাকা আম , কখনো কাঁচকলা বা পাতিলেবু নিয়ে যায় কথকের কাছে । মায়ের অধিকার নিয়ে বুড়ি দাবি জানায় , যেন মৃত্যুর পর তার কাফনের কাপড় কথকই কিনে দেয় । এদিকে উদ্দীপকের হরিদাসীও কুড়িয়ে পাওয়া ছেলেকে আপন করে নিয়েছে , তার জন্য সমাজের বিরুদ্ধে গিয়েছে । কথক বুড়ির রক্তের সম্পর্কের কেউ নয় , কুড়িয়ে পাওয়া ছেলেটিও হরিদাসীর রক্তের সম্পর্কের নয় । একইসঙ্গে তাদের পরস্পরের ধর্মও আলাদা । তবু সব কিছুর চেয়ে মাতৃত্বের দাবিই তাদের কাছে বড় । তাই প্রশ্নোক্ত উক্তিটি যথার্থ



সৃজনশীল প্রশ্ন 

এইচএসসি দিনাজপুর বোর্ড ২০১৭ এর বাংলা প্রথম পত্র প্রশ্ন ও সমাধান

এইচএসসি দিনাজপুর বোর্ড ২০১৭ এর বাংলা প্রথম পত্র প্রশ্ন ও সমাধান



স্বপ্নচূড়া গ্রুপ অব ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড - এর চেয়ারম্যান মি . রহমান রাশভারি মানুষ । কর্মচারীরা আনুগত্যের ভাব প্রকাশে তার সব কথাতেই হা স্যার , জি স্যার করেন । কেবল মতিন সাহেব তা করেন না । যেটি ঠিক সেখানে হ্য , যেটি ঠিক নয় সেখানে না বলেন । সহকর্মীরা মতিন সাহেবকে গোয়ার ও বেয়াদব ভাবেন । চেয়ারম্যান সাহেবও মাঝেমধ্যে মতিন সাহেবের গোয়ার্তুমিতে বিরক্ত হন । হঠাৎ কোষাধ্যক্ষের মৃত্যুতে পদটি শূন্য হলে লােভনীয় এ পদে পদায়ন পেতে সহকর্মীরা চেয়ারম্যানকে তােয়াজ করতে থাকেন । অবশেষে চেয়ারম্যান যেদিন উক্ত পদের নিয়ােগপত্র ইস্যু করেন তা দেখে সবার চোখ ছানাবড়া । কারণ সেই পদের নিয়ােগপত্র পান মতিন সাহেব ।

কাজী নজরুল ইসলাম কত বছর বয়সে দুরারােগ্য ব্যাধিতে আক্রান্ত হন ? 


উওর:

কাজী নজরুল ইসলাম তেতাল্লিশ বছর বয়সে দুরারােগ্য ব্যাধিতে আক্রান্ত হন ।


মানুষ - ধর্মকে সবচেয়ে বড় ধর্ম বলা হয় কেন ? 

উওর:

মানুষ - ধর্ম তথা মনুষ্যত্ববােধই সবচেয়ে বড় ধর্ম , কেননা এটি জাগ্রত হলেই মানুষে মানুষে সম্প্রীতি গড়ে উঠবে । 

মানুষের প্রাণের সম্মিলন ঘটাতে হলে তাদের মধ্যকার ব্যবধান ঘােচাতে হবে । এ ব্যবধান ঘােচাতে হলে মানুষের মানুষ ' পরিচয়টিকে সবচেয়ে উর্ধ্বে স্থান দিতে হবে । এর মাধ্যমে মিটে যাবে এক ধর্মের সঙ্গে অন্য ধর্মের বিরােধও । মনুষ্যত্ববােধের জাগরণই ধর্মের প্রকৃত সত্য উন্মােচন করতে পারে । তাই মানুষ - ধর্মকেই সবচেয়ে বড় ধর্ম বলা হয়েছে । 


উদ্দীপকে ' আমার পথ ' প্রবন্ধের কোন দিকটি প্রতিফলিত হয়েছে? ব্যাখ্যা করাে ।

উওর:

উদ্দীপকে ‘ আমার পথ ' প্রবন্ধে উল্লিখিত মিথ্যা বিনয় ও সত্যের শক্তির দিকটিই প্রতিফলিত হয়েছে ।

 আমার পথ ' প্রবন্ধে লেখক সত্য পথের জয়গান করেছেন । যে মানুষটির মূল শক্তি সত্য , সে কখনাে ভুল পথে যেতে পারে না । সত্যের দ্বারা চালিত ব্যক্তির মনে প্রচণ্ড আত্মবিশ্বাস থাকে । আর মিথ্যাকে পুঁজি করে চলা ব্যক্তিরা সদাই ভীত ও দুর্বল হয়ে থাকে । 

উদ্দীপকের মতিন সাহেব সত্য পথের পথিক । তাই তিনি লাভের আশায় তাঁর কর্মক্ষেত্রের মালিকের প্রতি মিথ্যা বিনয় দেখান না । মালিকের সঠিক কথায় সমর্থন ও ভুল কথায় দ্বিমত জানানাের সাহস রাখেন তিনি । কিন্তু অন্য সকল কর্মচারী সর্বদাই মিথ্যা বিনয় দেখাতে ব্যস্ত । মতিন সাহেব সত্য পথে থেকেই তার প্রাপ্য স্থান অর্জন করেছিলেন । আমার পথ ' প্রবন্ধেও সত্যের পথ ধরে এগােতেই আহ্বান জানিয়েছেন লেখক । কেননা মিথ্যা বিনয়ের ভণ্ডামি কখনােই সুফল বয়ে আনে না । 

মতিন সাহেবের আমিত্ব তাকে উক্ত পদের সম্মানে ভূষিত করে'— উদ্দীপক ও প্রবন্ধের আলােকে আমিত্বের স্বরূপ বিশ্লেষণ করাে । 

উওর:

সত্যের আলােকে উদ্ভাসিত নিজের অন্তরের রূপটিই আমিত্ব ' আর এই ' আমিত্বই ' মানুষকে মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে শেখায়— এটিই মতিন সাহেবের ক্ষেত্রে প্রমাণিত হয়েছে । 

আমার পথ ' প্রবন্ধে লেখক এমন এক ‘ আমি’র জাগরণ প্রত্যাশা করেছেন , যে সত্য প্রকাশে নির্ভীক ও অসংকোচ । এই ' আমি মানুষকে সত্যের আলােয় নিজেকে চিনে নিতে সাহায্য করে ।

উদ্দীপকের মতিন সাহেব সত্যের অনুসারী । তাই তার সাহস আছে ভুলকে ভুল ও সঠিককে সঠিক বলার । তার এই স্পষ্টভাষী স্বভার অনেকের কাছে দম্ভ মনে হলেও তিনি তা নিয়ে চিন্তিত নন । একপর্যায়ে তিনি তার এই চরিত্রের জন্যই পদোন্নতিপ্রাপ্ত হন । আমার পথ প্রবন্ধে লেখক মানুষকে যেমন হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন , মতিন সাহেব তেমনই একজন মানুষ । তিনি নিজের আমিত্বে বিশ্বাসী ও মিথ্যা বিনয়ের সমর্থনকারী নন ।

