লাভ লেটার লেখার নিয়ম | রোমান্টিক লাভ লেটার | লাভ লেটার চিঠি | লাভ লেটার পিক | love letter bangla

Admin
0

লাভ লেটার লেখার নিয়ম | রোমান্টিক লাভ লেটার | লাভ লেটার চিঠি | লাভ লেটার পিক | love letter bangla

আসসালামু আলাইকুম ভিজিটর বন্ধুরা। আজকে আপনাদের জন্য নিয়ে আসলাম  লাভ লেটার লেখার নিয়ম | রোমান্টিক লাভ লেটার | লাভ লেটার চিঠি | লাভ লেটার পিক | love letter bangla
আপনারা দেখতেছি, অনলাইনে অনেকে সার্চ করতেছে লাভ লেটার লেখার নিয়ম | রোমান্টিক লাভ লেটার | লাভ লেটার চিঠি | লাভ লেটার পিক | love letter bangla এসব দিয়ে। তাই আজকে   এই পোস্ট। যদি আমার এই লাভ লেটার লেখার নিয়ম | রোমান্টিক লাভ লেটার | লাভ লেটার চিঠি | লাভ লেটার পিক | love letter bangla পোস্টটি আপনাদের উপকারে আসে তবে অবশ্যই লাইক করবেন সাথে কমেন্ট করবেন।
তাহলে আসেন শুরু করি আজকের লাভ লেটার লেখার নিয়ম | রোমান্টিক লাভ লেটার | লাভ লেটার চিঠি | লাভ লেটার পিক love letter bangla | love letter bangla পোস্টটি।
লাভ লেটার লেখার নিয়ম, রোমান্টিক লাভ লেটার,  লাভ লেটার চিঠি,  লাভ লেটার পিক, love letter bangla

লাভ লেটার লেখার নিয়ম | রোমান্টিক লাভ লেটার | লাভ লেটার চিঠি | লাভ লেটার পিক | love letter bangla

প্রিয়
প্রেমিকা/প্রেমিক,
কেনো জানি খুব কান্না পাচ্ছে! শূন্যতা, পূর্ণতা, নির্ভরতা নাকি নিঃসঙ্গতার জন্য, 
জানি না। শুধু বুঝতে পারছি বুকের ভিতরে কোথায় জেনো লুকানো জায়গা 
থেকে একদল অভিমান প্রচণ্ড কান্না হয়ে দু’চোখ ফেটে বেরুতে চাইছে।
 তুমি কাছে নেই বলে শূন্যতা তার ইচ্ছে মত দেখাচ্ছে তার নিষ্ঠুর
 খেলা। আমিতো তোমার বুকে মুখ লুকালেই বাঁচি এখন! কিন্তু.
তুমি যে কত দূরে! বলতো!আজ শেষ বিকেলের পাহাড় ছুঁয়ে 
ছুটে আসা দমকা হাওয়ার জড়িয়ে দেয়া মেঘের মতো ছোট্ট একটি ঘটনা
 আমার সব দ্বিধাকে উড়িয়ে নিয়ে গেলো! বুঝলাম, মহাকাল যে 
হাস্যকর ক্ষুদ্র সময়কে “জীবন” বলে আমাকে দান করেছে। সেই জীবনে তুমি-
ই আমার এক মাত্র মানুষটি, যার পাঁচটি আঙ্গুলের শরণার্থী আমার 
পাঁচটি আঙ্গুল, যার বুকের পাঁজরে লেগে থাকা ঘামের গন্ধ 
আমার ঘ্রাণশক্তির একমাত্র গন্তব্য। যার এলোমেলো চুলে 
আমি-ই হারিয়ে যাবো। আর আমি হারিয়ে যাবো ভালবাসতে বাসতে! 
যার দুটো অদ্ভুত সুন্দর মধুভরা ঠোঁটের উষ্ণতায় আর তাই জীবনটা
 আজ ঠিক সেই অদ্ভুত ফুলগুলোর মতই মতই সুন্দর, যা 
দেখে আমি চমকে উঠেছিলাম। আর তুমি আমায় পরম 
মততায় আলতো জড়িয়ে ধরে তোমার ঠোঁটের সেই খুব মিষ্টি 
ছোঁয়ায় ভরে দিয়েছিলে সেই পুরোটা পাহাড়ি বিকেল। 
আর তখন সেই দূর পাহাড়ের দুষ্ট বাতাস এসে আমাকে চুপি চুপি কানে কানে
 বলে দিলো, “তোমার পাঁজরের হারেই আমার এই দেহটি তৈরি, যাকে স্বামী
 বলে! আজ প্রতিটি ক্ষণ হৃদয়ে যে পরম সত্য অনুভব করলাম- আমি 
শুধুই তোমার। সে শেষ ঠিকানা আমি পেলাম। কখনই তা মিথ্যা হতে 
দিওনা, কখনই ছেড়না আর। আজ আমার ভীষণ সুখী হাত দু’টো, 
আর দৃষ্টি ঘুরিও না ঐ অদ্ভুত সুন্দর চোখজোড়ার, সেখানে অপলক 
তাকিয়ে বৃষ্টির সাথে আমিও আনন্দ হয়ে ঝরেছিলাম! 

 তোমাকে ভালবাসি প্রচণ্ড- এরচেয়ে কোনও সত্য আপাতত আর জানিনা!

ভালবাসি তোমায়!

