এইচএসসি দিনাজপুর বোর্ড ২০১৬ এর বাংলা প্রথম পত্র প্রশ্ন ও সমাধান

এইচএসসি দিনাজপুর বোর্ড ২০১৬ এর বাংলা প্রথম পত্র  প্রশ্ন ও সমাধান


আসসালামুআলাইকুম ওয়ারাহমাতুল্লাহি বারকাতুহু। প্রিয় শিক্ষার্থী বন্ধুরা কেমন আছো তোমরা সবাই? আশা করি আল্লাহর রহমতে সবাই ভালো আছ এবং সুস্থ আছো। আলহামদুলিল্লাহ আমিও ভাল আছি।


প্রতিবারের মতো আমরা আজ তোমাদের সাথে দিনাজপুর বোর্ড বাংলা ১ম পত্র এইচএসসি ২০১৬ নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করব। এবং বোর্ডের সকল প্রশ্ন ও প্রশ্নের সমাধান তুুলে ধরবো।


                            
                                       গদ্যাংশ


সৃজনশীল প্রশ্ন নং ১
এইচএসসি দিনাজপুর বোর্ড ২০১৬ এর বাংলা প্রথম পত্র  প্রশ্ন ও সমাধান





প্রার্থনা বেশি কিছু নয়
আমার ঘামের দাম।
তাও দেবে না কি?
তবে শোনো ধান কাটা শেষ 
কাস্তের অবকাশ
 সুতরাং সময় কাটাতে
 তোমার কন্ঠ নালী 
এবার সে ছোবে।



মার্জার অর্থ কি?

উওর:মার্জার অর্থ বিড়াল।

সমাজের ধনবৃদ্ধির অর্থ ধনীর ধনবৃদ্ধি ব্যাখ্যা করো।


উওর: সমাজের ধনবৃদ্ধি সম্পর্কে বিড়ালের মত প্রকাশ পেয়েছে আলোচ্য উক্তিটিতে।

কমলাকান্তের মতে যার যত ক্ষমতা সে তত ধন  সঞ্চয় করতে না পারলে কিংবা সঞ্চয় করে চোরের জ্বালায় নির্বিঘ্নে ভোগ না করতে পারলে কেউ ধন সঞ্চয় করবে না। তাতে সমাজের ধনবৃদ্ধি হবে না। কিন্তু সমাজের ধনবৃদ্ধি সম্পর্কে বিড়ালের মত ভিন্ন। তার মতে সমাজের ধনবৃদ্ধির মূলত ধোনির ধনবৃদ্ধি। কারণ তাতে দরিদ্রদের অবস্থার কোনো পরিবর্তন হয় না। প্রশ্নোক্ত উক্তিটিতে বিড়ালের স্বগতোক্তিতে লেখক সমাজের ধনবৃদ্ধি সম্পর্কিত আত্মোপলব্ধি তুলে ধরেছেন।


উদ্দীপকের বিড়াল প্রবন্ধে বর্ণিত বঞ্চনার কথা কতটা প্রতিফলিত হয়েছে আলোচনা করো।


উওর:বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় রচিত বিড়াল প্রবন্ধের সিংহভাগ জুড়ে বর্ণিত হয়েছে দরিদ্রের বঞ্চনার কথা।

এই রচনায় বিড়ালের কন্ঠে পৃথিবীর সকল বঞ্চিত নিষ্পেষিত দলিতের প্রতিবাদ মর্মবেদনা উচ্চারিত হয়েছে।তার মতে ধনীরা পাচজনের আহার একা সংগ্রহ করায় এবং তাদের উদ্বৃত্ত সম্পদ বন্টন করে না দেওয়ায় দরিদ্রত চুরি করতে বাধ্য হহয়। এক্ষেত্রে দোষ চোরের নয়, দোষ কৃপণ ধনীর। এছাড়া বিড়াল তাঁর শারীরিক অবস্থা বর্ণনা করতে গিয়ে যা বলেছেন তাতে দরিদ্রদের বঞ্চনার চিত্র সম্যকভাবে উন্মোচিত হয়। উদ্দীপকের সংক্ষিপ্ত পরিসরে এই বঞ্চনার দিকটি উপস্থাপিত হয়েছে।

উদ্দীপকের শ্রমজীবী মানুষের অধিকার চেতনা প্রকাশ পেয়েছে। যেখানেই বঞ্চিত মানুষের দাবি বেশি কিছু নয় শুধু তার শ্রমের ন্যায্য মূল্য।কেননা শ্রমজীবী মানুষের শ্রম ও গামে সভ্যতার চাকা গতিশীল হলেও তারা সে শ্রমের মূল্য পায় না।এই সংক্ষিপ্ত কথনে আমরা বুঝতে পারি সমাজের দরিদ্ররা ধনীদের কাছ থেকে কোন সাহায্য তো পাই না এমনকি তাদের শ্রমের মূল্য পর্যন্ত ধনীরা দিতে চায়না।অন্যদিকে বিড়াল রচনায় ধনী-দরিদ্রের বৈষম্য তুলে ধরার পাশাপাশি এরূপ অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ ও ক্ষোভ প্রকাশ পেয়েছে। যেমনটি প্রকাশ পেয়েছে উদ্দীপকেও।অর্থাৎ বিড়াল প্রবন্ধে দরিদ্রের বঞ্চনার যে চিত্র রয়েছে তার ইঙ্গিতপূর্ণ উল্লেখ আছে উদ্দীপকে।


 বিড়াল প্রবন্ধে বর্ণিত অধিকারবোধের সশস্ত্র প্রকাশ ঘটেছে উদ্দীপকে মন্তব্যটি মূল্যায়ন করো।


উওর:বিড়াল প্রবন্ধে বিড়ালের সোশিয়ালিস্টিক মনোভাবের মধ্যে দিয়ে দরিদ্রের অধিকারবোধ প্রকাশ পেয়েছে যার প্রকাশ  আমরা উদ্দিপকে দেখতে পাই।

সাম্যবাদ বিমুখ ইংরেজ শাসিত ভারতবর্ষে বঙ্কিমচন্দ্র তার রচনায় একটি বিড়ালের মুখ দিয়ে শোষিত ধনী-দরিদ্রের বৈষম্য ও সংগ্রামের কথা তুলে ধরেছেন।সেখানে বিড়াল পৃথিবীর সকল বঞ্চিত নিষ্পেষিত দলিতের ক্ষোভ প্রতিবাদ মর্মবেদনার ভাষ্যকার।

উদ্দীপকে বিড়ালের উচ্চকিত অধিকারবোধের সশস্ত্র প্রকাশ দেখে আমরা। উদ্দীপকের প্রথমে আছে কিভাবে ধনী-দরিদ্র কে তার ন্যায্য অধিকার থেকে বঞ্চিত করছে। কিভাবে দরিদ্রের প্রার্থিত শ্রম এর দাম দেয়া হচ্ছে না তাদের।আর তাদের দীর্ঘ বঞ্চনা থেকেই ক্ষুব্ধ কৃষক প্রকাশ করছে তার সশস্ত্র অধিকারবোধ।যে কাস্তে শ্রমজীবীর অর্থ উপার্জনের উপায় শ্রমজীবী কৃষক তার পারিশ্রমিক থেকে বঞ্চিত হলে সেই কাস্তেকেই অস্ত্রে পরিণত করবে।শোষকের কণ্ঠনালীর রক্ত পান করে সেই কাস্তে দরিদ্রের অধিকার আদায় করবে।

বিড়াল রচনা এবং উদ্দীপকে সমাজের অবহেলিত লাঞ্ছিত সুবিধাবঞ্চিত দরিদ্র মানুষের অধিকার সচেতনতা প্রকাশ পেয়েছে। বিড়ালের মতে প্রয়োজনের অতিরিক্ত ধর্ম থাকতেও ধনীরা যে গরিবের দিকে মুখ তুলে তাকায় না তাতেই সমাজের চুরি রাহাজারী সহ অনেক অরাজকতা ঘটে। আর এজন্য দরিদ্রের চেয়ে বেশি দায়ী কৃপণ ধনী। বিড়ালের ভাষ্য অনাহারে মরে যাবার জন্য এই পৃথিবীতে কেউ আসে নাই।বিড়াল রচনায় বিড়ালের সোশিয়ালিস্টিক কথাবার্তায় যে অধিকার সচেতনতা কথা ব্যক্ত হয়েছে উদ্দীপকে সেই অধিকারীই সশস্ত্র প্রকাশ ঘটেছে।সে দিক বিবেচনায় নিয়ে আলোচনা ও উদ্দীপকের আলোকে প্রশ্নোক্ত মন্তব্যটি যথার্থ।




প্রশ্ন নং ২

এইচএসসি দিনাজপুর বোর্ড ২০১৬ এর বাংলা প্রথম পত্র  প্রশ্ন ও সমাধান

এইচএসসি দিনাজপুর বোর্ড ২০১৬ এর বাংলা প্রথম পত্র  প্রশ্ন ও সমাধান


বন্ধু তোমার ছাড়ো উদ্বেগ সুতীক্ষ্ণ করো চিত্ত
বাংলার মাটি দুর্জয় ঘাঁটি বুঝে নিক দুর্বৃত্ত
মুঢ় শত্রুকে হানো স্রোত রুখে তন্দ্রা কে করো ছিন্ন,
একাগ্র দেশে শত্রুরা এসে হয়ে যাক নিশ্চিহ্ন।
ঘরে তোল ধান বিপ্লবী প্রাণ প্রস্তুত রাখো কাস্তে 
গাও সারি গান হাতিয়ারে শান দাও আজ উদয়াস্তে।

বায়ান্নর দিনগুলো কোন জাতীয় রচনা?