 লেখক প্রতিটি মানুষকে পূর্ণ এক ‘ আমি’র সীমায় ব্যাপ্ত করতে চেয়েছেন । মানুষ যদি সত্যকে ধারণ করতে পারে তবে নিজেই হতে পারে নিজের কর্ণধার । রুদ্রতেজে মিথ্যার ভয়কে জয় করে সত্যের আলােয় উদ্ভাসিত করে এই ‘ আমি ’ সত্তা । এই আমিত্ব অবিনয়কে মেনে নিতে পারে । কিন্তু অন্যায়কে সহ্য করতে পারে না । এই আমিত্ব ভুল করতে রাজি কিন্তু ভণ্ডামি করতে প্রস্তুত নয় । ভুল জেনেও তাকে ঠিক বলে চালিয়ে দেওয়ার কপটতা এই ' আমি'র দৃষ্টিতে ভণ্ডামি । উদ্দীপকের মতিন সাহেব এই আমিত্বের আলােয় উদ্ভাসিত । তাই তাে তিনি মিথ্যা বিনয় প্রকাশ থেকে বিরত থাকেন । ভুলকে তােষামােদের আবরণে সঠিক করতে যান না । প্রবন্ধে উল্লিখিত সত্যের কর্ণধার যেমন মাথা উঁচু করে বাঁচেন , মতিন সাহেবও তেমনি নিজের আমিত্বকে আগলে মাথা উঁচু করে বাঁচেন ।


সৃজনশীল প্রশ্ন

এইচএসসি দিনাজপুর বোর্ড ২০১৭ এর বাংলা প্রথম পত্র প্রশ্ন ও সমাধান

এইচএসসি দিনাজপুর বোর্ড ২০১৭ এর বাংলা প্রথম পত্র প্রশ্ন ও সমাধান


 রফিকের সংসারে সচ্ছলতা না থাকলেও শান্তিতেই ছিল তারা । কিন্তু লােভে পড়ে উপরি পাওনার আশায় কোম্পানির মালামাল পাচারে সহযােগিতার দায়ে দারােয়ানের চাকরিটা চলে যায় তার । সংসারে নেমে আসে চরম দারিদ্র্য । বাধ্য হয়ে রফিকের স্ত্রী কল্পনাকে পরের বাড়িতে ঝিয়ের কাজ করতে হয় । অধিক রাত অবধি হাড়ভাঙা পরিশ্রম করে সে ঘরে ফেরে । তার চেহারায় মলিনতার ছাপ দেখে কষ্ট পায় রফিক । তবে মুখ ফুটে কিছুই বলতে পারে না । কারণ সে জানে , এ শাস্তি তার নিজের কর্মদোষেই পাওয়া । তাই সে অন্য কাউকে দোষ দিতে পারে না । 

 মাদাম ললাইসেলের স্বামী কোথায় চাকরি করত ?

উওর:

মাদাম ললাইসেলের স্বামী শিক্ষা পরিষদের অফিসে চাকরি করত ।

 মাদাম লাইসেলকে দেখলে বয়স্কা বলে মনে হয় কেন ? 

উওর:

বান্ধবীর কাছ থেকে ধার করা হার হারিয়ে তা ফেরত দিতে দশ বছর ধরে কঠিন দারিদ্র্যের সঙ্গে লড়াই ও অপরিমেয় পরিশ্রম করার কারণে মাদাম লোইসেলের শরীর ভেঙে পড়েছিল বলে তাকে বয়স্কা মনে হত ।

 ' নেকলেস ’ গল্পে বান্ধবীর কাছ থেকে ধার করে আনা হীরার নেকলেস হারিয়ে ফেলে মাদাম লােইসেল । সেই নেকলেস ফেরত দিতে গিয়ে লােইসেল ও তার স্বামীকে ব্যাপক ধার - দেনার সম্মুখীন হতে হয় । এই দেনা শােধ করার জন্য তাদেরকে দারিদ্র্যপূর্ণ জীবন বেছে নিতে হয় । প্রতিনিয়ত ঘরের সব কঠিন ও খাটুনির কাজগুলাে করতে করতে মাদাম লেইসেলের সৌন্দর্য ম্লান হয়ে পড়ে । দুশ্চিন্তা , অমানুষিক পরিশ্রম । দারিদ্র্যপূর্ণ জীবনের জন্য মাদাম লােইসেলের চেহারায় বার্ধক্যের ছাপ পড়ে । অল্প বয়সে চেহারায় বার্ধক্যের ছাপ পড়ার কারণেই তাকে দেখে বয়স্কা বলে মানে হয় । 

উদ্দীপকের কল্পনার সাথে ‘ নেকলেস ' গল্পের কোন চরিত্রের সাদৃশ্য রয়েছে ? আলােচনা করাে । 

উওর:

 উদ্দীপকের কল্পনার সাথে নেকলেস ' গল্পের মাদাম লােইসেল বা মাতিলদা চরিত্রের সাদৃশ্য রয়েছে ।

 অতিলােভ বা উচ্চাকাঙ্ক্ষার কারণে মানুষের জীবনে যে বিপর্যয় নেমে আসে তারই প্রতিফলন ঘটেছে ‘ নেকলেস ' গল্পে । এ গল্পের প্রধান চরিত্র মাতিলদা উচ্চাকাঙ্ক্ষার কারণেই বিপর্যয়ের সম্মুখীন হয় । বান্ধবীর কাছ থেকে ধার করা নেকলেসটি হারিয়ে যাওয়ার ঘটনায় তার সহজ - স্বাভাবিক জীবন দারিদ্র্যের কশাঘাতে বিপর্যস্ত হয়ে ওঠে । 

উদ্দীপকের কল্পনার স্বামী রফিকের দুর্নীতির কারণে চাকরি চলে গেলে তাদের সংসারে নেমে আসে চরম দারিদ্র্য । কল্পনা বাধ্য হয়ে অন্যের বাড়িতে ঝিয়ের কাজ নেয় । রাত - দিন হাড়ভাঙা পরিশ্রমের ফলে তার চেহারায় মলিনতার ছাপ ফুটে ওঠে । আলােচ্য গল্পের মাতিলদা এবং তার স্বামীও প্রচুর ধার - দেনার সম্মুখীন হয় । ধনী বান্ধবীর কাছ থেকে হীরার নেকলেস ধার করে এনে হারিয়ে ফেলে মাদাম লােইসেল । আর সেই নেকলেস ফেরত দিতেই ধার করতে হয় তাদের । এই ধার শােধ করতে গিয়ে মাতিলদাকে ঘরের সকল কাজ ও বাইরের অন্যান্য পরিশ্রমের কাজগুলাে প্রতিনিয়ত করতে হয় । দশ বছর ধরে এমন ভয়াবহ দারিদ্র্য সহ্য করায় মাতিলদার চেহারায় অল্প বয়সেই বার্ধক্যের ছাপ পড়ে যায় । মাত্রাতিরিক্ত দারিদ্র্যের কশাঘাতে পরিশ্রমে জর্জরিত হয়েই কল্পনা ও মাতিলদার জীবনে বিপর্যয় নেমে আসে ।
 