লাভ লেটার লেখার নিয়ম | রোমান্টিক লাভ লেটার | লাভ লেটার চিঠি | লাভ লেটার পিক | love letter bangla



পত্রের শুরুতে দিলাম তোমায়
শুভেচ্ছার লাল গোলাপ ফুল।
ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখ তুমি
আমার পত্রে সকল ভুল।

তুমি আমার প্রথম প্রেম
প্রথম ভালবাসা।
তোমার সাথে থাকব সারা জীবন
এই আমার মনের আশা।

জানিনা প্রেম কাকে বলে
শুধু এই টুকু বলতে পারি।
বাঁচতে পারবনা আমি
তোমাকে কভু ছাড়ি।

তোমার চোখের দিকে তাকালে
কাঁপে দুরু দুরু বুক।
তবুও তোমাকে ভালবেসে
পাইযে আমি মনে সুখ।

তুমি আমার প্রথম প্রেম
প্রথম ভালবাসা।
তুমি আমার জীবনের
বেচে থাকার আশা।

আমার এই ভালবাসায়
নেই কোন ভুল।
আমার এই মন যেন
নিস্পাপ গোলাপ ফুল। পত্র দিয়ো আমায় তুমি
রহিলাম তোমার আশায়।
ভালবাসার পত্র লিখো
তোমার মনের ভাষায়।

সারা জীবন রেখো মনে
আমার প্রেমের স্মৃতি।
আর বেশী লিখবোনা
এই দিলাম ইতি।

লাভ লেটার লেখার নিয়ম | রোমান্টিক লাভ লেটার | লাভ লেটার চিঠি | লাভ লেটার পিক | love letter bangla


আমি তখন স্কুলের নিচের ক্লাসে পড়ি। আমাদের স্কুলের পাশেই
ছিল নুরু মিয়ার দোকান। আসলে দোকানের মালিক নুরু মিয়া
নয়, তার মামা। রকমারি জিনিসপত্র সাজানো থাকত ওই দোকানে।
চাল-ডাল থেকে শুরু করে পুঁতির মালা এবং সেফটিপিন পর্যন্ত।
 বিস্কুট, লজেন্স, মোয়া—এসব খাবারদাবার তো ছিলই। প্রায় সারা দিনই নুরু
মিয়া দোকানে বসে জিনিসপত্র বিক্রি করত। বিকেলের পর সেখানে
বসত তার মামা। আমরা অবশ্য দিনের বেলা নুরু মিয়াকেই দেখতাম।
স্কুল ছুটির পরে আর সেদিকে যাওয়ার প্রয়োজন
 পড়ত না। নুরু মিয়াকে আমরা ডাকতাম নুরু ভাই।

নুরু ভাই একদিন আমাকে ডেকে বলল, ‘এই, লেবেনচুষ খাবে?’আমার কাছে
তো পয়সা নেই।
 তোমার কাছে পয়সা চেয়েছি নাকি?’ নুরু ভাই আমাকে দোকানের
ভেতরে নিয়ে এল। বয়াম থেকে লজেন্স বের করে দুটো প্যাকেট ভরে
আমার হাতে দিয়ে বলল, ‘একটা তোমার, আরেকটা ডালিয়ার।
ডালিয়া! আমি যেন ঠিক বুঝতে পারলাম না। ডালিয়া, যে
তোমাদের পাশের বাড়িতে থাকে। তোমার সঙ্গে খেলে।’
ডালিয়াকে আমি ডালিয়াবু ডাকি। বললাম, ‘ডালিয়াবু লজেন্স চেয়েছে নাকি?’
 ‘চায়নি। তবে লজেন্স সে খুব পছন্দ করে।’ নুরু ভাই বলল, ‘তোমাদের
 এমনি দিলাম। এ জন্য পয়সা দিতে হবে না।’ পয়সা কেন দিতে হবে না,
তা আমার মাথায় এল না। তবে নুরু ভাইকে এমন উদার কখনো
 মনে হয়নি। তার দোকান থেকে সওদা কিনতে হলে অনেক মুলামুলি
করলেও সে দাম কমায় না। সেই নুরু ভাই কিনা বিনা পয়সায়
এতগুলো লজেন্স দিয়ে দিল! দুটো প্যাকেট পেয়ে একটা পকেটে
ভরে ফেললাম। আরেকটা হাতে নিয়ে সরাসরি গেলাম ডালিয়াবুদের বাড়ি।
 ডালিয়াবু কাগজের ঠোঙা দেখে বলল, ‘ওতে কী?’ ‘লেবেনচুষ!’
 ‘দে, আমাকে দে। আমার খুব পছন্দ।’ প্যাকেট খুলে দুটো লজেন্স
আমার হাতে তুলে দিয়ে বলল, ‘নে। এ দুটো তুই খা।’ ওগুলো যে
 নুরু ভাইয়ের কাছ থেকে বিনা পয়সায় আনা, আমার আর তা
 বলা হলো না। মনে হলো, এসব কথা বলে ঝামেলা বাড়িয়ে
 লাভ নেই। আমার হাতের লজেন্স দুটো তার হাতে দিয়ে বললাম, ‘
এগুলো তুমি খাও। আমার এখন খেতে ভালো লাগছে না। ‘
বলিস কি রে!’ হাত বাড়িয়ে লজেন্স দুটো নিয়ে নিল ডালিয়াবু।
 কয়েক দিন পর নুরু ভাই আমাকে আবার তার দোকানে নিয়ে গেল।
আমাকে কয়েকটা বিস্কুট খেতে দিয়ে বলল, ‘ডালিয়াকে
 লজেন্সের প্যাকেটটা দিয়েছিলে তো?’ 