উওর:বায়ান্নর দিনগুলো বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আত্মজীবনীমূলক রচনা।

ভরসা হলো আর দমাতে পারবে না-কেন?


উওর:বাংলা ভাষা পূর্ব পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষা হতে যাচ্ছে আত্মবিশ্বাস থেকে শেখ মুজিবুর রহমান আলোচ্য মন্তব্যটি করেছেন।

১৯৫২ সালের ২১শে ফেব্রুয়ারি ছাত্র-জনতার ওপর গুলির খবর গ্রামগঞ্জে পৌঁছালে সেখানে প্রতিবাদ শুরু হয়। মানুষ বুঝতে পারে শাসকগোষ্ঠী বাঙ্গালীদের মুখের ভাষা কেড়ে নিতে চায়। অধিকার আদায়ে তাই তারা ঐক্যবদ্ধ হয়। বাঙালির এই জাগরণ দেখে আত্মবিশ্বাসী বঙ্গবন্ধু এই ভেবে ভরসা পানি পাকিস্তানীরা বাঙ্গালীদের আর দমাতে পারবে না। বাংলা ভাষাকে রাষ্ট্রভাষা না করে তাদের আর কোন উপায় নেই।

উদ্দীপকে বায়ান্নোর দিনগুলি প্রবন্ধের প্রতিবাদের ভাষার যে বৈসাদৃশ্য ফুটে উঠেছে তা নিজের ভাষায় লেখ।


উওর:
বায়ান্নর দিনগুলাে ' রচনায় অন্যায়ের বিরুদ্ধে অহিংস প্রতিবাদের পরিচয় পাওয়া যায় , যা উদ্দিপকের প্রতিবাদের ভাষার বিপরীত । 

বায়ান্নর দিনগুলাে রচনায় পাকিস্তানি শাসকগােষ্ঠীর বিরুদ্ধে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিবাদের স্বরূপ প্রকাশিত হয়েছে । আলােচ্য রচনায় বর্ণিত হয়েছে , বঙ্গবন্ধু পাকিস্তানি শাসকগােষ্ঠী কর্তৃক রাজবন্দিদের বিনাবিচারে বন্দি রাখার ও ভাষা । আন্দোলনকারীদের ওপর নির্বিচারে গুলি চালানাের প্রতিবাদ করেছেন । কিন্তু এই প্রতিবাদের ধরন ছিল অহিংস । তিনি অনশন ধর্মঘট পালনের মাধ্যমে শাসকগােষ্ঠীর অন্যায় আচরণের প্রতিবাদ করেছেন ।

বাঙালি হতে জাগ্রত হওয়ার আহ্বান জানিয়ে বিপ্লবের মাধ্যমে শত্রুকে প্রতিহত করার কথা ধ্বনিত হয়েছে । এখানে প্রতিবাদের ভাষা অসহিংস নয়, সশস্ত্র বিপ্লবের। কবিতাংশে বাংলাদেশকে দুর্জয় ঘাঁটি উল্লেখ করে কবি এদেশ থেকে শত্রুদের নিশ্চিহ্ন করার প্রত্যয় ব্যক্ত করছেন । এর এজন্য প্রয়ােজনে অস্ত্র প্রস্তুত রাখার কথাও তিনি বলেছেন । বায়ান্নর দিনগুলাে রচনায়ও শত্রুর বিরুদ্ধে প্রতিবাদের বাণী ধ্বনিত হয়েছে। কিন্তু এই প্রতিবাদের ধরন অহিংস।ফলে উদ্দীপকের প্রতিবাদের ভাষা বাহান্নর দিনগুলি রচনায় অবনিত প্রতিবাদের ভাষা থেকে ভিন্ন হয়ে উঠেছে।


উদ্দীপকটিতে বায়ান্নর দিনগুলি রচনায় চেতনা সার্থকভাবে প্রতিফলিত হয়েছে-মন্তব্যটি বিশ্লেষণ করো।


উওর:

 বায়ান্নর দিনগুলাে ’ রচনায় বর্ণিত রক্ত বরের হতিরে ঘর মতাে ' রচনায় বাঙালির অধিকার আদায়ে সংগ্রামী চেতনার প্রতিফলন ঘটেছে , যা উদ্দীপকেরও উপজীব্য ।

 আলোচ্য রচনায়  ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলনের পূর্বের ও আন্দোলন চলাকালীন বাংলাদেশের আর্থ - সামাজিক ও রাজনৈতিক অবস্থার চিত্র অংকিত হয়েছে । এখানে দেখা যায় , বাঙালির মুখের ভাষা কেড়ে নেওয়ার ষড়যন্ত্র বাস্তবায়ন করতে পাকিস্তানি শাসকগােষ্ঠী বাঙালিদের ওপর চড়াও হয়।শেখ মুজিবুর রহমান পাকিস্তানি শাসকদের এ অন্যায় আচরণের প্রতিবাদ করেন।

উদ্দীপকের দেশকে শত্রুমুক্ত করতে ঐক্যবদ্ধ সংগ্রামের আহ্বান জানানাে হয়েছে । কবি বাঙালির অজেয় শক্তির উত্থান কামনা করেছেন , যে শহর হাত রান হয়ে যাবে কবিতাংশে অধিকার আদায়ের লক্ষ্যে শত্রুর বিরুদ্ধে সংগ্রামের জন্য প্রস্তুত থাকার আহ্বান ধ্বনিত হয়েছে।

বায়ান্নর দিনগুলাে রচনায় বর্ণিত হয়েছে , বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান পাকিস্তানি শাসকগােষ্ঠীর অপশাসন ও বিনাবিচারে রাজবন্দিদের কারাগারে আটক রাখার প্রতিবাদে জেলের ভেতরে অনশন করেন । বাঙালিদের শােষণের হাত থেকে মুক্ত করার জন্য নিজের প্রাণ বিপন্ন করেও তিনি অনশন ধর্মঘট অব্যাহত রাখেন । আলােচ্য উদ্দীপকেও শত্রুর বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করার কথা বলা হয়েছে । বস্তুত , বায়ান্নর দিনগুলাে ' ও আলােচ্য উদ্দীপক উভয়ক্ষেত্রেই বাঙালির অধিকার আদায়ে সংগ্রামী চেতনার কথা ব্যক্ত হয়েছে । তাই বলা যায় , “ উদ্দীপকটিতে বান্নের দিনগুলাে রচনার চেতনা সার্থকভাবে প্রতিফলিত হয়েছে " - মন্তব্যটি যথার্থ ।



সৃজনশীল প্রশ্ন নং ৩



নীরব ভাষায় বৃক্ষ আমাদের সার্থকতার গান গেয়ে শােনায় । অনুভুতির কান দিয়ে সে গান শুনতে হবে । তাহলে বুঝতে পারা যাবে জীবনের মানে বৃদ্ধি ধর্মের মানে তাই।প্রকৃতির যে ধর্ম মানুষের সে ধর্ম পার্থক্য কেবল তরুলতা জীবজন্তুর বৃদ্ধির ওপর তাদের নিজেদের কোনো হাত নেই মানুষের বৃদ্ধির ওপর তার নিজের হাত রয়েছে। আর এখানেই মানুষের মর্যাদা। মানুষের বৃদ্ধি কেবল দৈহিক নয় আত্মিক ও।মানুষকে আত্মা সৃষ্টি করে নিতে হয় তার তৈরি পাওয়া যায় না।


পৃথিবীর প্রথম জাদুঘর কোথায় ছিল?