উদ্দীপক ও ' নেকলেস ’ গল্প একই বৃক্ষের দুটি ফল " – মূল্যায়ন করাে । 

উওর:

 লােভ ও বিলাসী জীবনের উচ্ছাকাক্ষাজাত করুণ পরিণতি নেকলেস ' গল্পের বাণীরূপ লাভ করেছে । 

নেকলেস ’ গল্পের মাতিলদা সর্বদা উচ্চাভিলাসী স্বপ্নে বিভাের থাকত । জনশিক্ষামন্ত্রীর অনুষ্ঠানে হীরার নেকলেস পরা তার সাধ্যের বাইরে ছিল । তবুও সে বান্ধবীর কাছ থেকে হীরার নেকলেস ধার করে । পরবর্তীতে সেই নেকলেসটি হারিয়ে ফেলায় তার জীবনে নেমে আসে দুঃসময় । হার ফেরত দিতে গিয়ে কঠোর পরিশ্রম করে দারিদ্র্যপূর্ণ জীবন বেছে নিতে হয় তাকে । মূলত , সাধ্যের বাইরে শখ করার জন্যই তাকে এই করুণ পরিস্থিতির সম্মুখীন হতে হয়।

 উদ্দীপকে কশ্পনা ও রফিরে সংসারে সচ্ছলতা না থাকলেও শান্তি ছিল । কিন্তু লােভে পড়ে কোম্পানির মালামাল পাচারে সহযােগিতার দায়ে রফিকের চাকরি চলে যায় । এরপর চরম দারিদ্র্য নেমে আসে তাদের সংসারে । তার স্ত্রীকে অন্যের বাড়িতে ঝিয়ের কাজ করতে হয় । হাড়ভাঙা পরিশ্রম করে চেহারায় মলিনতার ছাপ পড়ে । যেহেতু নিজের কর্মদোষেই স্ত্রীর এই কষ্ট , তাই রফিক মুখ ফুটে কিছু বলতেও পারে না । 

নেকলেস ' গল্পের মাদাম লােইসেলের দিন কাটত নানারকম বিলাসী চিন্তায় মগ্ন থেকে । সে এমন এক উচ্চাভিলাসী জীবনযাপনের স্বপ্ন দেখত যা তার জন্য সত্য হওয়া সম্ভব ছিল না । নিজের আকাঙ্ক্ষা পূরণের জন্য মাতিলদা জনশিক্ষামন্ত্রীর অনুষ্ঠানে বান্ধবীর কাছ থেকে একটি হীরার নেকলেস ধার নিয়েছিল যা পরবর্তীতে হারিয়ে ফেলে সে । হারানাে হারটি ফেরত দিতে গিয়ে তাকে এক কঠিন জীবনসংগ্রামের সম্মুখীন হতে হয় । উদ্দীপকের রফিককেও উচ্চাভিলাসী জীবনযাপনের জন্য অন্যায় করতে দেখা যায় । সেই অন্যায়ের কারণে চাকরি চলে গেলে তাকেও দারিদ্র্যের মুখােমুখি হতে হয় । বস্তুত সামর্থ্যের বাইরে গিয়ে বিলাসী জীবনযাপনের উচ্চাকাঙ্ক্ষাই উদ্দীপক ও ' নেকলেস ' গল্পের পরিণতিকে একই সমতলে এনে দাঁড় করিয়েছে । তাই বলা যায় , “ উদ্দীপক ও নেকলেস ’ গল্প একই বৃক্ষের দুটি ফল ” - মন্তব্যটি সঠিক ।

 

সৃজনশীল প্রশ্ন 


এইচএসসি দিনাজপুর বোর্ড ২০১৭ এর বাংলা প্রথম পত্র প্রশ্ন ও সমাধান

এইচএসসি দিনাজপুর বোর্ড ২০১৭ এর বাংলা প্রথম পত্র প্রশ্ন ও সমাধান


আব্দুল গাফফার গ্রামের আদর্শ কৃষক । দু - চার গাঁয়ের মানুষ তাকে এক নামে চেনে । তিনি সমন্বিত পদ্ধতিতে চাষ করে অল্প খানে অধিক উৎপাদনের নজির স্থাপন করে কৃষিক্ষেত্রে বৈপ্লবিক সাফল্য অর্জন করেন । সরকারি - বেসরকারি পুরস্কারও পান । সরকারি ব্যবস্থাপনায় বিদেশ ভ্রমণে গিয়ে দেখেন সেখানে শীতকালীন ফসল ফলানাে হচ্ছে গ্রীষ্মকালে । তিনি উপলব্ধি করেন যে কৃষির অনেক কিছু জানলেও তিনি সবকিছু জানেন না।

ঐকতান ' কবিতাটি প্রথমে কোন পত্রিকায় প্রকাশিত হয় ? 

উওর:

ঐকতান ' কবিতাটি প্রথম প্রকাশিত হয় ' প্রবাসী ' পত্রিকায় ।

 বাধা হয়ে আছে মাের বেড়াগুলি জীবনযাত্রার'- এ কথার তাৎপর্য কী ? 

উওর:

কবি সামাজিকভাবে উচ্চ মর্যাদায় আসীন ছিলেন বলে হতদরিদ্র মানুষের জীবনে প্রবেশ করতে পারেননি ।

 জীবন - মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে দাঁড়িয়ে কবি অনুভব করেছেন নিজের অকিঞ্চিৎকরতা ও ব্যর্থতার স্বরূপ । কবি বুঝতে পেরেছেন অনেক কিছুই তার অজানা ও অদেখা রয়ে গেছে । আর এর একটি প্রধান কারণ , তাঁর জীবনযাত্রা ও সামাজিক অবস্থান । সমাজের উচ্চ মঞ্চে আসন গ্রহণ করায় তিনি হতদরিদ্র মানুষের কাছাকাছি যেতে পারেননি । জীবনের শেষ সময়ে এসে এটিকে নিজের ব্যর্থতা ও অপূর্ণতার কারণ মনে করেছেন তিনি ।

উদ্দীপকের সাথে ' ঐকতান ' কবিতার কী বৈসাদৃশ্য ও সাদৃশ্য আছে লেখাে । 

উওর:

প্রেক্ষাপটের দিক থেকে উদ্দীপকের সঙ্গে ‘ ঐকতান ' কবিতার সাদৃশ্য ও বৈসাদৃশ্য দুই - ই বিদ্যমান রয়েছে । 

ঐকতান কবিতায় রয়েছে স্থিতপ্রজ্ঞ কবির আত্মসমালােচনা । কবি হিসেবে নিজের অপূর্ণতার স্বতঃস্ফূর্ত স্বীকারােক্তির প্রকাশ ঘটেছে এখানে । জীবন - মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে দাঁড়িয়ে কবি অনুভব করেছেন নিজের ব্যর্থতার স্বরূপ । 