হ্যাঁ।’ আমি বললাম। ‘আজ ডালিয়াকে এক প্যাকেট চকলেট
 পাঠাব। লজেন্সের চেয়ে এগুলো অনেক ভালো। খেতে খুব মজা।’
আমি চুপ করে রইলাম।
‘চকলেটের সঙ্গে আজ একটা চিঠিও দেব।’
‘কিসের চিঠি?’ 
‘ওসব তুমি বুঝবে না।’
‘ডালিয়াবু যদি রাগ করে?’ 
রাগ করবে কেন? চিঠিতে সব ভালো ভালো কথা লেখা আছে।
খারাপ কিছু না। আমার দোকানে আলতা, কাচের চুড়ি, চুলের ফিতা—
সবকিছুই পাওয়া যায়। ডালিয়ার যা কিছু পছন্দ, তা নিতে পারে।
পয়সা লাগবে না।’ নুরু ভাই প্রায় জোর করেই চকলেটের
প্যাকেট আর চিঠিটা আমার হাতে তুলে দিল।

 অনিচ্ছা সত্ত্বেও এগুলো নিয়ে আমি বাসায় এলাম। মনটা
খারাপ হয়ে গেল। নুরু ভাই ডালিয়াবুকে চিঠি লিখবে কেন?
 নুরু ভাই তো কত বড়! আর ডালিয়াবু স্কুলে আমার চেয়ে দুই
 ক্লাস ওপরে। আরেকটা কথা আমার মাথায় এল। নুরু ভাই বেশি লেখাপড়া
জানে না। তাহলে সে চিঠি লিখল কী করে? অন্যদিকে ডালিয়াবু স্কুলের
 পরীক্ষায় সব সময় ফার্স্ট হয়। কিন্তু সবকিছুর
আগে আমাকে দেখতে হবে চিঠিতে কী লেখা আছে? 

 বাসার চিলেকোঠায় গিয়ে আমি খামের মুখটা সন্তর্পণে আলগা করলাম,
যাতে আবার ওটা ঠিকমতো লাগানো যায়। খাম খুলতেই সেন্টের
বোটকা একটা গন্ধ আমার নাকে এসে লাগল। চিঠির কাগজটা ছিল
 রঙিন, এক কোনায় রঙিন ফুলপাতা আঁকা। কাগজটা যত ভালো,
 হাতের লেখা ততটাই খারাপ। এত জঘন্য হাতের লেখা নুরু ভাই ছাড়া
আর কারও হতে পারে না। নুরু ভাই লিখেছে: জানের
ডাল, (ডালিয়া হবে) আমার দুকানে (দোকানে) ছনো (স্নো)
পাউডার আলতা চুরি (চুড়ি) আছে। তোমার জন্য সবই ফিরি (ফ্রি)।
এইবার ঈদে তোমারে শাড়ি উপহার দিব। কী রং পছন্দ, বলবা। আমার
 ভালোবাসা জানিবা। ইতি। তোমার নুরু মিয়া।’
নিচে লাল কালিতে লেখা: চিঠির জবাব দিবা।

 চিঠিখানা পড়ে আমার মনমেজাজ খুব খারাপ হয়ে
 গেল। নুরু ভাই লোকটা মোটেই ভালো নয়। ডালিয়াবু, আমি ও পাড়ার অন্য
 ছেলেমেয়েরা যখন গোল্লাছুট ও দাঁড়িয়াবান্ধা খেলি, নুরু ভাই কাছে দাঁড়িয়ে
খেলা দেখে। তখন কিছু মনে হয়নি। একদিন সে আমাকে বলেছিল হাডুডু
খেলায় ডালিয়াকে কীভাবে জড়িয়ে ধরে রাখতে হবে। সেদিনও
আমি কিছু বুঝিনি। আজ মনে হচ্ছে, নুরু মিয়া আসলেই খারাপ লোক।
আমি আর তাকে কখনো ভাই বলে ডাকব না।

 কিন্তু চিঠিটার ব্যাপার কী করা যায়? এই চিঠি ডালিয়াবুকে দেব কি না! চিঠিটা
পেয়ে ডালিয়াবু যদি খুশি হয়? না, তা কিছুতেই হতে পারে
না। আমার অবশ্য চিঠিটা দেখার কথা না। ভেতরে কী লেখা আছে,
তা-ও জানার কথা নয়। চিঠিটা ডালিয়াবুকে দেওয়ার পর সে যদি
 আমার সামনেই কাগজটা কুটি কুটি করে ছিঁড়ে ফেলে, তাহলে আমি
খুব খুশি হই। এসব কথা ভেবে রাতে আমার চোখে ঘুম এল না।
পরে কখন যে ঘুমিয়ে পড়লাম, টের পাইনি।
 পরদিন সকালেই ডালিয়াবুদের বাসায় গেলাম। ডালিয়াবু আমাকে দেখে বলল,
 ‘কি রে! এত সকালে? নাশতা করেছিস?’ 
‘না।’
 ‘আয় আমরা নাশতা করি।’
 কিন্তু টেবিলে বসে নাশতার দিকে আমার মন নেই। চিঠিটা
 কীভাবে দেব এবং ঘটনাটা ডালিয়াবু কীভাবে নেবে, সেটা ভেবে
ভেবে মনে ভাবনার জট পাকাতে থাকল। নাশতার পাট শেষ হলে ডালিয়াবু
তার ঘরে নিয়ে এল আমাকে। বলল, ‘কী বলবি, বল।’
‘ডালিয়াবু, তোমাকে একজন চিঠি দিয়েছে।’
 ডালিয়াবু হাসিমুখে বলল, ‘তুই না তো?’ 
 আমি যেন লজ্জায় লাল হয়ে গেলাম। বললাম, ‘নুরু দোকানদার।’
 কিন্তু তার চকলেট দেওয়ার কথা বলতে একেবারে ভুলে
 গেলাম। ওগুলো বাসা থেকে আনাও হয়নি।
 ‘লোকটা আসলে খুব খারাপ। আমি সামনে পড়লে
কেমন করে যেন তাকায়। এসব লোককে আমি মোটেই
পছন্দ করি না। যারা লেখাপড়া শেখে না, জীবনে বড়
হতে চায় না, তাদের সঙ্গে আমার কোনো সম্পর্ক থাকতে
পারে না।’ ডালিয়াবু একটু থেমে আবার বলল, ‘তুই এক কাজ
কর। চিঠিটা টুকরা টুকরা করে বাস্কেটে ফেলে দে।’