উওর:
পৃথিবীর প্রথম জাদুঘর হিল মিশরের আলেকজান্দ্রিয়া নগরে ।


 জাদুঘরের প্রধান কাজ কি?


উওর: বৈচিত্র্যপূর্ণ এবং ঐতিহাসিক নিদর্শন সংরক্ষণ , প্রদর্শন ও জাতিসত্তার পরিচয় প্রদানের মাধ্যমে জ্ঞান ও আনন্দ দান জাদুঘরের প্রধান কাজ।

এটি একটি সর্বজনীন প্রতিষ্ঠান । সংরক্ষণ , প্রদর্শন ও গবেষণার জন্যে জাদুঘরে মানব সভ্যতা ও সংস্কৃতির নানারকম নিদর্শন সংগ্রহ করে রাখা হয় । জাদুঘরে মানুষ বিভিন্ন জাতিসস্তার পরিচয় লাভ করতে পারে । জানা ও অজানা বহুবিধ জিনিসকে চাক্ষুষ করতে পারার ফলে মানুষের জান সমৃদ্ধ হয় । মানুষ অন্তরে আনন্দ অনুভব করে । আর এগুলােই জাদুঘরের প্রধান কাজ । 


উদ্দীপকটি সাথে জাদুঘরে কেন যাব প্রবন্ধের বিষয় গত অনৈক্য করেছে। আলোচনা করো।


উওর:

জাদুঘরে কেন যাব প্রবন্ধে জাদুঘরের বিভিদ দিক আলোচিত হয়েছে কিন্তু উদ্দীপকের জীবনের সঙ্গে সম্পর্ক হয় প্রবন্ধ থেকে ভিন্ন।

জাদুঘরে কেন যাব প্রবন্ধের লেখক জাদুঘরের উদ্ভব , বিকাশ , ক্রমপরিবর্তন , শ্রেণিবিভাগ , সমাজে এর উপযােগিতা ইত্যাদি বিষয়ে আলােকপাত করেছেন । আলেকজান্দ্রিয়ায় বিশ্বের প্রথম জাদুঘর স্থাপিত হওয়া থেকে আজ অবধি জাদুঘর কীভাবে বিকশিত হয়েছে সে সম্পর্কে আলােচনা করেছেন । জাদুঘরের বিবর্তনের সঙ্গে যে মানুষের নানাবিধ বিপ্লব এবং ক্রমবর্ধমান গণতন্ত্রায়ণ সম্পর্কিত , সে বিষয়েও নানা তথ্য উপস্থাপন করেছেন । এছাড়া সামাজিক ও রাষ্ট্রীয় জীবনে জাদুঘরের উপযােগিতা সম্পর্কে বিভিন্ন যুক্তি তুলে ধরা হয়েছে প্রবন্ধটিতে । 

উপরে বিষয়বস্তু জাদুঘরে কেন যাব ' প্রবন্ধের বিষয়ের সঙ্গে সাদৃশ্যপূর্ণ নয় । কারণ প্রবন্ধের বিষয় যেখানে জাদুঘর , উদ্দীপকের বিষয় সেখানে বৃক্ষ ও মানুষের সম্পর্ক উদ্দীপকে মানুষ কীভাবে বৃক্ষের কাছ থেকে প্রেরণা গ্রহণ করতে পারবে তা বর্ণিত হয়েছে । তাছাড়া জীবজন্তুর সঙ্গে মানুষের ব্যবধানের বিষয়টিও ব্যক্ত হয়েছে উদ্দীপকে । তাই বলা যায় , উদ্দীপকটির সাথে ‘ জাদুঘরে কেন যাব ' প্রবন্ধের বিষয়গত অনৈক্য রয়েছে।


বৃক্ষের মতো জাদুঘর ও আমাদের সার্থকতা গান শোনায় তোমার মতামত বিশ্লেষণ করো।


উওর: বৃক্ষ ও জাদুঘর উভয়ই আমাদের আত্মবিশ্লেষণে উচু করে । এ বিবেচনায় আলােচ্য মন্তব্যটি যথার্থ । 

“ জাদুঘরে কেেন যাব ’ প্রবন্ধে জাদুঘরের গুরুত্ব তুলে ধরে এর প্রয়ােজনীয়তার ওপর আলােকপাত করা হয়েছে । বস্তুত জাদুঘর এমন এক সংগ্ৰহশালা যা বিভিন্ন নিদর্শনের মধ্য দিয়ে মানব সভ্যতার ইতিহাস ও ঐতিহাকে তুলে ধরে । জাদুঘর পরিদর্শন আমাদের আত্মসচেতন হরে তােলে । অতীতের নিদর্শনগুলাে বিশ্লেষণ করে আমরা ভবিষ্যতের দিশা খুঁজে পাই ।

 উদ্দীপকে বলা হয়েছে , নীরব ভাষায় বৃক্ষ আমাদের সার্থকতার গান গেয়ে শােনায় । অনুভূতির কান দিয়ে সে গান শুনতে হবে । তাহলে বােঝা যাবে জীবনের মানে বৃদ্ধি , ধর্মের মানেও তাই । অর্থাৎ বৃক্ষের জীবন ও ক্রমবর্ধনকে অনুসরণ করলে আমরাও নিজেদের জীবন সার্থক করতে পারব । এখানে বৃক্ষ যে আমাদের সার্থকতার গান শােনায় তাই উদ্দীপকের মুখ্য বিষয় ।

 জাদুঘর সভ্যতা ও সংস্কৃতির ধারক হিসেবে আমাদের সার্থকতার পরিচয় বহন করে । জাদুঘরে কেন যাব ' প্রবন্ধে জাদুঘরের উদ্ভব , ক্রমবিকাশ ,প্রকারভেদ এবং মানুষের জীবনে এর উপযােগিতা বিষয়ে আলােকপাত করা হয়েছে । জাদুঘরে প্রকৃতিসৃষ্ট ও মানবসৃষ্ট বিস্ময়কর ও বিৱল জিনিসের সংগ্রহ থাকে । এগুলাে মানুষের সৃজনশীলতার পরিচায়ক । এছাড়া জাদুঘর নির্মাণের মধ্যে মানুষের জ্ঞানস্পৃহা এবং শিকড়সনা মানসিকতার যে পরিচয় মেলে তাও মানুদের সার্থকতার পরিচয় বহন করে । বৃক্ষের জীবনের ক্রমবিকাশ লক্ষ করলে আমরা  তার সমস্ত  পরিবেশের উপকারের জন্য । আর এতেই তার জীবনের সার্থকতা । মানুষের জীবনের মূল লক্ষ্যও এই সার্থকতা অর্জনের মাঝে নিহিত । বৃক্ষ ও জাদুঘর উভয়ের মাধ্যমেই মানুষ আত্মপরিচয় লাভ করতে পারে । সেদিক বিবেচনায় বৃক্ষের মতাে জাদুঘরও আমাদের সার্থকতার গান শোনায় । উত্তরের সাৱৰস্তু : বৃক্ষ ও জাদুঘর উভয়ের মাধ্যমেই মানুষ আত্মপরিচয়কে ঋদ্ধ করে তুলতে পারে । সেদিক বিবেচনায় বৃক্ষের মতাে জাদুঘরও আমাদের সার্থকতার গান গেয়ে শোনায়।



                               পদ্যাংশ

সৃজনশীল প্রশ্ন নং ৪

এইচএসসি দিনাজপুর বোর্ড ২০১৬ এর বাংলা প্রথম পত্র  প্রশ্ন ও সমাধান

এইচএসসি দিনাজপুর বোর্ড ২০১৬ এর বাংলা প্রথম পত্র  প্রশ্ন ও সমাধান




“ নূরলদীনের কথা মনে পড়ে যায় । 
যখন শকুন নেমে আসে এই সােনার বাংলায় ;
 নুরলদীনের কথা মনে পড়ে যায়
 যখন আমাদের দেশ ছেয়ে যায় দালালেরই আলখাল্লায় ; নূরলদীনের কথা মনে পড়ে যায় । 

স্থাণু ' অর্থ কী ? 


উত্তর:স্থাণু অর্থ নিশ্চল ।

মেঘনাদ যজ্ঞাগারে বিষাদ অনুভব করেছিলেন কেন ? 