উদ্দীপকের আব্দুল গাফফার আদর্শ কৃষক হিসেবে দু - চার গায়ের মানুষের কাছে সমাদৃত । সমন্বিত পদ্ধতিতে চাষ করে কৃষিক্ষেত্রে বৈপ্লবিক সাফল্য আনেন তিনি । কিন্তু বিদেশ ভ্রমণে গিয়ে কৃষিক্ষেত্রে আরও ব্যাপক বৈচিত্র্য দেখার পর নিজের অপূর্ণতার কথা বুঝতে পারেন তিনি । ' ঐকতান ' কবিতার সঙ্গে উদ্দীপকের সাদৃশ্য এই যে , কবিও নিজের অপূর্ণতার দিকটি অনুভব করেছেন । গাফফার যেমন উপলব্ধি করেছেন যে তিনি সবকিছু জানেন না , কবিও তেমনি উপলব্ধি করেছেন যে , সবার কাছে সমাদৃত হলেও আসলে অনেক কিছুই তার অজানা ও অদেখা । প্রেক্ষাপটের গাম্ভীর্য ও ভিন্নতাই উদ্দীপক ও পাঠ্য কবিতাটিকে বৈসাদৃশ্যপূর্ণ করে তুলেছে । 

উদ্দীপকে রয়েছে এক কৃষকের কৃষিক্ষেত্রের সকল দিক না জানা নিয়ে অপূর্ণতা ও হতাশার এক সাধারণ দিক । অন্যদিকে আলােচ্য কবিতায় রয়েছে বিশ্বজুড়ে সমাদৃত এক কবির কবিতাঙ্গনে নিজের অপূর্ণতার এক গভীর দিক । অপূর্ণতার অকপট স্বীকারােক্তি উদ্দীপক ও কবিতাটির মাঝে সাদৃশ্য সৃজন করেছে । 

উদ্দীপকের আব্দুল গাফফার ও ‘ ঐকতান ' কবিতার কবির উপলব্ধি একই ব্যাখ্যা করাে । 

উওর:

উদ্দীপকের আব্দুল গাফফার ও ' ঐকতান ' কবিতার কবি উভয়কেই অপূর্ণতার অনুভূতি তাড়িয়ে বেড়িয়েছে । 

ঐকতান কবিতার কবি জীবনসায়াহ্নে এসে কবি হিসেবে নিজের অপূর্ণতার কথা প্রকাশ করেছেন । অনুভব করেছেন নিজের অকিঞিক্তরতা ও ব্যর্থতার স্বরূপ । 

উদ্দীপকের আব্দুল গাফফার আদর্শ কৃষক হিসেবে সমাদৃত । কৃষিক্ষেত্রে বৈপ্লবিক সাফল্য অর্জন করেছেন তিনি । কিন্তু বিদেশ ভ্রমণে গিয়ে সেখানকার কৃষকদের সাফল্য দেখে তিনি অনুভব করেন যে , তিনি অনেক কম জানেন । এদিকে ' ঐকতান ' কবিতার কবি বিশ্বজুড়ে সমাদৃত হলেও তার মনে হয়েছে তিনি সকল মানুষের হৃদয়ে প্রবেশ করতে পারেননি । নিজের জীবনযাত্রার সীমাবদ্ধতায় অনেকের কাছ থেকেই দূরে অবস্থান করেছেন তিনি । 

প্রেক্ষাপট সম্পূর্ণ ভিন্ন হলেও গাফফার ও কবির অনুভূতি একই । নিজ নিজ অঙ্গনে সমাদৃত হওয়া সত্ত্বেও তারা নিজেদের সীমাবদ্ধতার কথা ভেবে কাতর হয়েছেন । কবি বুঝতে পেরেছেন এই পৃথিবীর অনেক কিছুই তার অজানা ও অদেখা । বিশ্বের বিশাল আয়ােজনে তার ছিল কেবল ছােট একটি কোণ । নানা দেশের বিচিত্র অভিজ্ঞতা সযত্নে আহরণ করে কাব্যভাণ্ডার পূর্ণ করলেও পৃথিবীর সর্বত্রই তিনি প্রবেশের দ্বার খুঁজে পাননি । এদিকে আব্দুল গাফফার পরিভ্রমণ করতে গিয়ে উপলব্ধি করেছেন তার জ্ঞান পূর্ণ নয় , জানার বাকি অনেক কিছুই । ভারে দিক থেকে উদ্দীপকের প্রেক্ষাপট সাধারণ ও ক্ষুদ্র , আর কবিতার প্রেক্ষাপট গভীর ও গাম্ভীর্যপূর্ণ , কিন্তু অপূর্ণতার আত্মােপলব্দি দুজনের ক্ষেত্রে একই । 


সৃজনশীল প্রশ্ন

এইচএসসি দিনাজপুর বোর্ড ২০১৭ এর বাংলা প্রথম পত্র প্রশ্ন ও সমাধান


এইচএসসি দিনাজপুর বোর্ড ২০১৭ এর বাংলা প্রথম পত্র প্রশ্ন ও সমাধান



 মচমইল বাজারে প্রকাশ্যে তিনজন সন্ত্রাসী আক্রমণ করে তালেব মাস্টারকে । তিনি মাটিতে লুটিয়ে পড়লে মােটরসাইকেলযােগে সন্ত্রাসীরা পালিয়ে যায় । এমন সময় ঘটনাস্থলে এসে পড়ে সাহসী তরুণ ফিরােজ । সে সন্ত্রাসীদের ধাওয়া করে এবং একজনকে ধরে ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানের হাতে তুলে দেয় । ফিরে এসে দেখে মাস্টার সাহেব তখনাে মাটিতে লুটিয়ে পড়ে আছেন । পুলিশি ঝামেলার ভয়ে কেউ সাহায্যে এগিয়ে আসছে না । ফিরােজ কোনাে কিছু না ভেবেই মাস্টার সাহেবকে নিয়ে যায় মেডিকেলে ।

কবি সুকান্ত ভট্টাচার্য কোন দৈনিক পত্রিকার সাথে সম্পৃক্ত ছিলেন ? 

উওর:

কবি সুকান্ত ভট্টাচার্য দৈনিক স্বাধীনতা ' পত্রিকার সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিলেন । 

আঠারাে বছর বয়স মাথা নােয়াবার নয়'- কেন ? 

উওর:

আঠারাে বছর বয়সে মানুষ যৌবনে পদার্পণ করে আত্মপ্রত্যয়ী ও সাহসী হয়ে ওঠে বলে কারাে কাছে মাথা নােয়ায় না ।

 শৈশব - কৈশােরের পরনির্ভরতার দিনগুলাে সচেতনভাবে মুছে ফেলতে উদ্যোগী হয় আঠারাে বছর বয়সের তরুণেরা । এ বয়স অদম্য দুঃসাহসে মকল বাধা - বিপদকে পেরিয়ে যেতে প্রস্তুত থাকে । অন্যায়ের বিরুদ্ধে মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে উদ্যমী এ বয়সের তরুণেরা । কোনাে অন্যায় প্রতিবন্ধকতার কাছে মাথা নত করে না এ বয়সের তরুণপ্রাণ । কবি তাই এ বয়সটিকে দুঃসাহসী হিসেবে চিহ্নিত করেছেন । 

উদ্দীপকের ফিরােজের মানসিকতার যে দিকটি আঠারাে বছর বয়স ' কবিতার মধ্যে বিদ্যমান তা ব্যাখ্যা করাে ।


উওর:

উদ্দীপকের ফিরােজের মানসিকতায় আঠারাে বছর বয়স ' কবিতায় উল্লেখিত তরুণদের ইতিবাচক দিকগুলাে বিদ্যমান । 

আলােচ্য কবিতায় কবি নিজ অভিজ্ঞতার আলােকে বয়ঃসন্ধিকালের বৈশিষ্ট্যকে তুলে ধরেছেন । তিনি লক্ষ করেছেন , কৈশাের থেকে যৌবনে পদার্পণের এ বয়সটি প্রচণ্ড সাহসে ঝুঁকি নেওয়ার উপযােগী । আঠারাে বছর বয়সের তরুণেরা অসাধ্যকে সাধন করার জন্য দুর্বার গতিতে এগিয়ে যায়।

উদ্দীপকের ফিরােজ একজন সাহসী তরুণ । সে তালেব মাস্টারকে আক্রমণ করা সন্ত্রাসীদের একজনকে ধরে চেয়ারম্যানের হাতে তুলে দেয় । আক্রমণস্থলে ফিরে এসে সে দেখে ভীতু মানুষগুলাে রক্তাক্ত তালেব মাস্টারকে সাহায্য করতে এগিয়ে আসেনি । তখন সে পুলিশি ঝামেলার ভয় অগ্রাহ্য করে নিজেই তাকে হাসপাতালে নিয়ে যায় । আলােচ্য কবিতায় ফিরােজের এ বৈশিষ্ট্যগুলাের কথাই বলা হয়েছে । দেশ , জাতি ও মানবতার জন্য এ বয়সের তরুণেরাই এগিয়ে যায় সবার আগে । কবি মনে করেন , এ বয়সটি প্রবল উচ্ছ্বাসে ঝুঁকি নেওয়ার উপযােগী । ফিরােজের মাঝেও এই ঝুঁকি নেওয়ার প্রবণতা লক্ষণীয় । সর্বোপরি , আঠারাে বছর বয়স ' কবিতায় বর্ণিত তরুণপ্রাণের ইতিবাচক সকল বৈশিষ্ট্যই ফিরােজের মাঝে বিদ্যমান । 


উদ্দীপকের মূলভাব ‘ আঠারাে বছর বয়স ' কবিতার মূলভাবের দ্যোতক আলােচনা করাে । 
  

উওর:

উদ্দীপকের মূলভাব আঠারাে বছর বয়স ' কবিতার মূলভাবের দ্যোতক'- উক্তিটি যথার্থ । কেননা উভয়স্থানেই তারুণ্যের যথার্থ স্ফফূরণ লক্ষ করা যায় ।

 আঠারাে বছর বয়স ' কবিতায় কবি বয়ঃসন্ধিকালের বৈশিষ্ট্যকে তুলে ধরেছেন । এ সকল বৈশিষ্ট্য ইতিবাচকতায় পরিপূর্ণ । কবির বর্ণনায় নানারকম গুণ ও দক্ষতার লক্ষণ ফুটে উঠেছে এ বয়সের তরুণদের মাঝে । তিনি মনে করেন , এ বয়সের ধর্মই হলাে আত্মত্যাগের মহান মনে উজ্জীবিত হওয়া ।

 উদ্দীপকের ফিরােজ তালেব মাস্টারকে আক্রমণ করা সন্ত্রাসীদের ধাওয়া করে একজনকে ধরে ফেলতে সক্ষম হয় । তাকে আটক করে চেয়ারম্যানের হাতে তুলে দেয় সে । পরবর্তীতে সে পুলিশি ঝামেলার তােয়াক্কা না করে আহত মাস্টারকে হাসপাতালে নিয়ে যায় । পাঠ্য কবিতায় কবি তরুণদের যে ইতিবাচক বৈশিষ্ট্যের কথা বলেছেন তা ফিরােজের মাঝেও বিদ্যমান । তারুণ্যের শক্তিতে ফিরােজ অন্যায়ের বিরুদ্ধে মাথা তুলে দাঁড়িয়েছে । 

আঠারাে বছর বয়স বহু ইতিবাচক বৈশিষ্ট্যে চিহ্নিত । জড় , নিশ্চল ও প্রথাবদ্ধ জীবনকে পেছনে ফেলে নতুন জীবন রচনার স্বপ্ন , কল্যাণ ও সেবাব্রত , উদ্দীপনা ও সাহসিকতা , চলার দুর্বার গতি— এ সবই আঠারাে বছর বয়সের বৈশিষ্ট্য । প্রতিটি তরুণেরই এ সকল বৈশিষ্ট্য ধারণ করা জরুরি । উদ্দীপকের ফিরােজ যেন কবির প্রত্যাশিত বৈশিষ্ট্যের অধিকারী এক তরুণ । সন্ত্রাসী ও পুলিশি ঝামেলার ভয়ে যখন মানবতা পদপিষ্ট হচ্ছিল তখন তারুণ্যদীপ্ত ফিরােজই সেখানে সাহায্যকারীর ভূমিকায় উত্তীর্ণ হয় । ঘটনাস্থলে দাঁড়িয়ে থাকা অনেক মানুষের ভিড়ে একজন ফিরােজই অন্যায়ের বিরুদ্ধে মাথা তুলে দাঁড়িয়েছে । আর তাই , উদ্দীপকের ফিরােজের চরিত্রটি আঠারাে বছর বয়স ' কবিতায় বর্ণিত সকল তরুণের প্রতিনিধি হয়ে উঠেছে । সুতরাং , আলােচ্য মন্তব্যটি যথার্থ । 



সৃজনশীল প্রশ্ন 

এইচএসসি দিনাজপুর বোর্ড ২০১৭ এর বাংলা প্রথম পত্র প্রশ্ন ও সমাধান


এইচএসসি দিনাজপুর বোর্ড ২০১৭ এর বাংলা প্রথম পত্র প্রশ্ন ও সমাধান



 দেশ স্বাধীন হয়েছে প্রায় অর্ধ - শতাব্দী হতে চলল । আজও ক্ষুধা , দারিদ্র্য , অশিক্ষা থেকে মুক্তি মেলেনি । আজও পাহাড়ি - বাঙালি সংকট আমাদের স্বাধীনতার স্বাদ গ্রহণের অন্তরায় । এই অন্তরায় অতিক্রম করে দেশকে আলােকিত করতে প্রয়ােজন যােগ্য নেতৃত্বের । যে নেতৃত্ব আনবে সেই আলাের ঝর্ণাধারা । যেমনটি এনেছিলেন ১৯৭১ সালে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান।


নিলক্ষা ' শব্দের অর্থ কী ?


উওর:
নিলক্ষা ' শব্দের অর্থ— ' দৃষ্টিসীমা অতিক্রমী ' 


 যখন শকুন নেমে আসে এই সােনার বাংলায় ' বলতে কী বােঝানাে হয়েছে ? 