 ডালিয়াবুর নির্দেশ পালন করে চিঠিটা ছিঁড়ে বাস্কেটে ফেললাম।
 আমার মনের ভেতরটা অনেক হালকা হয়ে গেল।
 ‘লোকটা যদি কখনো কিছু দেয়, নিবি না।’

 আমি মাথা ঝাঁকালাম। লজেন্স ও চকলেট নেওয়ার
কথা বলা ঠিক হবে কি না, বুঝতে পারলাম না।
 ‘লোকটার কত সাহস, আমাকে চিঠি লেখে! তোর মতো একজন
ভালোমানুষ যদি আমাকে চিঠি লিখত, তাহলেও কথা ছিল।’ বলে
আমার দিকে তেরছা চোখে তাকিয়ে হাসল ডালিয়াবু।
 বাসায় ফিরে গিয়ে আমার মনে অনেকগুলো ভাবনার জন্ম হলো।
চিঠিতে কী লেখা ছিল, ডালিয়াবু তা-ও দেখল না, জানারও
 প্রয়োজন বোধ করল না। কিন্তু আমি যদি ডালিয়াবুকে চিঠি
লিখতাম, তাহলে নিশ্চয়ই আমার চিঠি পড়ত ডালিয়াবু।
ডালিয়াবু নিশ্চয়ই চায় আমি তাকে চিঠি লিখি। রাতে বিছানায় শুয়ে শুয়ে
ডালিয়াবুর চেহারাটা চোখের সামনে ভেসে উঠল। কী সুন্দর
চেহারা ডালিয়াবুর! তার চুলের দুই বিনুনি কাঁধের দুপাশে চমৎকার
মানায়। মাঝেমধ্যে চোখে কাজল দেয় সে। একদিন গালে কী যেন
মেখেছিল। গাল দুটো আপেলের মতো লাগছিল। কত সুন্দর
করে কথা বলে ডালিয়াবু! হাসলে চোখমুখ খুশিতে ভরে ওঠে।
 তবে ডালিয়াবু শাড়ি পরলে আমার ভালো লাগে না। মনে হয়, সে
 যে আমার চেয়ে বয়সে বড়, সেটা বোঝাতে চাইছে।

 রাতের বেলা আমি আবার পড়ার টেবিলে গিয়ে বসলাম ডালিয়াবুকে
একটা চিঠি লিখব ভেবে। কী লিখতে পারি আমি? নুরু দোকানদারের
চিঠিটার কথা মনে হলো। ওর মতো করে চিঠি লেখার
 কথা ভাবতেই মন থেকে তা নাকচ হয়ে গেল। অনেক
ভেবেচিন্তে চিঠিতে একটা লাইনই লিখলাম আমি: ‘ডালিয়াবু, আমি তোমাকে
ভালোবাসি।’ রঙিন কোনো কাগজ নয়, চিঠির কাগজে ফুলপাতা আঁকা নয়,
সেন্টের গন্ধ তো নয়ই। শুধু একটি কথাতেই আমার চিঠি শেষ।
 পরদিন চিঠিটা হাতে নিয়ে ডালিয়াবু কয়েক মুহূর্ত একদৃষ্টিতে তাকিয়ে
থাকল আমার দিকে। বলল, ‘ভালোবাসার কী বুঝিস তুই?
ভালোবাসা কাকে বলে, তা কি জানিস? যাক, তুই তোর জীবনের প্রথম
প্রেমপত্রটা আমাকে দিলি। এটা আমি যত্ন করে রেখে দেব।’ ডালিয়াবু
এরপর এগিয়ে এল আমার কাছে। আমাকে দুহাতে জড়িয়ে
 ধরে কপালে একটা চুমু দিয়ে বলল, ‘আমিও তোকে খুউব 
ভালোবাসি রে।’

লাভ লেটার লেখার নিয়ম | রোমান্টিক লাভ লেটার | লাভ লেটার চিঠি | লাভ লেটার পিক | love letter bangla