উওর:হত্যাকারী লক্ষ্মণের সঙ্গে নিজ পিতৃব্য বিভীষণকে দেখতে পাওয়ায় মেঘনাদ যজ্ঞাগারে বিষাদ অনুভব করেছিলেন।

নিকুম্ভিলা যজ্ঞাগারে মেঘনাদ যখন যজ্ঞ করছিলেন তখন সেখানে অনুপ্রবেশ ঘটে লক্ষ্মণের । লক্ষ্মণের উদ্দেশ্য মেঘনাদকে হত্যা করা । নিরস্ত্র মেঘনাদকে যুদ্ধে আহ্বান করেন লক্ষ্মণ । এমন অবস্থায় মেঘনাদ যজ্ঞাগারে প্রবেশদ্বারে পিতৃব্য বিভীষণকে দেখতে পান । মুহূর্তে বিভীষণের ষড়যন্ত্র ও বিশ্বাসঘাকতা মেঘনাদের কাছে স্পষ্ট হয়ে ওঠে । আর তাই মেঘনাদ যজ্ঞাগারে বিষাদ অনুভব করেছিলেন।


উদ্দীপকের চতুর্থ পর্ভূক্তির সাথে ' বিভীষণের প্রতি মেঘনাদ ' কবিতার সম্পর্ক নির্ণয় করাে । 


উওর:উদ্দীপকের চতুর্থ পর্ভূক্তিটি ' বিভীষণের প্রতি মেঘনাদ ' কবিতায় বর্ণিত বিভীষণের বিশ্বাসঘাতকতা এবং দেশদ্রোহিতার বিষয়টির সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত । 

উদ্দীপকের চতুর্থ চরণটিতে বলা হয়েছে— ' যখন আমাদের দেশ ছেয়ে যায় দালালেরই আলখাল্লায় ' কথাটিতে প্রতীকের মাধ্যমে আমাদের দেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় যারা দেশের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করে রাজাকার , আলবদর বাহিনী গড়ে তােলে , তাদেরকে দালাল হিসেবে । অভিহিত করা হয়েছে । মুক্তিযুদ্ধের সঙ্গে এদেশেরই কিছু মানুষ পাকিস্তানি বাহিনীর দালালি করে তাদের স্বদেশি মানুষকে হত্যা করে । এক কথায় একে বিশ্বাসঘাতকতা ও দেশদ্রোহিতা বলা যায় ।

বিভীষণের প্রতি মেঘনাদ “ বিভীষণের প্রতি মেঘনাদ ' কবিতায় বিভীষণও একজন দেশদ্রোহী ও বিশ্বাসঘাতক । নিজ রাজ্য লঙ্কার বিরুদ্ধে গিয়ে তিনি রামের পক্ষালম্বন করেন এবং নিজ ভ্রাতুস্পুত্র মেঘনাদকে হত্যা করতে লক্ষ্মণকে সহযােগিতা করেছেন । এই বিশ্বাসঘাতকতা নিঃসন্দেহে উদ্দীপকে বর্ণিত দালালদের কর্মকাণ্ডের সঙ্গে সাদৃশ্যপূর্ণ । তাই বলা যায় , উদ্দীপকের চতুর্থ পর্ভূক্তিটি বিশ্বাসঘাতকতা ও দেশদ্রোহিতার দিক থেকে ' বিভীষণের প্রতি মেঘনাদ ' কবিতার সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত । 


নূরলদীন ও মেঘনাদ উভয়ের মধ্যে দেশপ্রেমিকের নিদর্শন রয়েছে ।'— বিশ্লেষণ করাে ।


উওর: নুরুলদিন ও মেঘনাদ উভয়ের মধ্যে দেশপ্রেমিকের নিদর্শন রয়েছে— ' বিভীষণের প্রতি মেঘনাদ ’ ও উদ্দীপকের আলােকে উক্তিটি যথার্থ ।

 “ বিভীষণের প্রতি মেঘনাদ ' কবিতায় রাবণপুত্র মেঘনাদ সকল মানবীয় গুণের ধারক রূপে উপস্থাপিত । জ্ঞাতিত্ব , ভ্রাতৃত্ব , জাতিসত্তার সংহতির প্রতি অনুরাগ লক্ষ করি তার চরিত্রে । ধর্মবােধও তার মাঝে স্পষ্ট । তবে সবকিছু ছাড়িয়ে তিনি স্মরণীয় হয়েছেন দেশের প্রতি বিশ্বাসঘাতকতা ও দেশদ্রোহিতার বিরুদ্ধে ঘৃণা প্রকাশের মাধ্যমে । 

উদ্দীপকের নূরলদীনও তেমনি একজন দেশপ্রেমিক এবং দেশের জন্যে আত্মনিবেদনকারী ব্যক্তিত্ব । এজন্যে যখনই দেশের মানুষের ওপর শকুনরূপ পাকবাহিনী ঝাপিয়ে পড়ে তখন নূরলদীনের কথা মনে পড়ে । আবার যখন দালালের আলখাল্লায় দেশ ছেয়ে যায় , তখনাে মনে পড়ে নূরলদীনের বীরত্ব ও দেশপ্রেমের কথা সর্বোপরি উদ্দীপকের নূরলদীন দেশাত্মবােধের চেতনাসারী এবং ঐতিহাসিক চরিত্র ।

 উপযুক্ত আলােচনা শেষে বলা যায় , “ বিভীষণের প্রতি মেঘনাদ ' কবিতায় মেঘনাদ একজন আদর্শ চরিত্র । যিনি একাধারে সৎ , নির্ভীক , বীর ও দেশপ্রেমিক । দেশমাতৃকার প্রশ্নে তার আপসহীন মানসিকতার জন্যে তিনি নিজ পিতৃব্য বিভীষণকে পর্যন্ত ভর্ৎসনা করেন । অন্যদিকে উদ্দীপকের নূরুলদীনও মেঘনাদের মতােই একজন দেশপ্রেমিক চরিত্র । তাই ' নূরলদীন ও মেঘনাদ উভয়ের মধ্যে দেশপ্রেমিকের নিদর্শন রয়েছে'- উক্তিটি সম্পূর্ণ যুক্তিযুক্ত । 



সৃজনশীল প্রশ্ন নং ৫

এইচএসসি দিনাজপুর বোর্ড ২০১৬ এর বাংলা প্রথম পত্র  প্রশ্ন ও সমাধান




হে আমার দেশ , বনর মতো 
সমস্ত অভিঞ্জতার পলিমাটিকে গড়িয়ে এনে একটি চেতনাকে
 উর্বর করেছি । 
এখানে আমাদের মৃত্যু ও জীবনের সন্ধি , 
সমুঃ সৈকতে দুঃসাহসী নাবিকের কৱোটির ভেতর যেমন দূরদিগন্তের হাওয়া হাহাকার করে 
তেমনি এখানে রয়েছে একটি কোমল নারীর আশাহত হৃদয় 
এখানে রয়েছে মা আর পিতা ,
 ভাই আর বােন , স্বজন বিধুর পরিজন
 আর তুমি আমি , দেশ আমার।



আমি কিংৰদন্তির কথা বলছি ' কবিতাটি কোন ছন্দে রচিত


উওর:
আমি কিংবদন্তির কথা বলছি ' কবিতাটি গদ্যছন্দে রচিত।


 তার পিঠে রক্তজবার মতাে ক্ষত ছিল- কেন ? 



উওর: বাঙালি জাতির ওপর অত্যাচারের ইতিহাস ব্যক্ত করতে গিয়ে কবি প্রশ্নোক্ত উক্তিটি করেছেন ।

 আমি কিংবদন্তির কথা বলছি ' কবিতায় কবি আমাদের পূর্বপুরুষদের সম্পর্কে বলেছেন । পরাধীনতার কারণে পূর্বপুরুষদের ওপর বারবার অমানুষিক অত্যাচার নেমে এসেছে । পিঠে রক্তজবার মতাে ক্ষত বলতে পূর্বপুরুষদের পরাধীনতাকেই নির্দেশ করা হয়েছে । বিদেশি শত্রুরা আমাদের সাথে ক্রীতদাসের মতাে আচরণ করত । আর তাই , পূর্বপুরুষদের ওপর তাদের অত্যাচারের মাত্রা বােঝাতেই আলােচ্য চরণটির অবতারণা করা হয়েছে ।


উদ্দীপকে উদ্ধৃত পলিমাটি এবং কবিতায় উদ্ধৃত পলিমাটির সৌরভ ' একই অর্থ বহন করে কিনা আলােচনা করাে ।


উওর:

মাটির কাছাকাছি থাকা মানুষের ইতিহাস বর্ণনার পরিপ্রেক্ষিতে উদ্দীপকের ‘ পলিমাটি ' এবং কবিতায় উদ্ধৃত ‘ পলিমাটির সৌরভ ' কে অর্থ বহন করে । 