উওর:
উদ্ধৃত পঙক্তি টি তে স্বাধীনতাবিরোধী দালাল এবং পাক হানাদার বাহিনীকে বোঝানো হয়েছে।

একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধে এদেশের মানুষের স্বাভাবিক জীবনযাপন বাকস্বাধীনতা হরণ করে নেয় কবিতার শকুন বলে আখ্যায়িত করেছেন। যখন বাংলায় শকুন রুপি এ অশুভ শক্তি নেমে আসে কবি তখন মনে করেন সামন্তবাদ সাম্রাজ্যবাদ বিরোধী সাহসী কৃষক নেতা নূরুলদীনের কথা।


উদ্দীপক ও ' নূরলদীনের কথা মনে পড়ে যায় ' কবিতার সাদৃশ্যপূর্ণ দিক কোনটি ? ব্যাখ্যা করাে ।

উওর:
যােগ্য নেতৃত্বের ভূমিকাই উদ্দীপক ও ' নূরলদীনের কথা মনে পড়ে যায় ' কবিতাটিকে সাদৃশ্যপূর্ণ করে তুলেছে ।

 আলােচ্য কবিতায় বলা হয়েছে নূরলদীনের কথা , যিনি ব্রিটিশবিরােধী আন্দোলনের এক সাহসী নেতা । কবির শিল্পভাষ্যে নূরলদীন এক চিরায়ত প্রতিবাদের প্রতীকে পরিণত হয়েছেন । সাধারণ মানুষের ন্যায্য দাবি আদায়ের জন্য তাকে সামন্তবাদ ও সাম্রাজ্যবাদের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করতে হয়েছে । অধিকার আদায়ের জন্য নূরলদীনের মতাে নেতা এভাবেই যুগে যুগে বাংলার মানুষকে প্রেরণা জোগাবেন , এটাই কবির প্রত্যাশা ।

 উদ্দীপকে স্বাধীনতার স্বাদ গ্রহণের পথে একাধিক অন্তরায়ের কথা বলা হয়েছে । সেইসঙ্গে এসব সমস্যার নিরসনে যােগ্য নেতৃত্বের প্রয়ােজনীয়তা উপলদ্ধি করা হয়েছে । ১৯৭১ সালে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান যেমন স্বাধীনতার ডাক দিয়েছিলেন , তেমনি এ সমস্যার । সমাধানেও চাই তারই মতাে সুদৃঢ় নেতৃত্ব । পাঠ্য কবিতায় যােগ্য নেতৃত্ব হিসেবে বলা হয়েছে নূরলদীনের কথা । নূরলদীনের ডাকে রংপুর । অণ্ডলের মানুষ যেমন ব্রিটিশদের বিরুদ্ধে জেগে উঠেছিল , তেমনি বঙ্গবন্ধুর পদাঙ্ক অনুসরণ করে জেগে উঠেছিল মুক্তিসেনারাও । এভাবে স্বাধীনতা অর্জন ও তাকে সার্থক করে তােলার জন্য সুযােগ্য নেতৃত্বের প্রতি ইঙ্গিত করা হয়েছে উদ্দীপক ও নূরলদীনের কথা মনে পড়ে যায় কবিতায় তা উভয়ের মধ্যে সাদৃশ্য রচনা করেছে ।

উদ্দীপকের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান নূরলদীনের কথা মনে পড়ে যায় কবিতায় নূরলদীনের আদর্শ ” - উক্তিটির যথার্থতা বিচার করাে । 


উওর:

উদ্দীপকের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান নূরলদীনের কথা মনে পড়ে যায় ' কবিতায় নূরলদীনের আদর্শ ” - উক্তিটি যথার্থ ।

নূরলদীনের কথা মনে পড়ে যায় কবিতা নুরুলদীন সকল স্বাধীনতাকামী মানুষের প্রেরণার উৎস। ইতিহাসের পাতায় লেখা তার কর্তৃত্বের স্বাক্ষর পরাধীন মানুষকে অন্যায়ের বিরুদ্ধে লড়াই করতে সাহস জোগায় । তার সাহসী চেতনা সবার জন্য অনুসরণীয়।

দ্দীপকে স্বাধীনতা অর্জনে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের অবদানের কথা বলা হয়েছে । তার যােগ্য নেতৃত্বেই বাংলার মানুষ স্বাধীনতা অর্জন । করতে সক্ষম হয়েছিল । এদিকে আলােচ্য কবিতায় বলা হয়েছে ব্রিটিশবিরােধী আন্দোলনের নেতা নূরলদীনের কথা । মুক্তিকামী মানুষের অধিকার চেতনায় তিনি ছিলেন ভাস্বর । 

পাঠ্য কবিতার নূরলদীন ও উদ্দীপকের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বৃহত্তর দৃষ্টিকোণ থেকে একই আদর্শে উজ্জীবিত । দুজনেই পরাধীন মানুষকে শােষণমুক্তি ও স্বাধীনতার স্বাদ দিতে চেয়েছিলেন । তারা মানুষের চোখে মুক্তির স্বপ্ন দেখিয়েছিলেন এবং তা বাস্তবায়নে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন । নূরলদীন ব্রিটিশদের অন্যায়ের বিরুদ্ধে মাথা তুলে দাঁড়িয়েছিলেন । আর বঙ্গবন্ধু পাকিস্তানি অত্যাচারী শাসকদের বিরুদ্ধে বাংলার জনগণকে ঐক্যবদ্ধ করেছিলেন । তাই বলা যায় , প্রশ্নোক্ত উক্তিটি যথার্থ । উত্তরের সার স্থান , কাল ও শত্রুপক্ষ ভিন্ন হলেও নূরলদীন ও বঙ্গবন্ধু উভয়েই অধিকার আদায়ের জন্য সাধারণ মানুষকে সংগ্রামী হতে ও লড়াই করতে শিখিয়েছেন । তাই প্রশ্নোক্ত উক্তিটি যথার্থ ।




সৃজনশীল প্রশ্ন 
 
এইচএসসি দিনাজপুর বোর্ড ২০১৭ এর বাংলা প্রথম পত্র প্রশ্ন ও সমাধান


 শিক্ষিত মানুষের কালচারই ধর্ম আর সাধারণ মানুষের ধর্মই কালচার । এ কারণে দরিদ্র অঞ্চলে ধর্মের অপব্যাখ্যা দিয়ে যুগে যুপে গড়ে তােলা হয়েছে বিভিন্ন ধর্মীয় সংগঠন । যেখানে সাধারণ মানুষের সরল বিশ্বাসকে পুঁজি করে কেন্দ্রে থাকা নেতারা গড়ে তােলেন সম্পদের পাহাড় । এমনই একজন আধ্যাত্মিক নেতা হলেন শফিউলাহ । যিনি ভক্তের সাথে সাক্ষাতের নাম করে সিঙ্গাপুর যান নিজের চিকিৎসার জন্য । আর ভক্তদের চিকিৎসার জন্য মহৌষধ হলো তার পড়া পানি । 


রহিমার পেটে কয়টি প্যাচ ? 


উওর:
রহিমার পেটে চৌদ্দোটি প্যাচ ।

মজিদ কীভাবে মহব্বতনগর গ্রামে শিকড় গেড়েছিল ? 