আমার বয়স তখন বারো পেরিয়ে তেরোতে পড়েছে ।ক্লাস ফাইভে
 ওঠার পর আম্মা একটা ওড়না আমার গায়ে জড়িয়ে দিয়ে
 বললেন,” আজ থেকে আর তুমি মাঠে খেলতে যাবে না।
খেলতে হলে বাড়িতেই খেলবে। এখন তুমি বড় হয়ে গেছো।”.
আমার তো খুব মন খারাপ! বড়ো হওয়ার জন্যে এতো যে
 আগ্রহ ছিলো তা দপ করে নিভে গেলো। যাই হোক,
পরদিন চাচার বাড়ি যাওয়ার জন্যে বের হয়েছি। বাইরে যতগুলো
ছেলে ছিলো, দেখি সবাই অবাক হয়ে তাকিয়ে আছে। মেসের
 বারান্দায় ওসমান, মুহম্মদ আর আমাদের ভাড়াটে বাড়ির
 ছেলেটা বসে খুব গল্প করছিলো, হাসাহাসি করছিলো
–আমাকে দেখার সাথে সাথে তারা চুপ। সেলিম নামে একটা ছেলে, আমরা
একসাথে খেলতাম, খেলতে খেলতে মারামারিও করতাম।
আমারই বয়সী। সে দেখি অবাক হয়ে আমার দিকে কিছুক্ষণ
তাকিয়ে থেকে বলল, কোথায় যাচ্ছেন? বাইরে খেলাধূলা বন্ধ,
বাড়ির মধ্যে মস্তো উঠোন। সেখানে পাড়ার বান্ধবীরা খেলতে
আসতো। তবে ছোট বোনদের সাথে শালগাড়িয়া, রাধানগর,রাঘবপুর-
হেঁটে হেঁটে যেতাম, আম্মাই পাঠাতেন নানা কাজে। পাশের
 বাড়ির ফিরোজা খালাআম্মা আমাকে ল্যাংবোটের মতো –
যেখানেই যেতেন সঙ্গে নিয়ে যেতেন। তখন উত্তম-সুচিত্রার খুব নামডাক।
তাদের সব সিনেমা তিনি আমাকে সঙ্গে নিয়ে দেখতে যেতেন।
 খালুজান ছিলেন ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেট। তিনি প্রায়ই মফস্বলে যেতেন।
 তখন খালাআম্মা –আম্মাকে বলে আমাকে ডেকে নিতেন
 রাতে থাকার জন্য। আমি পড়ার বই নিয়ে যেতাম।
একদিন সকালে বই নিয়ে বাড়ি এসে পড়তে বসবো, বই খুলতেই
একটা মোটা ভাঁজ করা কাগজ পড়লো টুপ করে
 মাটিতে। কাগজটা তুলে খুলতেই মাঝখানে চোখ পড়লো “ প্রেম যে কি জিনিস
 তাহা হয়তো তুমি জানোনা—” ব্যাস, সঙ্গে সঙ্গে আমার মাথা
 ঘুরে গেলো। সারা শরীর আর মাথা গরম হয়ে ঝিম
ঝিম করতে লাগলো! এটা কি প্রেমপত্র ? কার এতো
 বড় সাহস, আমাকে প্রেমপত্র দেয় ? রাগে আর ঘৃণায়
আমি চিঠিটা ছিঁড়ে কুচি কুচি করে বাইরের পগারে ফেলে দিয়ে
আসলাম। সারাদিন খুব অস্থির! আম্মাকে বলা যাবে না।
কারণ আম্মাকে ছেলেদের নামে কোন নালিশ দিলেই
উলটে আমাকে বকা দিতেন, “কেনো তুই ওদের সাথে
ইয়ার্কি মারতে যাস!” যেনো আমারই সব দোষ! কাজেই
ঠিক করলাম, আব্বা আসলে আব্বাকে বলবো।
তো-আব্বা বিকেলে অফিস থেকে ফিরলে তেড়ে মেরে যাচ্ছি
বলার জন্য। হঠৎ মনে হলো-আব্বা যদি জিজ্ঞেস করেন, ‘
কে লিখেছে?’ আমি তো বলতে পারবো না। কারণ ওইটুকু
 লেখা ছাড়া আমি আর কিছুই দেখিনি। কে লিখেছে ? ওসমান,
মুহম্মদ নাকি আমাদের ভাড়াটে বাড়ির ঐ কলেজে পড়া ছোকরাটা ?
 (খুকখুকহাসি)সারাক্ষণ এই তিনজন গুজগুজ ফুসফুস করে
 আর হাসাহাসি করে, আমাকে দেখলেই চুপ হয়ে যায়। তারপর
ভাবলাম, আব্বা যদি বলেন, ‘কই, দেখি চিঠিটা!’ আমি তো
দেখাতেও পারবো না। কি আর করা! কাউকেই আর
 বলা হলো না। তবে আমি এই তিনজনের সাথে আমার বিয়ের আগে পর্যন্ত
কোন দিন কথা বলি নাই। ওদের দেখলেই আমার রাগ আর
 ঘৃণা হতো , এরা এতো খারাপ!
*****নানুর-ঝাঁপি*****

লাভ লেটার লেখার নিয়ম | রোমান্টিক লাভ লেটার | লাভ লেটার চিঠি | লাভ লেটার পিক | love letter bangla