আমি কিংদিন্তির কথা বলছি ' কবিতার প্রেক্ষাপটে রয়েছে বাঙালি সংস্কৃতির হাজার বছরের ইতিহাস । কবি তাঁর পূর্বপুরুষদের সাহসী গৌরবােজ্জ্বল ইতিহাসের কথা উপস্থাপনের মধ্য দিয়ে বস্তুব্যকে এগিয়ে নিয়ে গেছেন । কবির বর্ণিত এ ইতিহাস মূলত মাটির কাছাকাছি হয় মানুষের ইতিহাস ; বাংলার কৃষিজীবী অনার্য ভূমিদাসদের লড়াই করে বেঁচে থাকার ইতিহাস । এ কবিতায় উভৃত পলিমাটির সৌরভ ' কৃষিজীর মানুষের জীবনসংগ্রামের ঐতিহ্যকে নির্দেশ করে ।

 উদ্দীপকে বাঙালি সংস্কৃতির হাজার বছরের ইতিহাস বিধৃত হয়েছে । এখানে যে চেতনার কথা বলা হয়েছে তা বাঙালির জাতীয়তাবাদের চেতনা । আর এই চেতনা নানা ঘটনা - পরম্পরার মধ্য দিয়ে বিকশিত হয়েছে হাজার বছর ধরে । এখানে পলিমাটির অভিজ্ঞতা বলতে এনে কৃষিজীবী মানুষের জীবন - সংগ্রামের ঐতিহ্যকে নির্দেশ করা হয়েছে । এদিক থেকে উদ্দীপকে উদ্ধৃত ‘ পলিমাটি ' এবং কবিতায় উত পলিমাটির সৌরভ ' একই অর্থ বহন করে ।


উদ্দীপকটিতে আমি কিংবদন্তির কথা বলছি ' কবিতার মতােই বাঙালি সংস্কৃতির হাজার বছরের ইতিহাস বিধৃত হয়েছে । তোমার মতামত দাও।


উওর:

আমি কিংবদন্তির কথা বলছি ' কবিতায় বাঙালি সংস্কৃতির হাজার বছরের ইতিহাস বিধৃত হয়েছে , যা উদ্দীপকেও নির্দেশ করা হয়েছে । আলােচ্য কবিতায় স্থান পেয়েছে বাঙালি সংস্কৃতির হাজার বছরের ইতিহাস এবং বাঙালি জাতির সংগ্রামের অনিন্দ্য অনুষঙ্গাসমূহ । কৰি তার পূর্বপুরুষদের সাহসী ও গৌরবােজ্জ্বল ইতিহাসের কথা উপস্থাপনের মধ্য দিয়ে তার বক্তব্যকে এগিয়ে নিয়ে গেছেন । 

উদ্দীপকের কবিতায় সমস্ত পলিমাটির অভিজ্ঞতাকে গড়িয়ে এনে যে চেতনাকে উর্বর করার কথা বলা হয়েছে তা বাঙালি জাতির দীর্ঘদিনের ইতিহাস ও ঐতিহ্যের চেতনাকে নির্দেশ করে । মা - বাবা , ভাই - বােন , স্বজন - পরিজন নিয়ে যে চিরায়ত বাঙালি সমাজ , সে সমাজের কথাই কবি এখানে বলেছেন । কবির মতে , দেশের সাথে সাধারণ মানুষের আত্মিক বন্ধন রচনার মধ্য দিয়ে গড়ে উঠেছে আমাদের হাজার বছরে সংস্কৃতি । 

আমি কিংবদন্তির কথা বলছি ' এবং আলােচ্য উদ্দীপক উভয়ক্ষেত্রেই বাঙালির ইতিহাস ও সংস্কৃতির কথা বর্ণিত হয়েছে । এ কবিতাটিতে উচ্চারিত হয়েছে ঐতিহ্যসচেতন ও শেকড়সন্ধানী মানুষের সর্বাঙ্গীন মুক্তির দৃপ্ত ঘােষণা । প্রকৃতপক্ষে , এর প্রেক্ষাপটে রয়েছে হাজার বছরের ইতিহাস । পাশাপাশি উঠে এসেছে এ জাতির সংগ্রাম , বিজয় ও মানবিক উদ্ভাসনের নানা চিত্র । উদ্দীপকেও রয়েছে একই ধরনের বক্তব্য । সেদিক বিবেচনায় বলা যায় , উদ্দীপকটিতে ' আমি কিংবদন্তির কথা বলছি ' কবিতার মতােই বাঙালি সংস্কৃতির হাজার বছরের ইতিহাস বিধৃত হয়েছে । উত্তরের সারবস্তু : “ আমি কিংবদন্তির কথা বলছি ' কবিতা এবং আলােচ্য উদ্দীপকে বাঙালির হাজার বছরের ইতিহাস ও সংস্কৃতি হাজার বছরের ইতিহাস বিধৃত হয়েছে।


সৃজনশীল প্রশ্ন নং ৬
এইচএসসি দিনাজপুর বোর্ড ২০১৬ এর বাংলা প্রথম পত্র  প্রশ্ন ও সমাধান

এইচএসসি দিনাজপুর বোর্ড ২০১৬ এর বাংলা প্রথম পত্র  প্রশ্ন ও সমাধান

এইচএসসি দিনাজপুর বোর্ড ২০১৬ এর বাংলা প্রথম পত্র  প্রশ্ন ও সমাধান


উদবারি’– অর্থ কী ? 


উওর:উদবারি " অর্থ— ওপরে বা উর্ধ্বে প্রকাশ করে দাও।

বাধা হয়ে আছে মাের বেড়াগুলি জীবনযাত্রার ।'- এ কথার তাৎপর্য কী ?

উওর:
 কবি সামাজিকভাবে উচ্চ মর্যাদায় আসীন ছিলেন বলে হতদরিদ্র মানুষের জীবনে প্রবেশ করতে পারেননি । 

জীবন - মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে দাঁড়িয়ে কবি অনুভব করেছেন নিজের অকিঞ্চিৎকরতা ও ব্যর্থতার স্বরূপ । কবি বুঝতে পেরেছেন অনেক ছুিই তার অজানা ও অদেখা রয়ে গেছে । আর এর একটি প্রধান কারণ , তার জীবনযাত্রা ও সামাজিক অবস্থান । সমাজের উচ্চ মঞ্চে আসন গ্রহণ । করায় তিনি হতদরিদ্র মানুষের কাছাকাছি যেতে পারেননি । জীবনের শেষ সময়ে এসে এটিকে নিজের ব্যর্থতা ও অপূর্ণতার কারণ মনে করেছেন তিনি।

উদ্দীপকের আলোকে ঐকতান কবিতার শ্রমজীবী মানুষের জীবনচিত্র বর্ণনা করাে ।


উওর:

উদ্দীপকে শ্রমজীবী মানুষের যে জীবনচিত্র উন্মােচিত হয়েছে তার সঙ্গে মিল রয়েছে , ' ঐকতান ' কবিতায় বর্ণিত শ্রমজীবী মানুষের।

উদ্দীপকে কর্মক্লান্ত , ক্ষুধাপীড়িত , দরিদ্র কিন্তু বেদনা প্রকাশে অক্ষম মানুষের জীবনচিত্রের বর্ণনা বর্তমান । এখানকার মানুষগুলাে নতশির , মূকভাবে কেবল প্রাণপণে কর্ম করে যায় কিন্তু তাদের ভাগ্যের পরিবর্তন হয় না । নিজের অভাব ও দারিদ্র্যের ঐতিহ্য তারা সন্তানকে উপহার দিয়ে যায় । তারপরও তারা অদৃষ্ট , দেবতা কিংবা মানুষকে কোনাে ভৎসনা করে না । এমন মানুষের কথা কবিগুরু তাঁর ' ঐকতান ' কবিতায় ব্যক্ত করেছেন ।

 ‘ ঐকতান ' কবিতায় কবি বলেছেন তাদের কথা যারা দুঃখে - সুখে নতশির ও বিশ্বের সম্মুখে স্তন্ধ । বিচিত্র তাদের কর্মভার , যার পরে ভর দিয়ে চলছে সমস্ত সংসার । এদের কেউ চাষি , কেউ তাতি , কেউ বা জেলে । তারপরও এই মানুষগুলাে বিশ্বে অবহেলিত । তাদের মনও নির্বাক । বস্তুত তাদের জীবন পরিস্থিতি উদ্দীপকে বর্ণিত শ্রমজীবী মানুষগুলোর মতােই।