উওর:
 মানুষের খােদাভীতিকে কাজে লাগিয়ে মাজার ব্যবসার মাধ্যমে মজিদ মহব্বতনগর গ্রামে শিকড় গেড়েছিল । 

এক নিরাকপড়া ( বাতাসহীন স্তব্দ গুমােট আবহাওয়া ) শ্রাবণের দুপুরে মহব্বতনগর গ্রামে আগমন ঘটে মজিদের । সেখানে একটি পুরােনাে কবরকে মােদাচ্ছের পীরের মাজার বলে দাবি করে সে । এই কবরকে কেন্দ্র করে মজিদ তার ধর্মব্যবসা শুরু করে । কিছুদিনের মধ্যেই সেখানে ঝকঝকে পয়সা , ঘষা পয়সা , সিকি - দুয়ানি - আধুলি , সত্যি টাকা , নকল টাকার ছড়াছড়ি হতে থাকে । এতে অর্থনৈতিকভাবে সমৃদ্ধ হয় সে । একই সাথে , রহিমাকে বিয়ে করে সংসার শুরু করে মজিদ । মানুষের মনে ধর্মভীতি জাগিয়ে সমাজেও নিজের আধিপত্য গড়ে তােলে সে । আর এভাবেই ধর্মকে পুঁজি করে মজিদ মহব্বতনগর গ্রামে শিকড় গেড়েছিল ।

 

উদ্দীপকের শফিউল্লাহ ' লালসালু ' উপন্যাসের কোন চরিত্রের সাথে কতটুকু সাদৃশ্যপূর্ণ ? - ব্যাখ্যা করাে । 


উওর:
উদ্দীপকের শফিউল্লাহ ' লালসালু উপন্যাসের মজিদ চরিত্রের সাথে অনেকাংশেই সাদৃশ্যপূর্ণ ।

 লালসালু ' উপন্যাসের মজিদ মহব্বতনগর গ্রামের সরলপ্রাণ মানুষকে পীরের দোহাই দিয়ে নানা সমস্যার সমাধান দেয় । পীরের খাদেম হিসেবে তার ঐশ্বরিক ক্ষমতা আছে বলে সকলের কাছে প্রমাণ করতে চায় সে । অথচ নিজের সমস্যার সমাধানই সে করতে পারে না সে নিজে নিঃসন্তান হলেও গ্রামের মেয়েদের সন্তানপ্রাপ্তির জন্য চিকিৎসা করে । এমনকি তার ভণ্ডামিতে খালেক ব্যাপারীর স্ত্রীকেও তালাকপ্রাপ্ত হয়ে বাবার বাড়ি চলে যেতে হয় ।

 উদ্দীপকের শফিউল্লাহ আলােচ্য উপন্যাসের মজিদের মতােই প্রতারক । তিনি একজন আধ্যাত্মিক নেতা । তিনি ভক্তদের সাথে সাক্ষাত কার কথা বলে সিঙ্গাপুর গেলেও , নিজের চিকিৎসা করানােই তার মূল লক্ষ্য । আর ভক্তদের চিকিৎসার জন্য তার পড়া পানি দেন । শফিউল্লাহর ক্ষমতা না থাকা সত্ত্বেও ভক্তদের কাছে তিনি তার ক্ষমতা জাহির করেন । উপন্যাসের মজিদের মতোই ভণ্ডামি দেখা যায় উদ্দীপকের শফিউল্লাহর মাঝেও । বস্তুত , নিজেদের স্বার্থ হাসিল করার জন্য মানুষকে ধোকা দেয় উপন্যাসের মজিদ এবং উদ্দীপকের শফিউল্লাহ । 

উদ্দীপকের লালসালু উপন্যাসের আংশিক ছায়াপাত ঘটেছে মন্তব্যটি মূল্যায়ন করো।

উওর:
উদ্দীপকে ' লালসালু উপন্যাসের আংশিক ছায়াপাত ঘটেছে " - মন্তব্যটি যথার্থ । 

লালসালু উপন্যাসের কাহিনি গ্রামীণ সমাজজীবনের বাস্তবতাকে ঘিরে আবর্তিত । ভণ্ড মজিদ সাধারণ মানুষের সরলতার সুযােগে তাদেরকে ধর্মের কঠিন বেড়াজালে আটকে রাখে । ত্যর স্বার্থসিদ্ধির জন্য সে মানুষকে মাজারের দিকে আকৃষ্ট করতে চায় । মূখ মানুষেরাও মজিদের সল কথা বিশ্বাস করে । আবার , উপন্যাসের আক্কাস , জমিলা , তাহের - কাদেরের বাবা মজিদের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করতে চাইলে সে তা দৃঢ়তার সাথে দমন করে । 

উদ্দীপকে স্বার্থান্বেষী আধ্যাত্মিক নেতা হিসেবে শফিউল্লাহ চরিত্রটি উপস্থাপন করা হয়েছে । তিনি সাধারণ মানুষের সরল বিশ্বাসকে পুঁজি করে ধর্মের অপব্যাখ্যা দিয়ে নিজের অর্থ - সম্পদ বৃদ্ধি করেন । নিজের চিকিৎসার জন্য তিনি সিঙ্গাপুর গেলেও ভক্তদের জনা পানিপড়ার ব্যবস্থা করেন । ভক্তদের অজ্ঞতা ও অন্ধবিশ্বাসকে কাজে লাগিয়ে তিনি এই ভণ্ডামির ব্যবসা চালিয়ে যান । আলােচ্য উপন্যাসের মজিদও গ্রামের মানুষের অন্ধবিশ্বাসকে কাজে লাগিয়ে অর্থনৈতিক প্রতিষ্ঠা লাভ করে ।

 লালসালু ' উপন্যাসের কাহিনি অত্যন্ত সুসংহত ও সুবিন্যস্ত । এখানে লেখক গ্রামীণ কুসংস্কারাচ্ছন্ন জীবনব্যবস্থার পাশাপাশি নারী - পুরুষ , তরুণ - বৃদ্ধ সকলের জীবনের বাস্তব চিত্র তুলে ধরেছেন । অন্যদিকে , উদ্দীপকে শুধু ধর্মতন্ত্রের কুপ্রভাব সম্পর্কে আলােচনা করা হয়েছে । আলােচ্য উপন্যাসে পুরুষতন্ত্রের বিস্তার , নারী জীবনের অসহায়ত্ব , সক্রিয় জোতদার সমাজের কাছে দরিদ্র মানুষের পরাজয় আর তারুণ । এসবকিছুর সংমিশ্রণ ঘটেছে । তাই বলা যায় , প্রশ্নোত্ত মন্তব্যটি ' লালসালু ' উপন্যাস ও উদ্দীপকের আলােকে সঠিক ও যথার্থ । 



সৃজনশীল প্রশ্ন

এইচএসসি দিনাজপুর বোর্ড ২০১৭ এর বাংলা প্রথম পত্র প্রশ্ন ও সমাধান


 
আবেদ আলী এতিম জালালকে আদর , ভালােবাসা আর বিশ্বাস - ভরসা দিয়ে বড় করে তােলেন । তাকে বিশ্বাস করে হাট বাজারে পাঠান বিকিকিনি করতে । প্রতিবেশীরা সাবধান করলেও আবেদ আলী তা কানে তােলেননি । ১৯৭১ সালে যুম্ব শুরু হলে আবেদ । কালী বাড়ির ভেতরে থেকে জালালকে বাইরে থেকে তালা লাগিয়ে চলে যেতে বলেন । কিন্তু জালাল প্রতিশ্রুতি দিয়েও লােভে পড়ে আবেদ । আলীকে ধরিয়ে দেয় রাজাকার আর পাক হানাদারদের হাতে । 

সিরাজউদ্দৌলার হত্যাকারীর নাম কী ?