প্রিয়,
পর সমাচার এই যে, তুমি কেমন আছ ? নিশ্চয় ভাল ! কিন্তু
 আমি ভাল নেই কথাটা আবার সম্পূর্ণ সত্যও না কেননা ভাল
আছি তুমি ভাল আছ বলেই । কত প্রচেষ্টা, কত নিবেদন,
কত অনুরধ, কিছুতেই তোমার মন গলানো গেল না ।
তুমি কথা বললে না । কেন বললে না সেটা আমার জানার
কথা নয় সেটা তুমি ভালভাবেই জান ।
হয়তবা তোমার সমস্যা ছিল । আমি ব্যাপারটাকে
 পজিটিভ ভাবে নিয়েছি । বিশ্বাস কর আমার প্রতিটি
 মহুরতে স্বাভাবিকতার লক্ষণ নেই । আগের মত
কোন কিছুতে মন থাকে না । এটা তারাই বুঝতে পারছে যারা
আমার কাছে থাকে । তোমাকে তো তা বোঝানো গেল না
কারন তুমি বুঝতে চেষ্টা করনি হয়তো করেছো তা আমার
জানা নেই । আমি সত্যি অনেক কষ্টে আছি কেননা
আমি তোমাকে আবেগ দিয়ে নয় মন দিয়ে,
হৃদয়ের মণিকোঠা থেকে ভালবাসি । জীবনের
শেষ মহুরত পরযন্ত এভাবে ভালবাসতে চাই ।
তুমি বলেছ কেন আমি তোমাকে পছন্দ করি ? তুমি কি
বলতে পারবে কেন কোন প্রেমিক তার প্রেমিকাকে পছন্দ
করে ! এর ব্যাখ্যা কেউ পারেনি তুমিও পারবে না । যদি পারো
 আমাকে বলিও শিখে নিব । হয়তো তুমি বিশ্বাস করবে না
যে এটাই আমার জীবনের লেখা প্রথম প্রেমপত্র আর
কোন মেয়েকে দেয়া এটাই প্রথম অফার । কেননা আমার ইচ্ছে
ছিল জীবনে একজনকেই প্রপোজ করবো আর তাকে পেতে সব চেষ্টাই
 করে যাব । বাস্তবে তা করার চেষ্টা করছি তুমি কি পারবে
 আমাকে একটু হেল্প করতে ? আমি যে তোমার
 প্রতি উইক, এটা বলার অপেক্ষা রাখে না । হয়তবা তুমিও
কারন তোমার তোমার কড়া কথাগুলো হয়তো তারই নিদর্শন ।
কেননা কারো মনে ভালবাসা বা অমৃত না থাকলে এভাবে
গরল উগলে দিত না । আমি জানি সেদিন তুমি যা বলেছ
 সেগুলো তোমার মনের কথা না এটা শুধু তোমার
 মুখের কথা । আর আমি জানি অন্তর থেকে কেউ এমন
কথা বলতে পারেনা । একদিন না একদিন তোমার জমাকৃত
কথাগুলো মুখ দিয়ে বেরোবে । দয়া করে আমি মারা যাওয়ার
আগে বলিও বললে হয়তো তোমার কথার যতাযথ মূল্য
দিতে পারব । আমি তোমার মতের বিরুদ্ধে যাব না বা
 এমন কিছু করবো না এটা নিশ্চিতভাবে বলতে পারি ।
আমার দিকটা আমি খেয়াল রাখব বাকিটুকু তোমার হাতে ।
আমি কষ্টের threshold level এ পোঁছে গেছি ।
আর কষ্ট দিও না তাহলে পাথর হয়ে যাব ।
তখন আর কিছুই লাভ হবে না । আমি তোমার জন্য কি করতে
 পারি তা সময়েই বলে দিবে । সে সুযোগ টা তো দিবে ?
আর কথা নয় । দোয়া করি তুমি যেন ভাল থাক
কারন তোমার ভাল থাকা না থাকায় আমার
ভাল থাকা না থাকা লুকায়িত । দোয়া করবে যেন
স্বাভাবিক ভাবে চলতে পারি তোমাকে স্মরণ করে ।

 ইতি
 তোমার অপ্রিয়

লাভ লেটার লেখার নিয়ম | রোমান্টিক লাভ লেটার | লাভ লেটার চিঠি | লাভ লেটার পিক | love letter bangla


তোমাকে চেয়েছিলাম যখন 
অনেক জন্ম আগে
তথাগত তার নিঃসঙ্গতা 
দিলেন অস্তরাগে
তারই করুণায় ভিখারিনী তুমি 
হয়েছিলে একা একা
আমিও কাঙাল হলাম আরেক 
কাঙালের পেতে দেখা
নতজানু হয়ে ছিলাম তখন 
এখনো যেমন আছি
মাধুকরী হও নয়ন-মোহিনী 
স্বপ্নের কাছাকাছি।

 ৩-৪ বছর আগের কথা। তখন আমার ১৮ বছর বয়েস।
কলেজ-সিঁড়ির শেষ ধাপ পার হয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে যাব
-যাব করছি। সারা চোখে কৈশোরের স্বপন-অঞ্জন,
সারা মনে কৃষ্ণচূড়া রঙ্গের হাজারো স্বপ্নের
কোলাহল। তখনি ভোরের সূর্যের মত এক জাক সোনালী
 রোদ্দুর নিয়ে আমার এই ১৮ বছরের মনোকাশে উদিত হল একটি
চঞ্চল কিশোরীর অস্তিত্ব। সেই আলোর মিছিলে ভরে গেল আমার
 কৈশোরের উঠান। অবচেতনভাবেই বুকের মধ্যে জেগে উঠে এক
নতুন নির্জন দ্বীপ – যার নাম ভালোবাসা। যে তীব্র আলোয়
আমার জগৎ আলোকিত, তার ঝলকানি তখনো সেই
কিশোরীর মন-মন্দিরে লাগেনি। লাগেনি মানে লাগতে দিইনি।
 ভালোলাগার যন্ত্রণাই বলুন আর সুখই বলুন সব একাই
 বয়ে বেড়িয়েছি – তাকে কখনো বুঝতে দিইনি। তারপরে যথারীতি
 একদিন ভারটা অসহ্য হয়ে সিন্দাবাদের ভূতের মত ঘাড়ে
 বসার উপক্রম করছে দেখে অনন্যোপায় হয়ে ঠিক করলাম
তাকে জানব সব। না হলে যে বাকি জীবন আমার
 “আমি হৃদয়ের কথা বলিতে ব্যকুল শুধাইল না
 কেহ” গাইতে গাইতে দিন যাবে। সে না শুধাক দায়টা
 যখন আমার তখন আমাকেই স্বপ্রনোদীত হয়ে বলতে
 হবে। লিখে ফেললাম একটা কিশোর হৃদয়ের
আবেগ-মথিত চিঠি । কিন্তু সঙ্কোচের উঁচু দেয়ালটা
টপকিয়ে তাকে চিঠিটি দেওয়া হয়নি কোনদিন।
আমার বুকের নির্জন দ্বীপের নির্জনতার
মাঝেই ভীরু পায়রার মতই উড়াউড়ি করেই গেছে তার দিন।