উদ্দীপকে ' ঐকতান ' কবিতার ভাবার্থ পরিপূর্ণভাবে প্রকাশিত হয়েছে কিনা আলোচনা করাে ।


উওর:

উদ্দীপকে ফুটে ওঠা বিষয়টি ঐকতান ' কবিতার একটি দিককে প্রকাশ করে , সমগ্র ভাবকে নয় । 

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর তাঁর সমগ্র জীবনের সাহিত্য সাধনার সাফল্য ও ব্যর্থতার হিসাব খুঁজেছেন ' ঐকতান ' কবিতায় । তিনি অকপটে নিজের সীমাবদ্ধতা ও অপূর্ণতার কথা ব্যক্ত করেছেন কবিতায় । নিজের আভিজাত্যময় জীবনের কারণে তিনি সাধারণ মানুষের সঙ্গে মিশতে পারেননি । ফলে তাঁর সাহিত্যে সাধারণ মানুষের কথা পরিপূর্ণভাবে আসেনি । এ কারণে তিনি এমন কবির প্রত্যাশা করেছেন যিনি এই সাধারণ মানুষের কথা বাস্তবসম্মতভাবে সাহিত্যে তুলে ধরবেন ।

 উদ্দীপকে ' ঐকতান ' কবিতার এই সমগ্র ভাব নেই । তাতে আছে কেবল সাধারণ মানুষের জীবনের বেদনার চিত্র । এই মানুষগুলাে উক্ত কবিতায় বর্ণিত শ্রমজীবী মানুষের মতাে সুখে - দুঃখে মূক , নতশির । নিজেদের বেদনার জন্যে তারা বিধাতা , মানুষ কিংবা ভাগ্যকে দোষারােপ করে না ।

 উদ্দীপকে যেখানে দুঃখপীড়িত মানুষের জীবনবাস্তবতা মুখ্য , ' ঐকতান ' কবিতায় সেখানে আছে আরাে অনেক কিছু । কবিতাটি মুখ্যত রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের সাহিত্যজীবনের আত্মসমালােচনা । যেখানে কবি অকপটে নিজের নানা সীমাবদ্ধতার কথা তুলে ধরেছেন । উদ্দীপকের সীমাবদ্ধ পরিসরে এ সকল দিক সেভাবে উঠে আসেনি । সে দিক বিবেচনায় তাই বলা যায় , উদ্দীপকে ' ঐকতান ' এর কিছু দিক প্রকাশ পেয়েছে , সমগ্র দিক নয় । 


             
                       সহপাঠ


  সৃজনশীল প্রশ্ন নং ৭
এইচএসসি দিনাজপুর বোর্ড ২০১৬ এর বাংলা প্রথম পত্র  প্রশ্ন ও সমাধান



রক্ত ঝরে 
অগ্নির মতো বাঁশের কেল্লা বছদির পরে । 
রক্ত ঝরাই হাসির মঞ্চে দ্বীপান্তরে ।
ঝরেছে সকল রক্ত । এখন কখানা হাড়ে
 ঝকঝক করে তীব্র তীক্ষ বশী - ফলা ।
 নতুন দস্যু আসে যদি , দেশ দেবাে না তারে 
ইম্পতি হাড়ে গড়েছি বত্র বহি জালা ।। 


কে আল্লাহর কালাম ছুয়ে ওয়াদা করেছিল ? 


উওর:
আল্লাহর কালাম ছুয়ে ওয়াদা করেছিল মিরজাফর।

নবাব সিরাজউদ্দেীলা কেন মিজাফর চক্রকে বন্দি করেননি?


উওর:

নবাব সিরাজউদ্দৌলা সেনাবাহিনী বরদাশত করবে কি না ভেবে মিরজাফরদের ষড়যন্ত্র জানতে পেরেও তাদের বন্দি করেননি।

নবাব সিরাজউদ্দৌলার প্রথম থেকেই বুঝতে পারেন মীরজাফর চক্র তার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত। তবু তিনি প্রতিকারের চেষ্টাটা করেও শেষ ভরসা পাননি। যার জন্য ধর্মের নামে ওয়াদা করিয়ে মীরজাফর চক্রকে নিরস্ত করতে চান।রাজবল্লভ জগৎশেঠ কে কয়েদ করলে মীরজাফরকে ফাঁসি দিলে হয়তো প্রতিকার হত।কিন্তু সেনাবাহিনী বরদাস্ত করত কিনা এ সংসয়ের কারণেই নবাব মীর জাফর চক্রকে বন্দী করেন নি।


উদ্দীপকের বাঁশেরকেল্লা আর পলাশীর আম্রকানন কতটুকু সাদৃশ্যপূর্ণ?


উওর:
ব্রিটিশদের বিরুদ্ধে বাঙালির যুদ্ধক্ষেত্র হিসেবে উদ্দীপকের বাঁশের কেল্লা ’ আর পলাশির আম্রকানন ' বেশ সাদৃশ্যপূর্ণ । 

পলাশির আম্রকানন এদেশীয়দের কাছে এক স্মরণীয় নাম । এখানেই ১৭৫৭ সালে যুদ্ধে পরাজিত হয়ে অস্তমিত হয় বাঙালির স্বাধীনতার সূর্য । “ সিরাজউদ্দৌলা ' নাটকে এই পলাশির আম্রকাননের কথা উল্লেখ আছে । নাটকে বর্ণিত হয়েছে কীভাবে মিরজাফর ও অনা দেশদ্রোহীদের বিশ্বাসঘাতকতায় পরাজিত হন নবাব সিরাজউদ্দৌলা । 

উদ্দীপকের বাঁশের কেল্লাও তেমনি এক ঐতিহাসিক স্থান । এই নামের সঙ্গে মিশে আছে তিতুমীর ও অসংখ্য বাঙালির অসীম সাহসিকতা ও প্রাণ বিসর্জনের ইতিহাস । তিতুমীর একদিন এই বাঁশের কেল্লা থেকে ব্রিটিশ শাসনের বিরুদ্ধে সংগ্রাম ঘােষণা করেছিলেন । সেদিনের সেই যুদ্ধে তিতুমীর জয়লাভ করেননি , বরং রক্ত ঝরেছিল অসংখ্য বাঙালির । অন্যদিকে , বাঁশের কেল্লাতেও ব্রিটিশ ও বাঙ্গালির দ্বৈরম । এক্ষেত্রে ফলাফল পরাজয় ও বাঙালির মৃত্যু । সেদিক থেকে উদ্দীপকের বাঁশের কেল্লা এবং পলাশির আম্রকানন সাদৃশ্যপূর্ণ হয়ে উঠেছে ।


নতুন দস্যু আসে যদি দেশ দেবো না তারে উক্তিটি সিরাজউদ্দৌলা নাটকের দেশপ্রেমের আলোকে আলোচনা করো। 



উওর:

সিরাজউদ্দৌলা ' নাটকে নবাব সিরাজউদ্দৌলার দেশপ্রেমের সঙ্গে উদ্দীপকের নতুন দস্যু আসে যদি দেশ দেব না তাৱে উক্তিটি সাদৃশ্যপূর্ণ ।

 ‘ সিরাজউদ্দৌলা ' নাটকে নবাব সিরাজউদ্দৌলা এক মহান দেশপ্রেমিক । দেশের মানুষের স্বার্থই তার কাছে সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ । এ জন্য তিনি মিরজাফরদের ষড়যন্ত্রের কথা জানতে পেরেও দেশের একতা রক্ষার জন্য কোনাে ব্যবস্থা নেননি । মিরজাফর বিশ্বাসঘাতকতা না করলে তিনি পলাশির যুদ্ধে পরাজিত হতেন না । কিন্তু পলাশির যুদ্ধে পরাজয়ের পরও তিনি রাজধানীকে রক্ষা করতে শেষ চেষ্টা করেন । এতে সিরাজউদ্দৌলা চরিত্রে অকৃত্রিম দেশপ্রেমের পরিচয় মেলে ।

উদ্দীপকে বলা হয়েছে , ' নতুন দস্যু আসে যদি দেশ দেব না তারে । ' বস্তুত এ বক্তব্যে দেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব রক্ষার দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করা হয়েছে । এই প্রত্যয়ের মাঝে নিহিত আছে অকৃত্রিম দেশপ্রেম । তাই বাঁশের কেল্লা , ফাঁসির মঞ্চ , দীপান্তরে বাঙালির রক্ত ঝরলেও তাদের হাড় কখানা নিয়ে প্রতিরােধ গড়ে তুলতে চেয়েছে তারা ।