উওর:
সিরাজউদ্দৌলার হত্যাকারীর নাম মােহাম্মদি বেগ । 


ব্রিটিশ সিংহ ভয়ে লেজ গুটিয়ে নিলেন , এ বড় লজ্জার কথা'— কে , কেন এ কথা বলেছেন ? 


উওর:
ফোর্ট উইলিয়াম দুর্গ নবাব সিরাজউদ্দৌলার আক্রমণের মুখে ইংরেজরা পালিয়ে যাওয়াই প্রশ্নোক্ত মন্তব্যটি করা হয়েছে।

ফোর্ট উইলিয়াম দুর্গ ইংরেজরা নবাবের বিনা অনুমতিতে সামরিক শক্তি বৃদ্ধি করে। তাই নবাব ওই দুর্গ আক্রমণ করেন।ইংরেজ সৈন্যরা নবাবের সনদের আক্রমণের মুখে দিশেহারা হয়ে পড়লে ক্যাপ্টেন মিনচিন কাউন্সিলর ফকল্যান্ড নৌকা যোগে দুর্গ থেকে পালিয়ে আত্মরক্ষা করেন। শেষ পর্যায়ে ক্যাপ্টেন ক্লেটন ও গর্ভনর ড্রেক এর সাথে পরামর্শের নাম করে আত্মরক্ষার্থে সব প্রতিজ্ঞা ভুলে দুর্গ থেকে পালিয়ে যান।তাই ব্যাঙ্গার্থে প্রশ্নোক্ত কথাটি বলা হয়েছে।

উদ্দীপকে ‘ সিরাজউদ্দৌলা ' নাটকের কোন দিকটি ফুটে উঠেছে ? ব্যাখ্যা করাে ।


উওর:
উদ্দিপকে ‘ সিরাজউদ্দৌলা ' নাটকের মােহাম্মদি বেগের কৃতঘ্ন আচরণের দিকটি ফুটে উঠেছে।

 ‘ সিরাজউদ্দৌলা ' নাটকে মােহাম্মদি বেগ একজন কৃতঘ্ন ব্যক্তি । সে মিরজাফরের পুত্র মিরনের আহ্বানে নবাব সিরাজউদ্দৌলাকে হত্যা করতে সম্মত হয় । নবাবের পিতা জয়নুদ্দিন অনাথ বালক মােহাম্মদি বেগকে আদর - যত্নে লালন করেছিলেন । কিন্তু মােহাম্মদি বেগ সেই উপকারের কোনাে প্রতিদান দেয়নি । উল্টো অর্থের লােভে নিষ্ঠুরভাবে পিটিয়ে ও ছুরিকাঘাত করে নবাব সিরাজউদ্দৌলাকে হত্যা করে । 

উদ্দীপকের আবেদ আলী যেন সিরাজউদ্দৌলার পিতার প্রতিচ্ছবি । আর জালাল আলােচ্য নাটকের মােহাম্মদি বেগের কৃতগ্নতার কথাই স্মরণ করিয়ে দেয় । কেননা , আবেদ আলী অনাথ জালালকে ছােটবেলা থেকে আদর ও ভালােবাসায় বড় করে তুলেছিলেন । অথচ সেই জালালই উপকারির অপকার করেছে । এ ধরনের আচরণই দেখতে পাই আলােচ্য নাটকের মােহাম্মদি বেগ চরিত্রে ।


উদ্দীপকে ' সিরাজউদ্দৌলা ' নাটকের পুরাে ভাব প্রকাশিত না হলেও একটি দিক মাত্র প্রকাশিত হয়েছে ” - উক্তিটির যথার্থতা নিরূপণ করাে।


উওর:

উদ্দীপকে ‘ সিরাজউদ্দৌলা ' নাটকের পুরাে ভাব প্রকাশিত না হলেও একটি দিক মাত্র প্রকাশিত হয়েছে- উক্তিটি যথার্থ ।

 সিরাজউদ্দৌলা ' নাটকে নবাব সিরাজউদ্দৌলার পরাজয়ের করুণ কাহিনি বিধৃত হয়েছে । দেশপ্রেম ও সমর - সামর্থ্যের কমতি ছিল না সিরাজউদ্দৌলার । তার অভাব ছিল কেবল বিশ্বাসী লােকের । তাই পলাশির যুদ্ধে তাকে বরণ করতে হয়েছে নির্মম পরিণতি । মূলত “ সিরাজউদ্দৌলা ' নাটকে নবাব পরাজিত হলেও তাঁর দেশপ্রেমই এ নাটকের মূল উপজীব্য । 

উদ্দীপকে জালালের আচরণে কৃতঘ্ন মানুষের বাস্তব রূপ ফুটে উঠেছে । আবেদ আলীর কাছে লালিত - পালিত হলেও সে তার বিশ্বাসের মর্যাদা লঙ্ন করেছে । বিপদাপন্ন অবস্থায় প্রতিশ্রুতি দেওয়া সত্ত্বেও লােভের বশবর্তী হয়ে আবেদ আলীকে শত্রুর হাতে ধরিয়ে দিয়েছে সে । এ ধরনের আচরণ জালালকে ঘৃণ্য চরিত্রের মানুষ হিসেবেই চিহ্নিত করেছে । 

উদ্দীপকে সিরাজউদ্দৌলা ' নাটকের পুরাে ভাব প্রকাশিত হয়নি । এ নাটকের করুণরসের বিস্তার উদ্দীপকে নেই । তবে উদ্দীপকটি সিরাজউদ্দৌলার বন্দিদশা ও মৃত্যুকে ইঙ্গিত করেছে । তাকে হত্যা করেছিল মােহাম্মদি বেগ । তার এ কাজটি ছিল অকৃতজ্ঞ এক খুনির আচরণ । কারণ , তাকে সযত্নে লালন করেছিলেন সিরাজউদ্দৌলার পিতা । আলােচ্য নাটকের মােহাম্মদি বেগের মতােই কৃতঘ্ন আচরণ দেখা যায় উদ্দীপকের জালালের মধ্যে । কিন্তু এ প্রসঙ্গটিই নাটকের মূলভাব নয় । নাটকের আখ্যানে বাংলার ইতিহাসের এক কালাে অধ্যায় বর্ণিত হয়েছে । সে অধ্যায় যাদের মতাে অকৃতজ্ঞের হাতে রচিত হয়েছে , তাদেরই প্রতিনিধি উদ্দীপকের জালাল ও নাটকের মােহাম্মদি বেগ । অতএব , একথাই প্রতীয়মান হয় যে , উদ্দীপকে ' সিরাজউদ্দৌলা ' নাটকের পুরাে ভাব প্রকাশিত না হলেও একটি বিশেষ দিক প্রকাশিত হয়েছে । 


Post a Comment

0Comments

প্রতিদিন ১০০-২০০ টাকা ইনকাম করতে চাইলে এখানে কমেন্ট করে জানান। আমরা আপনায় কাজে নিয়ে নেবো। ধন্যবাদ

Post a Comment (0)