 পরে বুঝেছি বুকের মধ্যে জেগে উঠা দ্বীপটি ভালোবাসা না –
 সাময়িক মোহ। পদ্ম পাতায় শিশিরের ফোটার মতই যার
স্থায়িত্ব। সকালের কুয়াশা কেটে রোদের ছোঁয়া
 লাগলেই যা ফুরিয়ে যায়। তখন কৈশোরের তীব্র
আবেগের জোয়ারে সামনে মস্তিষ্কের যুক্তিবোধের বাঁধটা
 ছিল বড় ভঙ্গুর, বড় অসহায়। মনে হয় প্রত্যেক
 কিশোর-কিশোরীর হৃদয়ের মধ্যেই বুদ্ধিশাসনের
বহির্ভূত একটা মূঢ় লুকিয়ে থাকে; লুকিয়ে থাকে এক আরণ্যক, যে
 যুক্তি মানে না, মোহ মানে। হয়ত তাই ‘ভালোলাগা’ আর ‘ভালবাসা’
 এর মাঝে যে সুক্ষ পার্থক্য আছে তা কৈশোরের স্থূল
 বুদ্ধি দিয়ে বুঝতে পারি নি। রবীন্দ্রনাথ যথার্থই বলেছেন,
“বিবেচনা করার বয়েস ভালোবাসার বয়েসের উলটো পিঠে”।
 বয়েস বাড়ছে, মনের রাজ্যে আবেগের একছত্র আধিপত্যকে
চোখ রাঙ্গিয়ে হুমকি দেওয়া শুরু করেছে যুক্তি-বোধ।
 মোহের কুয়াশা কেটে উঁকি দেওয়া শুরু করেছে
 বাস্তবতার সোনালী রোদ। সাথে সাথে কঠিন বাস্তবতাটাকে
 উপেক্ষা করা সেই অন্ধ আবেগটাতেও মনে হয় পড়ে যাচ্ছে নীলচে মরচে।

 সময়ের আবর্তে বুকের নির্জন দ্বীপ থেকে চিঠিটির ঠিকানা হয়েছে
আমার ব্যক্তিগত ড্রয়ার। সেখানেই এতদিন সে
এক কিশোর-হৃদয়ের অস্ফুট আকুতির সাক্ষ্য নিয়ে পড়ে ছিল।
মাঝে মাঝে তার মুখদর্শন করেছি আর তার মুখে অপ্রাপ্ত
বয়েসের ছেলেমানুষির ছাপ দেখে মনে মনে নিজেই হেসেছি।

 চিঠিটি এক ১৮বছরের কিশোরের অপরিণত হাতের লেখা।
আজ এ পোড়-খাওয়া পাঠকের চোখে চিঠিটির পরতে
পরতে আনাড়িপনার ছড়াছড়ি। ভেবেছিলাম চিঠিটার
আনাড়িপনাগুলোকে শুধরিয়ে চিঠিটাকে প্রথম আলো ব্লগে
পোষ্ট করব। পরে মনে হল হোক না আনাড়িপনার ছড়াছড়ি,
 হোক না অপরিণত হাতের লেখা তারপরও তো এটা একটা
কিশোর-হৃদয়ের অস্ফুট আকুতির সাক্ষ্য- যাতে তার ভাল লাগা,
ভালোবাসা, সঙ্কোচ, দ্বিধা সব একাকার হয়ে মিশে আছে।
আমার কী অধিকার আছে সেই সাক্ষ্যটাকে বিকৃত করার?
 শৈশব-কৈশোর তো একটিবারই তার জানালা খোলে পৃথিবীর দিকে।
 প্রথম প্রেমপত্র লেখার মহেন্দ্র ক্ষণ তো একবারই আসে
মানুষের জীবনে। তাই সেই সে দিনের কিশোর-হৃদয়ের
 ভাল লাগা এবং সে ভাল লাগার প্রকাশভঙ্গী সব
কিছুর প্রতি সম্মান দিয়ে চিঠি হুবহু আপনাদের সামনে তুলে ধরলাম।