 “ সিরাজউদ্দৌলা নাটক এবং উদ্দীপকের ঘটনাবর্তে দেশপ্রেমের উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত উপস্থাপিত হয়েছে । উভয়ক্ষেত্রেই বিদেশি শত্রুর হাত থেকে দেশকে রক্ষা করার আপ্রাণ চেষ্টা চালানাে হয়েছে । হয়তাে সে চেষ্টায় সার্থকতা আসেনি , তবে সিরাজউদ্দৌলা যেমন পলাশি প্রাঙ্গণে হেরে গিয়েও রাজধানী রক্ষার শেষ চেষ্টা চালান , তেমনি উদ্দীপকে নতুন কোনাে দস্যু এলে তাকে প্রতিহত করার দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত হয়েছে । তাই বলা যায় , ‘ নতুন দস্যু আসে যদি দেশ দেব না তারে বক্তব্যে যে দেশপ্রেমের পরিচয় আছে তা ' সিরাজউদ্দৌলা ' নাটকেও সমভাবে উপস্থাপিত । 


সৃজনশীল প্রশ্ন নং ৮ 
এইচএসসি দিনাজপুর বোর্ড ২০১৬ এর বাংলা প্রথম পত্র  প্রশ্ন ও সমাধান

এইচএসসি দিনাজপুর বোর্ড ২০১৬ এর বাংলা প্রথম পত্র  প্রশ্ন ও সমাধান


শনির হাওরের পারে গােটা কয়েক বাড়ি নিয়ে গিয়াসের গ্রাম । ঘর হাতে দু'পা ফেলতেই হাওরের শুরু , শেষটা চোখে আন্দাজ । করা যায় না । ধান আর মাছ নিয়ে তাদের জীবন । বানের পানিতে ধান তলিয়ে গেলে তার চোখে অন্ধকার দেখে । অসুখ - বিসুখে পরে । পীরের পানি আর তেল পড়াই তাদের ভরসা । গত বছর গিয়াস তার নিঃসন্তান স্ত্রীকে নিয়ে শহরে ডাক্তার দেখাতে গিয়েছিল । বেপর্দাভাবে স্ত্রীকে ডাক্তারের কাছে নিয়ে যাওয়ায় পীরের বাড়িতে ডাক পড়ল গিয়াসের । তখন আতরের সুবাস আর আর বাতিঃ । ধোয়ায় পীরসাহেবের মুখ দেখাই যাচ্ছিল না । যেন অদৃশ্য কষ্ঠের ঘােষণা হলো , গিয়াসকে গ্রাম ছাড়তে হবে । পীরের ঘোষণামাত্র তার  সাগরেদরা তা বাস্তবায়ন করল । 


 মজিদের সহযােগী ব্যক্তিটির নাম কী ?


উওর:
মজিদের সহযোগী ব্যক্তিটির নাম খালেক ব্যাপারী।


আমেনা বিবিকে কিরূপ শাস্তি দিয়েছিল মজিদ ?


উওর:
খালেক ব্যাপারীর সঙ্গে বিবাহবিচ্ছেদ ঘটানাের মাধ্যমে আমেনা বিবিকে কঠিন শাস্তি দিয়েছিল মজিদ । 

লালসালু ' উপন্যাসের আমেনা বিবি সন্তান কামনায় মজিদের কাছে না গিয়ে আওয়ালপুরের পীরের পানি পড়া খেতে চায় । এ ঘটনায় মজিদ । ক্ষুব্ধ হয়ে আমেনা বিবিকে শাস্তি দেওয়ার পরিকল্পনা করে । তার সন্তান না হওয়ার কারণ খুঁজে বের করার কথা বলে পেটের প্যাচ পরীক্ষা  করার নামে এক ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয় মজিদ । সারাদিন খালি পেটে থেকে মজিদের পড়া পানি খেয়ে অজ্ঞান হয়ে যায় আমেনা বিবি । তখন তার চরিত্র সম্পর্কে প্রশ্ন তুলে খালেক ব্যাপারীকে সন্দিগ্ধ করে তােলে । অতঃপর খালেক ব্যাপারীকে সে আমেনা বিবিকে তালাক দিতে বলে । মজিদের কথামতাে খালেক ব্যাপারী আমেনাকে তালাক দেয় । এভাবেই স্বামীকর্তৃক তালাক দেওয়ানাের মাধ্যমে আমেনা বিবিকে কঠিন শাস্তি দিয়েছিল মজিদ ।
 

উদ্দীপকের সাথে ' লালসালু ' উপন্যাসের কোন ঘটনার সাদৃশ্য রয়েছে ? 


উওর:
উদ্দীপকের সঙ্গে ' লালসালু ' উপন্যাসের তাহের - কাদেরের বাবার বিচারের ঘটনাটি সাদৃশ্য রয়েছে। 

' লালসালু উপন্যাসে তাহের - কাদেরের বাবার বিচারের বিষয়টি একটি উল্লেখযােগ্য ঘটনা । তাহের কাদেরের বৃদ্ধ বাবার সঙ্গে তার ঝগড়া লেগেই থাকে । বুকে মানসিকভাবে আত্মণাদিহ নানার জন্য তার সন্তানের বাংলা নিয়ে কথা বলে বৃদ্ধা। অনুরূপভাবে তাহের - কাদেরের মায়ের সতীত্ব সম্পর্কে প্রশ্ন তুলে । এ কারণে বিচারের মুখোমুখি হতে হয় । বিচারে গেলে বৃদ্ধাকে অপমান অরে । সেই অপমান সইতে না পেরে বাড়ি ছেড়ে চলে যায় । তার আর কোনাে খোঁজ পাওয়া যায়নি । 

উদ্দীপকের গ্রামের মানুষের অসুখ - বিসুখের ভরসা হলাে পীরে তেল - পানি পড়া । কিন্তু নিঃসন্তান গিয়াস মীকে শহরে নিয়ে যায় চিকিৎসা করানাের জন্য । বেপর্দাভাবে মীকে ডাক্তারের কাছে নিয়ে যাওয়ায় পীরের বাড়িতে ডাক পড়ে গিয়াসের । পীর তাকে গ্রাম ছাড়ার জন্য আদেশ করে । গিয়াসও গ্রাম ছাড়তে বাধ্য হয় । এমনভাবেই সালিস ভেকে বিচার করার কারণে গ্ৰাম ছাড়তে হয়েছিল তাহের - কাদেরের বাবাকে । তাই উদ্দীপকের ঘটনাটি তাহের - কাদেরের বাবার গ্ৰাম ছাড়ার বিষয়টির সাথে সাদৃশ্যপূর্ণ । 


উদ্দীপকের জনজীবন এবং মহব্বতনগর গ্রামের জনজীবনের চিত্র একই রকম মন্তব্যটি বিশ্লেষণ করাে ।


উওর:
লালসালু উপন্যাসের মহব্বতনগর গ্রামের মানুষের মাঝে অন্ধ বিশ্বাস ও সংস্কারের দিকটি পরিলক্ষিত হয় । 

লালসালু উপন্যাসে চিত্রিত হয়েছে কুসংস্কারাচ্ছন্ন ধর্মভীরু মহব্বতনগর গ্রামের মানুষের জীবন চিত্র। শস্যশ্যামল এই গ্রামের মানুষগুলো স্বাধীনভাবে জীবন অতিবাহিত করত। কিন্তু পরবর্তীতে সেখানে মজিদের আগমনের কারণে ধর্মকেন্দ্রিক ব্যবসার সূচনা হয়। অজ্ঞাত পীরের মাজারের কথা বলে মসজিদ সাধারণ মানুষের মনে ভীতি সঞ্চার করে। নিজেকে সেই মাজারের রক্ষক হিসেবে প্রচার করে গ্রামের মানুষের মাঝে মজিদ তার প্রভাব বিস্তার করে। কেউ তার বিরোধিতা করলে মসজিদ তাকে কৌশলে গ্রাম ছাড়তে বাধ্য করে।

উদ্দীপকে পীরতন্ত্রের আধিপত্য হয়েছে। শনির হাওরের পাশে যে গ্রামে গিয়াসের বসবাস সেখানে পীর সাহেবের আধিপত্য চলে।অসুখ বিসুখে পীরের পানি আর তেল পড়াই গ্রামবাসীর রোগ মুক্তির একমাত্র অবলম্বন।গিয়াস এই গণ্ডির বাইরে গিয়ে নিঃসন্তান স্ত্রীকে শহরে নিয়ে গিয়ে ডাক্তার দেখাই। ফলে পীর সাহেব তাকে বাড়িতে ডেকে নিয়ে গ্রামছাড়া জন্য আদেশ করে।