লাভ লেটার লেখার নিয়ম | রোমান্টিক লাভ লেটার |

 লাভ লেটার চিঠি | লাভ লেটার পিক | love letter bangla


 প্রাণের প্রিয়তমেষূ,
কেমন আছ তুমি? তোমাকে ‘তুমি’ বলে সম্বোধন করলাম
বলে কিছু মনে করো না। জানি ভদ্রতার
অনুরোধে অপরিচিত মানুষকে ‘আপনি” বলে সম্বোধন
 করটাই নিয়ম। আসলে কী জান, এদিন তোমার
কথা এত বেশি ভেবেছি যে তোমাকে আর অপরিচিত
 কেউ বলে মনে হল না। যাকে মনে স্থান দিয়েছি,
অন্তরের অন্তঃস্থলে আপন করে নিয়েছি তাকে সামান্য
 ভদ্রতার খাতিরে ‘আপনি’ বলতে মন কিছুতে
 সায় দিচ্ছে না। কয়েকবার কোচিংএ যাওয়ার
সময় রাস্তায় তোমাকে দেখে খুব ভাল লেগে যায়
আমার। তারপর থেকে কিছুতেই ভুলতে পারছিলাম না।
 তাই ভাবলাম ব্যথায় নীলকণ্ঠ হওয়ার চেয়ে চিঠি লিখে
 সব জানাই তোমাকে। তাছাড়া আজ-কালকের
পরিবেশটাও কেমন জানি – অভিমানী মেয়ের মত আকাশটা
সারাদিন-মান অঝরে জল জড়াচ্ছে। আকাশের মেঘ আর আর
মনের মেঘের মধ্যে মনে হয় একটা বৈপরীত্য আছে।
বাইরের আকাশে মেঘ জমতে শুরু করলে মনের
আকাশের মেঘগুলো কোথায় জানি উধাও হতে শুরু করে।
 তার বদলে মনের ভিতরের অদ্ভুত একটা রোমান্টিকতা
 এসে ভর করে। তখন প্রিয় মানুষটাকে মনের না-বলা
 সব কথা ধুম করে বলে ফেলতে ইচ্ছে করে।
 সেই ইচ্ছের অনুরোধেই এই চিঠি লেখা। তোমাকে
 চিঠি লিখতে গিয়ে পড়লাম মহা সমস্যায় – কী বলে সম্বোধন
করব, কী দিয়ে শুরু করব, কী দিয়ে শেষ করব,
 কীভাবে মনের ভিতরে গুমরে মরা কথাগুলো
তোমাকে জানাব, কী ঊপমা ব্যবহার করে তোমার চেহারার
অপার্থিব সৌন্দর্যকে বর্ণনা করব কিছুতেই বুঝে
 উঠতে পারছিলাম না। অনেক বই, অভিধান
 ঘাটাঘাটি করেও মনের মতন শব্দ খুঁজে পেলাম না।
 অথচ আগে সেগুলো পায়ে পায়ে হামাগুড়ি দিত – আজ
আমার প্রয়োজনের সময় লুকোচুরি খেলতে শুরু করেছে।
খুঁজতে খুঁজতে হঠাৎ রবি ঠাকুরের দু;টি লাইনে চোখ আটকে গেল।
রবীন্দ্রনাথ লিখেছেন – “মুখের পানে চাহিনু অনিমেষে / বাজিল
 বুকে সুখের মত ব্যথা……”। প্রাচীন কবি-সাহিত্যিকরা
 হাস্যকর ভঙ্গিতে মেয়েদের রূপ বর্ণনা করেছেন – কমলার
মত ঠোঁট, ইঁদুরের দাঁতের মত দাঁত, বাঁশের কঞ্চির মত নাক……।
 মতো মতো করে সৌন্দর্যের ব্যাখ্যা করা যায় না। সব সৌন্দর্যের
ব্যাখ্যাতীত কিছু ব্যাপার থাকে।
 রবীন্দ্রনাথ ব্যাপারটা বুঝেছিলেন বলেই ব্যাখ্যায় না
গিয়ে বলেছেন , “বাজিল বুকে সুখের মত ব্যথা……”। তোমাকে
 প্রথম দেখে আমার মনেও এক ব্যাখ্যাতীত অনুভূতি হয়েছিল।
 তোমাকে দেখেই বুঝেছি কবি-সাহিত্যিকরা যত উপমাই সৃষ্টি করুক না কেন,
কোনটাই ব্যবহার করে তোমার রূপের পরিপূর্ণ মহিমা বুঝানো যাবে না।
আরও বুঝেছি বহু ব্যবহার করা কোন উপমায় কিংবা
অহোরাত্র চর্চিত শব্দের ফেনায় তোমার তুলনা খুঁজা পণ্ডশ্রম।

 বশির আহমেদ একটা গান আমার খুব প্রিয়, “চোখ ফেরানো যায় ওগো
মন ফেরানো যায় না / বল কী করে রাখি ঢেকে
 মনে খোলা আয়না?” এ গানটা অনেকবার শুনলেও
এ গানটার কথাগুলো যে কতটা সত্য তা বুঝতে পেরেছি ঐদিন।
 রাস্তায় যাওয়ার সময় তোমাকে দেখছিলাম, আমার দু’টি চোখ
নির্লজ্জের মতো খালি তোমার দিকেই তাকিয়ে ছিল।
 অনেক শাসন করে আমার অবাধ্য চোখ দু’টিকে সরিয়ে
রেখেছিলাম। চোখ সরিয়ে রাখলেও আমার অবুঝ মনটাকে
 সরিয়ে রাখতে পারিনি। সে মন জুড়ে সারাক্ষণ ছিলে তুমি, ছিল তোমার
ভাবনা। “আমার এমন কাছে __আশ্বিনের এত বড় আকুল
 আকাশে আর কাকে পাব বল এই সহজ গভীর অনায়াসে…………”।
জীবনে এর আগে কোনদিন প্রেমে পড়ি নি, তাই প্রেমে পড়ার অনুভূতি কেমন
হয় তা আমার জানা নেই। হাজার চেষ্টা করেও তোমার কথা
 কিছুতেই ভুলতে পারছি না – উঠতে, বসতে, খেতে, শুতে সব সময়
তুমি জুড়ে থাক আমার মন। গান শুনা, বই পড়া, বন্ধুদের সাথের
আড্ডা দেওয়া – কিছুই ভাল লাগে না। ভাল লাগে শুধু
 তোমার কথা ভাবতে। সত্যি কথা বলতে কি, আমার এত বছরের
জীবনে যত বড় বড় ঘটনা ঘটেছে তার সবকিছু লিলিপুটের মত
ছোট হয়ে গেছে তোমার অস্তিত্বের সামনে।
আচ্ছা এটাই কী প্রেম? আমি জানি না। তুমি জান কী?

 সুবটুকু হয়তো বুঝতে পারিনি। সেটা আমার
 ব্যর্থতা, যা কোন শাব্দিক উচ্চারণে প্রকাশ করা যায় না।
 কিংবা প্রকাশ করা যায় না কোন বিলাপে।
 তা কেবল অনুভূতির; কেবল উপলব্ধির।

টাগ: লাভ লেটার লেখার নিয়ম, রোমান্টিক লাভ লেটার,  
লাভ লেটার চিঠি,  লাভ লেটার পিক, love letter bangla

Post a Comment

0Comments

প্রতিদিন ১০০-২০০ টাকা ইনকাম করতে চাইলে এখানে কমেন্ট করে জানান। আমরা আপনায় কাজে নিয়ে নেবো। ধন্যবাদ

Post a Comment (0)