উদ্দীপক ও লালসালু উপন্যাস উভয় ক্ষেত্রেই গ্রামীণ মানুষের জীবন চিত্র উন্মোচিত হয়েছে। দুটি ক্ষেত্রেই পীরতন্ত্রের আধিপত্য বিদ্যমান। মসজিদ ধর্মকে হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করে মানুষের ওপর নিজেদের কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠা করেছে। যারা তার প্রতিরোধ করতে চেয়েছে তাদের জীবনে নেমে এসেছে বিপর্যয়।উদ্দীপকের পীরের কথায় বিশ্বাস না করে নিঃসন্তান স্ত্রীকে শহরে ডাক্তার দেখাতে নিয়ে গিয়ে গিয়াসের সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়েছে। তাই আমরা বলতে পারি উদ্দীপকের জনজীবন এবং মহব্বত নগর গ্রামের জন জীবনের চিত্র একই রকম -মন্তব্যটি যথার্থ।


সৃজনশীল প্রশ্ন নং ৯
এইচএসসি দিনাজপুর বোর্ড ২০১৬ এর বাংলা প্রথম পত্র  প্রশ্ন ও সমাধান

এইচএসসি দিনাজপুর বোর্ড ২০১৬ এর বাংলা প্রথম পত্র  প্রশ্ন ও সমাধান


এইচএসসি দিনাজপুর বোর্ড ২০১৬ এর বাংলা প্রথম পত্র  প্রশ্ন ও সমাধান



সুখে থাকিয়া এবং পেট ভরিয়া খাইয়া কিছুদিনের মধ্যে ভিখুর দেহে পূর্বের স্বাস্থ্য ফিরিয়া আসিল। তাহার সাথী ফুলিয়া উঠিল প্রত্যেক অঙ্গ সঞ্চালন হাতের ও পিঠের মাংসপেশি নাচিয়ে লাগলো অবরুদ্ধ শক্তির উত্তেজনায় ক্রমে ক্রমে তাহার মেজাজও অসহিংস হইয়া পড়িলো। অভ্যস্ত বলি আউড়াইয়া কাতরভাবে সে এখনো ভিক্ষা চায়। কিন্তু ভিক্ষা না পাইলে তাহার ক্রোধের সীমা থাকে না। লোকজন না থাকিলে তাহার প্রতি উদাসীন পথিক কে অশীল গাল দিয়ে বসে। এক পয়সার জিনিস কিনিয়া ফাও না পাইলে দোকানে রেগে ওঠে। নদীর ঘাটে মেয়েরা স্নান করিতে না মিলে ভিক্ষা চাহিবার ছলে জলের ধারে গিয়া দাড়াই।


আমেনা বিবি কে?


উওর:
লালসালু উপন্যাসের আমেনা বিবি হল খালেক ব্যাপারীর প্রথম স্ত্রী।

মজিদ কিভাবে মহব্বতনগর গ্রামে শিকড় গেড়েছিল?


উওর:
মানুষের খোদাভীতি কে কাজে লাগিয়ে মাজার ব্যবসা এর মাধ্যমে মজিদ মহব্বতনগর গ্রামে শিকড় গেড়েছিল।

এক নিরাক পড়া বাতাসে স্তব্ধ গুমোট আবহাওয়া শ্রবণের দুপুরে মহব্বত নগরে গ্রামে আগমন ঘটে মজিদের। সেখানে একটি পুরনো কবরকে মুদাসসের পীরের মাজার বলে দাবি করেছে সে। এই কবর কে কেন্দ্র করে মজিদ তার ধর্ম ব্যবসা শুরু করে। কিছুদিনের মধ্যেই সেখানে ঝকঝকে পয়সা শিবানী আধুলি সত্যি টাকা নকল টাকা ছড়াছড়ি হতে থাকে। এতে অর্থনৈতিক ভাবে সমৃদ্ধ হয় সে।একই সাথে রহিমা কে বিয়ে করে সংসার শুরু করে মজিদ।আর এভাবেই ধর্মকে পুঁজি করে মজিদ মহব্বতনগর গ্রামে শিকড় গেড়েছিল।


ভিখুর মত রমণীদেহের প্রতি মজিদের ও লোলুপ দৃষ্টি ছিল তোমার মতের পক্ষে যুক্তি দাও।


উওর:
লালসালু উপন্যাসের মজিদ ও উদ্দীপকের ভিখুর মধ্যে রমণীদেহের প্রতি লােলুপদৃষ্টির দিকটি লক্ষ করা যায় । 

লালসালু ' উপন্যাসের মজিদ ভাগ্যের সন্ধানে মহব্বতনগর গ্রামে এসে প্রবেশ করে । এখানে এসে সে রহিমাকে বিয়ে করে । কিন্তু স্ত্রী হিসেবে রহিমাকে পেলেও সে অন্য নারীদের প্রতি কুদৃষ্টি দেয় । ধান সিদ্ধ করতে আসা হাসুনির মায়ের নগ্ন কাঁধ মজিদের মনের কাম বাসনাকে জাগ্রত করে । এছাড়া আমেনা বিবির প্রতিও মজিদের লােলুপদৃষ্টি ছিল । এমনকি নিজের সুপ্ত লালসাকে পূর্ণ করতে অল্পবয়সি জমিলাকে বিয়ে করে সে ।

 উদ্দীপকের ভিখুর পেট ভরে খেয়ে ও সুখে থেকে স্বাস্থ্য ভালাে হয়েছে । সে এখন ভিক্ষা চেয়ে না পেলে ক্রোধান্বিত হয়ে ওঠে । মানুষকে অশ্লীল ভাষায় গালি দেয় । এমনকি , নদীর ঘাটে মেয়েরা স্নান করতে নামলে সে ভিক্ষা চাইবার ছলে জলের ধারে গিয়ে দাড়িয়ে থাকে ।

 এই একটি কথা থেকে স্পষ্ট হয় যে , রমণীদেহের প্রতি ভিখুর রয়েছে লােলুপদৃষ্টি । ' লালসালু ' উপন্যাসের বিভিন্ন জায়গায় আমরা মজিদকে নারীদেহের প্রতি আকৃষ্ট হতে দেখি ! এই একই বিষয় আলােচ্য উপন্যাসের মজিদের চরিত্রেও লক্ষ করা যায় । তাই বলা যায় , ভিখুর মতাে রমণীদেহের প্রতি মজিদেরও লােলুপ দৃষ্টি ছিল- মন্তব্যটি সঠিক । 


মিঠু ও লালসালু উপন্যাসের মসজিদের টিকে থাকার সংগ্রাম এক কিন্তু পদ্ধতি ভিন্ন -বিশ্লেষণ করো।



উওর:
বৃক্ষ ও লালসালু ' উপন্যাসের মজিদের টিকে থাকার সংগ্রাম এক কিন্তু পদ্ধতি ভিন্ন" - উদ্দীপক ও ' লালসালু ' উপন্যাসের আলোকে মন্তব্যটি যথার্থ।

লালসালু উপন্যাস মজিদ টিকে থাকার সংগ্রামে লিপ্ত। ক্ষুধার তাড়নায় সে নিজ গ্রাম ত্যাগ করে কিছুদিন গারো পাহাড় এলাকায় বাস করেছিল।এরপর মহব্বতনগর গ্রামে এসে তার টিকে থাকার সংগ্রাম শুরু হয় । এখানে সে টিকে থাকার হাতিয়ার হিসেৰে মাজার ব্যবসা তথা ধর্মকেন্দীক ব্যবসাকে ব্যবহার করছে।

 উদ্দীপকের ভিখুও টিকে থাকার সংগ্রামে লিপ্ত । অসুস্থ অবস্থা থেকে সে ক্রমশ পূর্বের স্বাস্থ্য ফিরে পেয়েছে । এখন ভিখুর টিকে থাক , হাতিয়ার ভিক্ষাবৃত্তি । অভ্যন্ত বুলি আওড়িয়ে কাতরভাবে সে ভিক্ষা চায় । কিন্তু ভিক্ষা না পেলে সে রেগে যায় । অশ্লীল ভাষায় গালি দেয় মানুষকে ।

লালসালু ' উপন্যাসের মজিদ ও উদ্দীপকের ভিখু এই পৃথিবীতে বেঁচে থাকা তথা টিকে থাকার নির্মম লড়াইয়ে লিপ্ত । সার্বিক বিবেচনায় তাই বলা যায় ভিখু ও লালসালু উপন্যাসের মজিদের টিকে থাকার সংগ্রাম এক কিন্তু পদ্ধতি ভিন্ন-মন্তব্যটি যথার্থ।